আশু, আশু, আশু-মুলানপুরে মহারাজা যাদবিন্দ্র সিং ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে মুম্বাই ইন্ডিয়ানস-পাঞ্জাব কিংস ম্যাচের শেষ দিকে গ্যালারি থেকে ভেসে আসছিল এই স্লোগান। আসারই কথা। মুম্বাইয়ের বোলারদের বিপক্ষে তখন যে এই ম্যাচের মহারাজা বনে গেছেন আশুতোষ শর্মা! নিজের ব্যাটকে ছড়ির মতো ইচ্ছেমতো ঘুরিয়ে তিনি শাসন করছিলেন মুম্বাইয়ের বোলারদের।
আশুতোষ অবশ্য শেষ পর্যন্ত পারলেন না। মুম্বাইয়ের বাকি সব বোলারদের ওপর রাজ করলেও যে তিনি পারেননি যশপ্রীত বুমরার সঙ্গে। শেষ পর্যন্ত জিতেছে জিতেছে ৪ ওভারে ২১ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেওয়া বুমরার মুম্বাই-ই। তবে ম্যাচটা যে শেষ ওভারে গড়িয়েছে আর সহজ জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়েও যে মুম্বাই সেই ম্যাচে মাত্র ৯ রানে জিতেছে, এটা আশুতোষের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ের কারণেই।
আশুতোষ ৮ নম্বরে যখন ব্যাট করতে নামেন, পাঞ্জাবের রান ৯.২ ওভারে ৬ উইকেটে ৭৭। ১৯৩ রান তাড়া করতে নামা পাঞ্জাব জিতবে বলে খুব বেশি লোক অনুমান করতে পারছিলেন বলে মনে হয় না। জয়ের জন্য তখন তাদের ১০.৪ ওভারে প্রয়োজন ছিল ১১৬ রান। হাতে কিছু ওভার থাকলেও উইকেটের সংখ্যা যে ছিল কম। কিন্তু আশুতোষ মুখোমুখি হওয়া দ্বিতীয় বলেই মাধওয়ালকে ৬ মেরে বুঝিয়ে দেন রাজ করতেই এসেছেন তিনি!
সপ্তম উইকেটে শশাংক সিংকে নিয়ে ১৭ বলে গড়েন ৩৪ রানের জুটি। এরপর যেন আরও ভয়ংকর হয়ে ওঠেন আশুতোষ। অষ্টম উইকেটে হারপ্রীত ব্রারকে নিয়ে তোলেন ৩২ বলে ৫৭ রান। জেরাল্ড কোয়েৎজের বলে ১৮তম ওভারের প্রথম বলে আউট হওয়ার আগে ২৮ বলে ২ চার ও ৭ ছয়ে করেছেন ৬১ রান।
আশুতোষ আউট হওয়ার পর পাঞ্জাবকে জেতাতে লড়াই করেছেন ব্রার ও কাগিসো রাবাদা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পারেননি তাঁরাও।
এবারের আইপিএলে মুম্বাই ইন্ডিয়ানসের লড়াইটা আপাতত চলছে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু ও পাঞ্জাব কিংসের সঙ্গে। সেই লড়াইটাও আবার ৭, ৮ ও ৯ নম্বর জায়গা নিয়ে। সেই লড়াইয়ে গত বৃহস্পতিবার যশপ্রীত বুমরার দুর্দান্ত বোলিংয়ে বেঙ্গালুরুকে হারিয়ে নিজেদের ভালো অবস্থা কিছুটা হলেও ভালোর দিকে নিয়ে গিয়েছিল মুম্বাই। সেই ম্যাচে মুম্বাইকে ৭ উইকেটে জেতাতে ২১ রানে ৫ উইকেট নিয়েছিলেন বুমরা।
নিজেদের পরের ম্যাচে চেন্নাই সুপার কিংসের বিপক্ষে কোনো উইকেট পাননি বুমরা, জেতেনি মুম্বাইও। আজ পাঞ্জাবের বিপক্ষে বুমরা নিলেন ৩ উইকেট। জয় পেল মুম্বাইও। এই জয়ে ৭ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে এক লাফে ৯ নম্বর থেকে ৭ নম্বরে উঠে গেছে তারা।
বল হাতে বুমরা ও জেরাল্ড কোয়েৎসেরা (৩২ রানে ৩ উইকেট) লড়াই করার আগে মুম্বাইকে ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৯২ রান এনে দিয়েছে মূলত সূর্যকুমার যাদবের ৭ চার ও ৩ ছয়ে ৫৩ বলে ৭৮ রানের ইনিংস। মুম্বাইয়ের পক্ষে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩৬ রান করেছেন রোহিত শর্মা।