সপ্তাহখানেক আগেও অ্যালেক্স রস ব্যস্ত ছিলেন অস্ট্রেলিয়ার টি-টোয়েন্টি লিগে। তাঁর দল সিডনি থান্ডার লিগের প্লে-অফে জায়গা করে নিতে পারেনি। এমন সময় বিপিএল দল দুর্দান্ত ঢাকার হয়ে খেলার প্রস্তাব আসে। এর আগে সিপিএল ও এলপিএল খেলা এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান প্রথমবারের মতো বিপিএল খেলার প্রস্তাবটা লুফে নেন দুই হাতে।
গতকালই ঢাকায় এসে পৌঁছেছেন অস্ট্রেলীয় ‘সুইপলজিস্ট’। সুইপ শটটা ভালো খেলেন, তাই অস্ট্রেলিয়ায় তাঁর নামের পাশে ধারাভাষ্যকারেরা জুড়ে দিয়েছেন এই নাম। এবার ৩১ বছর বয়সী এই ডানহাতিকে দেখা যাবে বিপিএলে। রসও মাঠে নামার জন্য উন্মুখ হয়ে আছেন। আগামীকাল চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে ম্যাচকে সামনে রেখে আজ মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের একাডেমি মাঠে লম্বা সময় ব্যাটিং অনুশীলন করেছেন তিনি।
অনুশীলন শেষে সাংবাদিকদের বলছিলেন, ‘খুবই রোমাঞ্চিত। সবকিছুই খুব দ্রুত হয়ে গেল। আমি এখন দলের সঙ্গে যোগ দিতে পেরে রোমাঞ্চিত। আমি টিভিতে বিপিএল দেখেছি কিছুটা। প্রথম ম্যাচটা ফ্লাইটে বসে দেখেছি। ছেলেরা খুব ভালো খেলেছে। আমি দলের সঙ্গে যোগ দিতে পেরে রোমাঞ্চিত।’
সর্বশেষ লঙ্কা প্রিমিয়ার লিগে ডাম্বুলা অরার হয়ে খেলেছেন রস। সে অভিজ্ঞতা এবার বিপিএলে কাজে লাগাতে চান, ‘আমি আজ নেটে লম্বা সময় ব্যাটিং করেছি। কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছি। আমি শ্রীলঙ্কা প্রিমিয়ার লিগ খেলেছি গত বছর। ওইখানে যে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি, তা এখানে কাজে দেবে। অনুশীলন উইকেটে অনেক মিল। তবে আমি দলের খেলোয়াড়দের কাছ থেকে শুনেছি, ম্যাচের উইকেট কিছুটা ভালো।’
বিগ ব্যাশের এবারের মৌসুমেও বেশ কিছু উইকেট স্পিন-সহায়ক ছিল, যা অস্ট্রেলীয় ব্যাটসম্যানদের স্পিন-পরীক্ষার মুখে ফেলেছে। রসই বললেন, ‘আমরা এবার বিগ ব্যাশে কিছু ম্যাচে বাজে উইকেট পেয়েছি। কিছুটা অভিজ্ঞতা হয়েছে স্পিন করা বলের বিপক্ষে খেলে, উইকেটও মন্থর ছিল। তবে টিভিতে যা দেখলাম, তার সঙ্গে সব সময় মিলবে না। আমি শুধু এখানে খেলার জন্য উন্মুখ হয়ে আছি।’
এ ধরনের কন্ডিশনের জন্য যে দক্ষতা দরকার, তা অবশ্য রসের আছে। সুইপ শটের জন্য তিনি পরিচিত। এখানেও তা কার্যকর হবে বলে মনে করেন রস, ‘আমার মনে হয়, সুইপ এখানে খুব কার্যকর হবে। আপনি ক্রিজ ছেড়ে খেলতে চাইবেন না খুব একটা। সুইপ ও রিভার্স সুইপ—এভাবে যদি কিছু বাউন্ডারি পাওয়া যায়, সে চেষ্টা করব। বিশেষ করে অল্প রানের ম্যাচে আপনি যদি স্পিনের বিপক্ষে চাপ সৃষ্টি করতে পারেন, তাহলে ভালো। আশা করি, আমি সেটা করতে পারব।’
তবে অন্য সবার মতো রসও সিলেট ও চট্টগ্রামের উইকেটে ব্যাটিং করার জন্য উন্মুখ। বড় রানের ম্যাচ দেখতে চায় দর্শক, ক্রিকেটাররাও খেলতে চান। তাঁর মুখেই শুনুন, ‘হ্যাঁ, তা ঠিক। আপনি দলকে সাহায্য করতে চাইবেন, যে করেই হোক। বিশেষ করে ইনিংসের শেষের দিকে চার-ছক্কা মারা, দর্শকদের বিনোদন দেওয়া…আমি এরই মধ্যে কয়েকজনের সঙ্গে অন্য দুটি মাঠ নিয়ে কথা বলেছি। আমি জানি যে ব্যাটসম্যানরা সেখানে খেলতে মুখিয়ে আছে।’
রসকে বিপিএল সম্পর্কে ধারণা দিতে পারেন এবারের বিপিএল খেলতে আসা আরেক অস্ট্রেলিয়ান বেন কাটিং। তবে সিলেট স্ট্রাইকার্সের হয়ে মাত্র একটি ম্যাচই খেলেছেন এই অলরাউন্ডার। তাই তাঁর কাছ থেকে রস এখন পর্যন্ত কোনো ক্রিকেটীয় টিপস পাননি। তবে ঢাকার খাবারের দোকান সম্পর্কে একটা ধারণা ঠিকই পেয়েছেন।
মজা করে সে কথাই বললেন রস, ‘কোনো টিপস দেয়নি। তবে সে বলেছে, এখানে দুটি ভালো খাবারের দোকান আছে। ভালো স্টেক আছে। এখনো ক্রিকেট নিয়ে কিছু বলেনি। আমার মনে হয় না সে ব্যাটিংও করেছে। তবে ওর সঙ্গে কথা বলে ভালো লাগছে।’ কিন্তু বিপিএলে কাটিং তো রসের প্রতিপক্ষ! কথাটা মনে করিয়ে দিতেই রস হাসতে হাসতে বললেন, ‘হ্যাঁ, তা–ই তো! সে হয়তো ভুল তথ্য দেবে (হাসি)।’