টানা পাঁচ ম্যাচ জিতলেও একটা জায়গায় ‘ঘাটতি’ রয়ে গিয়েছিল ভারতের। রোহিত শর্মাদের সব কটি জয়ই ছিল রান তাড়া করে। আগে ব্যাট করে ভারত কেমন পুঁজি গড়ে আর বোলাররাই বা কীভাবে সামাল দেন, সেটি দেখার অপেক্ষা ছিল।
আজ লক্ষ্ণৌতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সেই ‘ঘাটতি’ কিছুটা হলেও পুষে গেছে রোহিতদের। টস হেরেও আগে ব্যাট করার সুযোগ পেয়েছে ভারত, শেষ পর্যন্ত বোলারদের নৈপুণ্যে জিতেছে ম্যাচও। ইংল্যান্ডকে ১০০ রানে হারিয়ে প্রথম দল হিসেবে বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল প্রায় নিশ্চিত করেছে ভারত। ছয় ম্যাচে ছয় জয়ে ভারতের পয়েন্ট ১২। সর্বোচ্চ পাঁচটি দলের ১২ পয়েন্ট হওয়ার সুযোগ থাকায় শেষ তিনটি ম্যাচে হারলেও এখনকার রানরেট অনুসারে অনেকটাই নিরাপদ রোহিতরা।
ভারতের শেষ চারে থাকা প্রায় নিশ্চিতের দিনে বিশ্বকাপের প্রথম পর্ব বিদায় অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে গেছে ইংল্যান্ডের। টানা চতুর্থসহ ছয় ম্যাচের পাঁচটিতেই হেরেছে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। এর মধ্যে আজ ভারতের কাছে হারটি বেশ বড়সড়ই। রোহিত-বিরাট কোহলিদের নিয়ে গড়া প্রতাপশালী ব্যাটিং লাইনআপকে মাত্র ২২৯ রানে আটকে রেখেছিলেন বোলাররা।
রান তাড়ায় নেমে প্রথম দুই ওভারে ১৭ রান তুলে ভালো শুরুই এনে দিয়েছিলেন ডেভিড ম্যালান ও জনি বেয়ারস্টো। কিন্তু যশপ্রীত বুমরা টানা দুই বলে ম্যালানকে বোল্ড ও জো রুটকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেললে দিক হারায় ইংল্যান্ড।
রান তাড়ায় নেমে প্রথম দুই ওভারে ১৭ রান তুলে ভালো শুরুই এনে দিয়েছিলেন ডেভিড ম্যালান ও জনি বেয়ারস্টো। কিন্তু যশপ্রীত বুমরা টানা দুই বলে ম্যালানকে বোল্ড ও জো রুটকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেললে দিক হারায় ইংল্যান্ড। এই ধাক্কা সামাল দেওয়ার আগে স্টোকস আর বেয়ারস্টোও ফেরেন প্যাভিলিয়নে। দুজনকেই বোল্ড করেন মোহাম্মদ শামি।
১০ ওভারের মধ্যে ৩৯ রানে চতুর্থ উইকেট হারানো ইংল্যান্ড আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। জস বাটলার, মঈন আলী আর লিয়াম লিভিংস্টোনদের ছোট ছোট জুটি শুধু হারই বিলম্বিত করেছে। ৩৫তম ওভারের পঞ্চম বলে মার্ক উডের স্টাম্প ভেঙে ভারতের অপেক্ষার অবসান ঘটান বুমরা। ১০০ রানের জয়ে বুমরার শিকার ৩ উইকেট, শামির ৪টি।
পুঁজি আগলে রাখার দিক থেকে বোলাররা সফল হলেও আগে ব্যাট করে প্রত্যাশামতো রান পায়নি ভারত। একানা স্টেডিয়ামের অসম বাউন্সের উইকেটে শুরু থেকেই রান তুলতে হিমশিম খেয়েছেন শুবমান গিল-বিরাট কোহলি-শ্রেয়াস আইয়াররা।
ক্রিস ওকস ও ডেভিড উইলি ৪০ রানের মধ্যেই তুলে নেন ৩ উইকেট। এর মধ্যে গিল (১৩ বলে ৯) ও আইয়ারকে (১৬ বলে ৪) ফেরান ওকস; আর প্রথম ৮ বলে রানের খাতা খুলতে না পারা কোহলি অস্থির হয়ে ডেভিড উইলির বলে মিড অফে ক্যাচ দেন স্টোকসকে। ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ মিলিয়ে ৫৬ ইনিংসে এই প্রথম শূন্য রানে আউট হন কোহলি।
ভারত শুরুর এই ধাক্কা সামলে ওঠে রোহিত ও লোকেশ রাহুলের চতুর্থ উইকেট জুটিতে। এ দুজন মিলে ১৮.৩ ওভারের জুটিতে যোগ করেন ৯১ রান। ৫৮ বলে ৩৯ রান করা রাহুলকে বেয়ারস্টোর ক্যাচ বানিয়ে ফেরান উইলি। মূলত এরপরই ভারতের ইনিংস সমাপ্তির দিকে এগিয়ে যায়। ১০১ বলে ৮৭ রান করে রোহিত আদিল রশিদের বলে লিয়াম লিভিংস্টোনের দারুণ ক্যাচে পরিণত হওয়ার পর দলকে দুই শ পার করান সূর্যকুমার যাদব। ৪৭তম ওভারে উইলির তৃতীয় শিকার হওয়ার আগে ৪৭ বলে ৪৯ রান করেন সূর্যকুমার। তাঁর ইনিংসে ছিল চারটি ৪ ও একটি ৬।
ইংল্যান্ডের হয়ে উইলি তিনটি এবং ওকস ও রশিদ দুটি করে উইকেট নেন। ইনিংস বিরতিতে বোলিংয়ের এই সাফল্য নিয়ে স্বস্তিই ছিল ইংল্যান্ড দলে। কিন্তু আরেকটি ব্যাটিং ব্যর্থতায় শেষ পর্যন্ত তা উবে গেছে।
ভারত: ৫০ ওভারে ২২৯/৯ (রোহিত ৮৭, সূর্যকুমার ৪৯, রাহুল ৩৯; উইলি ৩/৪৫, ওকস ২/৩৩, রশিদ ২/৩৫)।
ইংল্যান্ড: ৩৪.৫ ওভারে ১২৯ (লিভিংস্টোন ২৭, উইলি ১৬, ম্যালান ১৬; শামি ৪/২২, বুমরা ৩/৩২)।
ফল: ভারত ১০০ রানে জয়ী।
ম্যাচসেরা: রোহিত শর্মা।