সদ্য সমাপ্ত বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ ২৪ উইকেট নিয়ে ভারতবাসীর কাছে ‘বীর’ হয়ে উঠেছেন মোহাম্মদ শামি। ভারত বিশ্বকাপ জিততে না পারলেও শামির অসাধারণ বোলিং মুগ্ধতা ছড়িয়েছে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের কণ্ঠে ৩৩ বছর বয়সী ফাস্ট বোলারের প্রশংসা ঝরেছে।
সেই শামি এবার মাঠের বাইরেও বীরত্বপূর্ণ কাজ করে সবার মন জিতে নিলেন। ভারতের উত্তরাখন্ড রাজ্যের পার্বত্য শহর নৈনিতালের কাছাকাছি এক ব্যক্তি ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিলেন। ঠিক সে সময় শামি তাঁর গাড়ি নিয়ে ওই রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন। অচেনা সেই ব্যক্তিকে দুর্ঘটনায় পড়তে দেখে সঙ্গে সঙ্গে গাড়ি থামান শামি এবং তাঁকে উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন।
গত রাতে ইনস্টাগ্রামে সেই ঘটনার ভিডিও পোস্ট করেছেন শামি। ভিডিওতে দেখা যায়, দুর্ঘটনার পর একটি গাড়ি পাহাড়ি ঝোপে পড়ে আছে। ভাগ্যিস গাড়িটি একটি গাছের সঙ্গে ধাক্কা খেয়েছিল, নয়তো পাহাড় থেকে আরও নিচে পড়ে যেত। তখন হয়তো এই ব্যক্তিকে বাঁচানো সম্ভব হতো না। গাড়িতে থাকা ব্যক্তিকে শামিসহ আরও কয়েকজন বের করে আনেন। এরপর আহত ব্যক্তির হাতে শামি নিজেই ব্যান্ডেজ লাগিয়ে দেন।
পোস্টে শামি লিখেছেন, ‘কাউকে বাঁচাতে পেরে আমি খুব খুশি। আল্লাহ তাকে দ্বিতীয় জীবন দিয়েছেন। নৈনিতালের পাহাড়ি রাস্তায় আমার গাড়ির ঠিক সামনেই তার গাড়ি পাহাড় থেকে নিচে পড়ে যায়। আমরা তাকে নিরাপদে বের করে এনেছি।’ শামির এমন মানবিকতা সবার প্রশংসা কুড়াতে শুরু করেছে। একজন লিখেছেন, ‘একটাই তো হৃদয়, আর কতবার জিতবেন?’ আরেকজন লিখেছেন, ‘মাঠ এবং মাঠের বাইরে দুই জায়গাতেই নায়ক।’
বিশ্বকাপ শেষ হওয়ার চার দিনের মধ্যে আবার মাঠে নেমে পড়েছে দুই ফাইনালিস্ট ভারত ও অস্ট্রেলিয়া। দুই দল খেলছে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ। তবে শামিসহ বিশ্বকাপ দলে থাকা বেশির ভাগ খেলোয়াড়কে সেই সিরিজ থেকে বিশ্রাম দিয়েছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই)।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম নিউজ ১৮ জানিয়েছে, এই ছুটিতে শামি নৈনিতালে গিয়েছিলেন একটি স্কুলের অনুষ্ঠানে অংশ নিতে। তাঁর বোনের মেয়ে সেখানকার সেন্ট মেরি’স কনভেন্ট স্কুলে পড়ে। তিনি সেখানে পৌঁছালে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানো হয়।
গত বছরের ডিসেম্বরে গাড়ি দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন ভারতের উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান ঋষভ পন্ত। প্রত্যক্ষদর্শীদের মধ্যে থেকে অনেকেই সেদিন ব্যস্ত ছিলেন পন্তের দামি জিনিসপত্র চুরি করতে। কিন্তু সবার মানসিকতা যে এক রকম নয়, সেটা প্রমাণ করেন দুই ব্যক্তি। পন্তকে চিনতে না পারলেও তাঁরা তাঁকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যান। এবার শামিও অচেনা মানুষের বিপদে এগিয়ে এসে মানবতার জয়ধ্বনি বাজালেন।