কুমিল্লাকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়ছেন আন্দ্রে রাসেল ও মোসাদ্দেক হোসেন
কুমিল্লাকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়ছেন আন্দ্রে রাসেল ও মোসাদ্দেক হোসেন

সিলেটকে গুঁড়িয়ে আবারও ফাইনালে কুমিল্লা

জর্জ লিন্ডার বলে ক্যাচ তুলেছিলেন আন্দ্রে রাসেল, উইকেটকিপার মুশফিকুর রহিম সেটি নিতে ছুটলেন প্রায় বোলিং-প্রান্ত পর্যন্ত। শেষ পর্যন্ত রাখতে পারলেন না। মুশফিক ক্যাচটি নিতে পারলে সেটি হতো কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের সপ্তম উইকেট। জয়ের জন্য তখনো প্রয়োজন ছিল ১৪ রান, অন্য প্রান্তে মোসাদ্দেক হোসেন ছাড়া থাকতেন না আর কোনো স্বীকৃত ব্যাটসম্যান। এর আগেও ক্যাচ ও স্টাম্পিংয়ের সুযোগ মিস করা মুশফিকের দিনটি গেছে ভুলে যাওয়ার মতোই, শেষ পর্যন্ত ভুলে যাওয়ার দিন সিলেট স্ট্রাইকার্সেরও। প্রথম কোয়ালিফায়ারে তাদের ৪ উইকেটে হারিয়ে সরাসরি ফাইনালে চলে গেছে কুমিল্লা, যারা জিতল টানা ১০টি ম্যাচ।

হারলেও সিলেট অবশ্য পাবে আরেকটি সুযোগ, আগামী পরশু দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে মাশরাফি বিন মুর্তজার দল খেলবে এলিমিনেটরে জেতা রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে। মোহাম্মদ আমির ও ইমাদ ওয়াসিম চলে যাওয়াতে সিলেটের দুশ্চিন্তা হওয়ার কথা ছিল বোলিং। তবে আজ তাদের ভোগাল ব্যাটিংটাই। ১৭.১ ওভারে ১২৫ রান তুলতেই থামে তারা। কুমিল্লা শেষ পর্যন্ত সেটি পেরিয়েছে ২০ বল বাকি থাকতে। শেষ দিকে একটু নড়বড়ে মনে হলেও এমন জয়ে যেন একটা বার্তাই দিয়ে রাখল এখনকার চ্যাম্পিয়নরা।

জয়ী কুমিল্লাকে অভিনন্দন সিলেটের খেলোয়াড়দের


টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নামা সিলেট গুটিয়ে যায় মূলত তিন দফার ধসে। প্রথম দফা শফিকুল্লাহ গাফারি, তৌহিদ হৃদয় ও জাকির হাসানকে তারা হারিয়ে ফেলে ৩ ওভারের মধ্যে ১৬ রান তুলতেই। এরপর আসে মাশরাফি-চমক। পাঁচে এসে খেলেছেন ১৭ বলে ২৬ রানের ক্যামিও, মেরেছেন ২টি করে চার ও ছক্কা। রাসেলের বলে ক্যাচ তোলার আগে নাজমুলের সঙ্গে তাঁর জুটিতে ওঠে ৩৭ বলে ৫৬ রান। মাশরাফির ব্যাটিংয়ে বেশ ভালো একটা লাইফলাইনই পায় সিলেট। ক্রিজে তখন থিতু হওয়া নাজমুল, আসতে বাকি রায়ান বার্ল, মুশফিকুর রহিম ও জর্জ লিন্ডারা।

কিন্তু সিলেটের ইনিংসে এরপর জোড়া আঘাত করেন তানভীর ইসলাম। জায়গা বানিয়ে খেলতে গিয়ে বোল্ড হন ২৯ বলে ৩৮ রান করা নাজমুল, প্রথম বলেই স্লগ সুইপ করতে গিয়ে ক্যাচ তোলেন রায়ান বার্ল। ১১তম ওভারে ৬ উইকেটে ৭৮ রানে পরিণত হয় তারা। লিন্ডা ও মুশফিকের জুটিতে ১০০ পেরোয় সিলেট, লড়াই করার মতো একটা স্কোরও উঁকি দিচ্ছিল তখন। এরপরই চূড়ান্ত ধস—৮ রানের মধ্যে নেই শেষ ৪ উইকেট। কুমিল্লার ৬ বোলারই পেয়েছেন উইকেটের দেখা। ২টি করে নেন তানভীর, রাসেল ও মোস্তাফিজুর রহমান।

২৭ বলে ২৭ করেন মোসাদ্দেক

কুমিল্লার রানতাড়ায় প্রথম অংশটা ছিল নারাইনময়। পাওয়ার প্লের মধ্যেই ৩ উইকেট হারায় কুমিল্লা, তবে তোলে ৫৮ রান। এর মধ্যে নারাইন একাই ১৮ বলে ৩৯ রান করেন ৩টি চার ও ৪ ছক্কায়। তানজিম হাসানের বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন এই ক্যারিবীয় অলরাউন্ডার, এর আগে-পরে দুই অঙ্ক ছোঁয়ার আগেই ফেরেন লিটন দাস ও জনসন চার্লস। অধিনায়ক ইমরুল তেমন কিছু করতে না পারলেও গতকাল প্রথম ম্যাচ খেলতে নামা মঈন আলী খেলেন ১৩ বলে ২১ রানের ইনিংস, রাসেল অপরাজিত থাকেন ১০ বলে ১৫ রানে।

ম্যাচ হেরে হতাশ মুশফিক-মাশরাফি

আগের ম্যাচে বোলিং না করলেও কাল করেছেন সিলেট অধিনায়ক মাশরাফি। তবে ১২তম ওভারে আসেন ১ ওভারের জন্য, সেটিও করেন সংক্ষিপ্ত রানআপে। আজ তাই বিশেষজ্ঞ ব্যাটসম্যান হিসেবেই ম্যাচটি খেলেন মাশরাফি, নিজের দায়িত্বটা পালনও করেছিলেন। কিন্তু কুমিল্লা এমনই দুর্বার, কোনো কিছুতেই আটকায়নি তারা।