বিদেশি ক্রিকেটাররা আইপিএলের মূল নিলামে না এসে ‘মিনি’ নিলামে কৌশলে নিজেদের দাম বাড়িয়ে নিচ্ছেন বলে মনে করেন দীনেশ কার্তিক। এ ব্যাপারে ভারতের ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) ব্যবস্থা নেওয়া উচিত বলেও মত এ উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যানের। এ ব্যাপারে দুটি পরামর্শও দিয়েছেন খেলার পাশাপাশি এখন ধারাভাষ্যকার ও বিশ্লেষক হিসেবে কাজ করা কার্তিক।
১৯ ডিসেম্বর দুবাইয়ে হয়ে যাওয়া আইপিএলের ‘মিনি অকশন’ বা ‘খুদে নিলাম’-এ সর্বোচ্চ দামে বিক্রি হয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার দুই পেসার মিচেল স্টার্ক ও প্যাট কামিন্স—দুজনকেই কেনা হয়েছে আইপিএলের ইতিহাসের সবচেয়ে দামি খেলোয়াড় হিসেবে। দুজনের কেউই গত বছরের শেষ দিকে হয়ে যাওয়া ‘মেগা’ নিলামে ছিলেন না। জাতীয় দলে মনোযোগ দিতে সর্বশেষ মৌসুমে আইপিএলে যাননি কামিন্স, স্টার্ক তো ৮ বছর ধরেই ভারতের ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক এ লিগ থেকে নিজেকে দূরে রেখেছিলেন।
ক্রিকেটভিত্তিক ওয়েবসাইট ক্রিকবাজের এক ভিডিওতে আইপিএলের ‘মিনি’ নিলামের একটি চল নিয়ে কথা বলেছেন কার্তিক। এমন নিলাম তাঁর ঠিক পছন্দ নয়, এমনটা উল্লেখ করে কার্তিক বলেন, তাঁর মনে হচ্ছে বিদেশি খেলোয়াড় ও এজেন্টরা এর একটি ফাঁক খুঁজে চতুরতার সঙ্গে তা ব্যবহার করছেন।
ভিডিওতে কার্তিক বলেন, ‘আমার মনে হয় খেলোয়াড় ও এজেন্টরা এটিকে কৌশল হিসেবে ব্যবহার করছে, যেখানে মূল নিলামে তারা আসে না। তিন বছর পরপর হওয়া সে নিলাম তারা যেতে দেয়, এরপর মিনি নিলামে আসে, যেটি মূল নিলামের পরের বছরই হয়। যেহেতু ফাঁকা থাকে, তাদের খ্যাপাটে দাম ওঠে। আমার মনে হয় অস্বাস্থ্যকর এই চলটা এখনই বন্ধ হওয়া উচিত।’
কামিন্সকে এবার রেকর্ড ২০ কোটি ৫০ লাখ রুপিতে কেনে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ, এর ঘণ্টা দুয়েক পর সে রেকর্ড ভেঙে ২৪ কোটি ৭৫ লাখ রুপিতে স্টার্ককে নেয় কলকাতা নাইট রাইডার্স। সব মিলিয়ে ৬ জন অস্ট্রেলিয়ানকে কিনতেই দলগুলো খরচ করেছে ৬৮ কোটি ৫ লাখ রুপি, যেখানে ৪২ জন ভারতীয়র পেছনে খরচ ৭৯ কোটি ৪৫ লাখ রুপি।
আমার মনে হয় খেলোয়াড় ও এজেন্টরা এটিকে কৌশল হিসেবে ব্যবহার করছে, যেখানে মূল নিলামে তারা আসে না।দীনেশ কার্তিক
যশপ্রীত বুমরার মতো বোলার প্রায় দ্বিগুণ কার্যকর হলেও কোনো কোনো খেলোয়াড়ের প্রায় অর্ধেক দাম পাবেন, এমন মনে করা কার্তিক এর সমাধানও দিয়েছেন। তাঁর প্রথম পরামর্শ হলো, ‘মূল নিলামের পর কোনো দলের ছেড়ে দেওয়া কেউ মিনি নিলামে এলে তিনি সর্বোচ্চ সে দামই পাবেন, যেটিতে তাকে মূল নিলামে কেনা হয়েছিল। যাতে করে যে সব খেলোয়াড় ভালো করেছে, এবং যাদের দলগুলো ধরে রেখেছে তাদের বাজে অনুভূতি না হয়। মিনি নিলামে আসা বেশির ভাগ খেলোয়াড়েরই হয়তো আগের মৌসুমটি ভালো কাটেনি।’
স্বাভাবিকভাবেই ছোট পরিসরের নিলামে আসেন আগের মৌসুমে না খেলা খেলোয়াড়ও। তাঁদের ব্যাপারে কার্তিকের পরামর্শ, ‘আমার মনে হয় এমন কেউ সর্বোচ্চ সে দামই পেতে পারে, ওই নির্দিষ্ট দলের সবচেয়ে দামি খেলোয়াড়ের যা দাম। এরপর সে যে দাম পাবে, সেটি বিসিসিআইকে ফেরত দেবে। যেটি হয়তো কোনো একসময় গিয়ে একটু বোঝা যাবে। এরপরও এটি একটু অন্যায্যই হবে, তবে আমার মনে হয় সেটি সেরা উপায়। কারণ, আমি দেখছি অনেক বিদেশি ক্রিকেটারই এটিকে ফাঁকফোকর হিসেবে ব্যবহার করছে।’