আইপিএলে সবচেয়ে বেশিবার প্লে-অফ খেলা দল কোনটি? সবচেয়ে বেশি ফাইনাল খেলেছে কারা? দুটি প্রশ্নেরই উত্তর একটাই—চেন্নাই সুপার কিংস। আইপিএলে ১৪ আসরে খেলা চেন্নাই এই নিয়ে ১২ বারের মতো উঠেছে প্লে-অফে।
এবারের আসরের আগে খেলা ১১টি প্লে-অফের মধ্যে ৯ বারই ফাইনাল খেলেছে মহেন্দ্র সিং ধোনির চেন্নাই, চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ৪ বার। আইপিএলের মতো প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ আসরে চেন্নাইয়ের এমন ধারাবাহিকতার রহস্য কী?
গতকাল দিল্লি হারিয়ে প্লে-অফ নিশ্চিত করে সেই রহস্যের কথা জানিয়েছেন ধোনি। কীভাবে একটা দল এতটা ধারাবাহিক, এর রেসিপি কী—এর উত্তরে ধোনি বলেছেন, ‘আমার মনে হয় না আলাদা কোনো রেসিপি আছে। সেরা খেলোয়াড়কে দলে নেওয়ার চেষ্টা করতে হবে, তাকে সেরা পজিশনটা দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে, যাতে তারা পারফর্ম করার সর্বোচ্চ সুযোগটা পায়। তাদের এমনভাবে ব্যবহার করতে হবে, যেন তারা পারফর্ম করার সর্বোচ্চ সুযোগ পায়। একই সঙ্গে যেসব জায়গায় তারা শক্তিশালী নয়, সেই জায়গায় পরিচর্যা করতে হবে। এটা ব্যাটসম্যান কিংবা বোলার, যে কারও জন্যই হতে পারে।’
এখন পর্যন্ত আইপিএলের ১৬টি আসর মাঠে গড়িয়েছে। যেখানে নিষেধাজ্ঞার কারণে দুই আসরে খেলতে পারেনি চেন্নাই। এরপরও সবচেয়ে বেশিবার প্লে-অফে খেলেছে দলটি। আইপিএলে অন্য দলগুলোর সঙ্গে ধোনির চেন্নাইয়ের সবচেয়ে বড় পার্থক্য দলের সংস্কৃতিতে।
খুব বেশি পরিবর্তন না করা, কোনো ক্রিকেটারকে ধারাবাহিকভাবে সুযোগ দিয়ে যাওয়া এই ফ্র্যাঞ্চাইজিটির সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য। সে কারণেই অন্য দলের ব্যর্থ ক্রিকেটারকেও চেন্নাইতে এসে সফল হতে দেখা যায়।
উদাহরণ হিসেবে শিবম দুবের কথাই ধরা যাক, এর আগে রাজস্থান রয়্যালস ও রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর হয়ে খেলেছেন এই ক্রিকেটার। সেখানে সফল না হলেও চেন্নাইয়ে বেশ সফল দুবে। এই আসরে তো চেন্নাইয়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটারদের একজন এই অলরাউন্ডার। অন্য দুটি দলের হয়ে তিন মৌসুমে আইপিএল খেলে কখনোই ১৩০–এর বেশি স্ট্রাইক রেটে রান করতে পারেননি দুবে।
তবে চেন্নাইয়ের হয়ে এই মৌসুমে তাঁর স্ট্রাইক রেট ১৬০, করেছেন ৩৮৫ রান। গত মৌসুমে তাঁর স্ট্রাইক রেট ছিল ১৫৬, রান ২৮৯। অভিজ্ঞ অজিঙ্কা রাহানের কথাও উদাহরণ হিসেবে নিয়ে আসা যেতে পারে। আইপিএলে অনেকটা ব্রাত্য হয়ে পড়া এই ক্রিকেটার এবার চেন্নাইয়ের হয়ে ৯ ইনিংসে প্রায় ১৭০ স্ট্রাইক রেটে করেছেন ২৮৩ রান।
ধোনির দাবি, চেন্নাইয়ে ক্রিকেটাররা ব্যক্তিগত অর্জনের কথা ভাবেন না এবং চেন্নাই ম্যানেজমেন্ট সব সময়ই তাঁদের পাশে থাকে। যে কারণেই মিলেছে এত সফলতা, ‘কোনো একজনকে নিজের জায়গাটা বিসর্জন করতে হবে, নিজের জায়গাটা অন্য কাউকে দিতে হতে পারে। এটা করলে কোনো না কোনোভাবে দলের জন্য যেটা ভালো, আপনি সেটাই করছেন। চেন্নাই ম্যানেজমেন্ট সব সময় আমাদের পাশে ছিল। তারা সব সময়ই বলেছে, “ভেবো না, যা করছ সেটা করতে থাকো, ভালো করবে।” এসবের অনেক বড় প্রভাব আছে। আমাদের সফলতার পেছনে এটা অনেক বড় একটা কারণ।’
ধোনি আরও বলেছেন, ‘প্লেয়াররাও অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এটা ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সের বিষয় নয়, আপনি চাইবেন তারা যেন দলের জন্য যেটা সবচেয়ে ভালো, সেভাবে পারফর্ম করতে পারে। তারা ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স নিয়ে উদ্বিগ্নই ছিল না। তাদের ভাবনা ছিল, আমরা কীভাবে নকআউট পর্বে যেতে পারি, ধারাবাহিক পারফর্ম করতে পারি।’