অ্যালিস্টার কুক (বাঁয়ে), নীতু ডেভিড (মাঝে) ও এবি ডি ভিলিয়ার্স
অ্যালিস্টার কুক (বাঁয়ে), নীতু ডেভিড (মাঝে) ও এবি ডি ভিলিয়ার্স

আইসিসির হল অব ফেমে অ্যালিস্টার কুক, ডি ভিলিয়ার্স ও নীতু ডেভিড

আইসিসির হল অব ফেমে নতুন জায়গা পেয়েছেন ক্রিকেটের তিন কিংবদন্তি। তাঁরা হলেন ইংল্যান্ডের স্যার অ্যালিস্টার কুক, দক্ষিণ আফ্রিকার এবি ডি ভিলিয়ার্স ও ভারতের নীতু ডেভিড। আজ নিজেদের ওয়েবসাইটে এই তিনজনকে অন্তর্ভুক্ত করার কথা জানিয়েছে বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা।

৩৯ বছর বয়সী কুক ২০০৬ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে ইংল্যান্ডের হয়ে তিন সংস্করণ মিলিয়ে ২৫৭ ম্যাচ খেলেছেন, করেছেন ১৫৭৩৭ রান। টেস্ট ইতিহাসের অন্যতম সেরা ওপেনিং ব্যাটসম্যান মনে করা হয় তাঁকে।

টেস্টে ইংল্যান্ডের শীর্ষ রান সংগ্রাহক হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরে যান কুক। রেকর্ডটা গত সেপ্টেম্বর পর্যন্তও টিকে ছিল। এ মাসে তাঁকে ছাড়িয়ে যান জো রুট। কুক বর্তমানে টেস্ট ইতিহাসের ষষ্ঠ সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। অভিষেক থেকে টানা ১৫৯ টেস্ট খেলেছেন তিনি, যা বিরতিহীনভাবে সবচেয়ে বেশি টেস্ট খেলার বিশ্ব রেকর্ড।

টেস্টে ইংল্যান্ডের শীর্ষ রান সংগ্রাহক হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় বলেছিলেন অ্যালিস্টার কুক

কুকের বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে অনেক অর্জনের মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিদেশের মাটিতে দুটি টেস্ট সিরিজ জয়—২০১০–১১ সালে অস্ট্রেলিয়ায় অ্যাশেজ ও ২০১২ সালে ভারত–বধ। ৭৬৬ রান করে সেবারের অ্যাশেজে সেরা খেলোয়াড়ের স্বীকৃতি পেয়েছিলেন। পরের বছর টেন্ডুলকার–ধোনি–গম্ভীরদের বিপক্ষে ইংল্যান্ড সিরিজ জিতেছিল তাঁরই নেতৃত্বে, যা এখনো ভারতের মাটিতে কোনো দলের সর্বশেষ টেস্ট সিরিজ জয়।

২০১৮ সালে ডিসেম্বরে ‘নাইটহুড’ পাওয়া কুক আইসিসির হল অব ফেমে জায়গা পেয়ে বলেছেন, ‘বিস্ময়কর লাগছে। বিশেষ করে যখন আপনি এই তালিকায় জায়গা পাওয়া ব্যক্তিদের নাম পড়বেন এবং জানবেন, সেখানে আপনার নামও উঠতে চলেছে। এই তালিকায় যোগ দিতে পারা বড় ব্যাপার। আমি খুবই সম্মানিত বোধ করছি।’  

মাঠের সব দিকে শট খেলতে পারা এবি ডি ভিলিয়ার্সের ডাকনাম হয়ে গেছে ‘মিস্টার ৩৬০ ডিগ্রি’। আইসিসির হল অব ফেমে জায়গা করে নেওয়া দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক এই অধিনায়ক আধুনিক ক্রিকেটের সবচেয়ে উদ্ভাবনী ও বিধ্বংসী ব্যাটসম্যানদের একজন। ২০১৮ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় বলার আগে দক্ষিণ আফ্রিকা ও আফ্রিকা একাদশের হয়ে ৪২০ ম্যাচ খেলেছেন, করেছেন ২০০১৪ রান।

২০১৫ সালে জোহানেসবার্গে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে ৩১ বলে সেঞ্চুরি করেন ডি ভিলিয়ার্স, যা এই সংস্করণে দ্রুততম সেঞ্চুরির বিশ্ব রেকর্ড। একাধিকবার আইসিসির বর্ষসেরা ওয়ানডে খেলোয়াড়ের পুরস্কার জিতেছেন, বেশ কয়েকবার জায়গা পেয়েছেন আইসিসির বর্ষসেরা টেস্ট দলে।

টেস্ট ও ওয়ানডেতে ডি ভিলিয়ার্সের ব্যাটিং গড় ৫০–এর ওপরে। জ্যাক ক্যালিসের পর তিনিই দক্ষিণ আফ্রিকার সর্বোচ্চ শীর্ষ রান সংগ্রাহক। আইসিসির হল অব ফেমে জায়গা পেয়ে ৪০ বছর বয়সী এই কিংবদন্তি বলেছেন, ‘আইসিসির হল অব ফেমে অন্তর্ভুক্ত হওয়া এবং (এত বড় মাপের) স্বীকৃত ক্রিকেটারদের একটি নির্বাচিত গ্রুপে যোগ দিতে পারা অনেক সম্মানের।’

ওয়ানডেতে দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ডটা এবি ডি ভিলিয়ার্সের দখলে

গত বছর ডায়ানা এদুলজির পর ভারতের দ্বিতীয় নারী ক্রিকেটার হিসেবে হল অব ফেমে পেলেন ৪৭ বছর বয়সী নীতু ডেভিড। সাবেক স্পিনার নীতু ভারতের হয়ে ১৯৯৫ থেকে ২০০৮ সালের মধ্যে টেস্ট ও ওয়ানডে মিলিয়ে ১০৭ ম্যাচ খেলেছেন। ওয়ানডেতে তিনি ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি (১৪১)। দেশটির প্রথম নারী খেলোয়াড় হিসেবে তিনি এই সংস্করণে ১০০ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করেছেন।

১৯৯৫ সালে জামশেদপুরে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্টের এক ইনিংসে ৫৩ রানে ৮ উইকেট নেন নীতু, যা মেয়েদের টেস্ট ইতিহাসের এক ইনিংসে সেরা বোলিং।

অতি সম্প্রতি ভারতের নারী দলের প্রধান নির্বাচক হওয়া নীতু ডেভিড আইসিসির হল অব ফেমে জায়গা পেয়ে বলেছেন, ‘এটা সত্যিই সম্মানের। এটা এমন কিছু, যা আমি মনে করি জাতীয় দলের জার্সি পরা যে কেউ তাঁর জন্য সর্বোচ্চ স্বীকৃতি উপলব্ধি করতে পারে। এই মহান খেলাটির প্রতি সারাটা জীবন উৎসর্গ করার পর এটি এসেছে।’

নীতু ডেভিড বর্তমানে ভারতীয় নারী দলের প্রধান নির্বাচক হিসেবে কাজ করছেন

নারী ও পুরুষ মিলিয়ে এখন পর্যন্ত ১১৫ জন সাবেক ক্রিকেটারকে হল অব ফেমে অন্তর্ভুক্ত করেছে আইসিসি।