সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কাছের হারের পর দক্ষিণ আফ্রিকা দল
সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কাছের হারের পর দক্ষিণ আফ্রিকা দল

তবু গর্বিত দক্ষিণ আফ্রিকা, ‘চোকার্স নই’—দাবি কোচের

এ বছরের জানুয়ারি মাসের কথা। ওয়ানডে বিশ্বকাপে সরাসরি জায়গা করে নেওয়া নিয়ে শঙ্কায় ছিল ক্রিকেট দক্ষিণ আফ্রিকা। নতুন এক শুরুর আশায় রব ওয়াল্টারকে সাদা বল ক্রিকেটের প্রধান কোচ করা হয়।

লাল বলের দায়িত্ব বর্তায় শুকরি কোনরাডের কাঁধে। ২০২৭ সালে ঘরের মাঠের ওয়ানডে বিশ্বকাপের আয়োজন করবে দক্ষিণ আফ্রিকা। সাদা বলে সেটাই ছিল প্রোটিয়াদের মূল লক্ষ্য। টেস্ট দলের লক্ষ্য র‍্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে জায়গা করে নেওয়া।

দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেট ডিরেক্টর এনোখ এনকোয়ে দুই কোচকে নিয়োগ দেওয়ার পর বলেছিলেন, ‘আমাদের সব বিনিয়োগ, সব শক্তি, সব মনোযোগ ২০২৭ সালের বিশ্বকাপকে ঘিরে। এটাই সবচেয়ে বড় লক্ষ্য। আমাদের সেটা জিততেই হবে।’

১০ মাস পর সেই দক্ষিণ আফ্রিকাই ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে জায়গা করে নিল লিগ পর্বের দ্বিতীয় সেরা দল হিসেবে। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে গতকাল আরও কিছু রান করতে পারলে বিশ্বকাপ ফাইনালেও জায়গা করে নিতে পারত প্রোটিয়ারা। তবে বছরের শুরুতে দক্ষিণ আফ্রিকা যে জায়গায় ছিল, সেখান থেকে ভারতের কন্ডিশনে বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল খেলতে পারায় দলকে নিয়ে গর্বিত প্রোটিয়া কোচ রব ওয়াল্টার। এই দলের ভবিষ্যৎ নিয়ে রোমাঞ্চিতও মনে হলো তাঁকে।

অধিনায়ক টেম্বা বাভুমার সঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকা কোচ রব ওয়াল্টার। ছবিটি সেমিফাইনাল ম্যাচের আগে তোলা

গতকাল কলকাতার ইডেন গার্ডেনে সেমিফাইনাল ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসে প্রোটিয়া কোচ বললেন, ‘আমি রোমাঞ্চিত। এই দলটার আরও ভালোভাবে বেড়ে ওঠার সুযোগ আছে। এর চেয়েও আরও ভালো ক্রিকেট খেলার সামর্থ্য আছে। এই দলের বেশির ভাগ সদস্যই ২০২৭–এর যাত্রায় থাকবে। আমরা দেখলাম ১৫টি ম্যাচও খেলেনি, এমন ছেলেও দারুণভাবে চাপের মুহূর্তে পারফর্ম করছে। টুর্নামেন্টের একেক সময় একেকজন ক্রিকেটার সামনে এগিয়ে এসেছে, পারফর্ম করেছে।’

বিশ্বকাপের মঞ্চে সে শব্দটা প্রোটিয়াদের পিছু ছাড়তে চায় না, সেই ‘চোকার্স’ তকমা নিয়েও ওয়ালটারের যুক্তি আছে। কাল এ নিয়ে গতকালের সংবাদ সম্মেলনে ওয়াল্টারকে প্রশ্ন করা হলে তিনি ম্যাচের উদাহরণ টেনে বলেছেন, ‘যখন আপনি জেতা ম্যাচ হারবেন, তখন সেটাকে চোক করা বলে। এই ম্যাচে আমরা শুরু থেকেই পিছিয়ে ছিলাম। আমরা লড়াই করে প্রতিযোগিতায় ফিরে এসেছি। একটা মাঝারি মানের লক্ষ্য দাঁড় করিয়েছি। হ্যাঁ, ৩০-৪০ রান হয়তো কম করেছি। তবে ক্যাচগুলো ফিল্ডারের সামনে পড়া, কিছু ইনসাইড এজ ছিল, যা ধরা যেত। চোক করার মতো কিছু মনে হয়নি। এটা ছিল বিশ্বকাপের দ্বিতীয় ও তৃতীয় সেরা দলের মধ্যে দারুণ এক প্রতিযোগিতা।’

দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক পেসার ডেল স্টেইন

দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক ফাস্ট বোলার ডেল স্টেইনও নিজ দেশের পারফরম্যান্সে সন্তুষ্ট। ক্রিকইনফোর বিশ্লেষণী অনুষ্ঠানে তিনি বলেছেন, ‘আপনি যদি সামগ্রিক দিক বিবেচনা করেন, পরিসংখ্যান দেখেন, তাহলে দেখবেন দক্ষিণ আফ্রিকা সব বক্সেই টিক চিহ্ন পেয়েছে। ওরা শুধু সেমিফাইনাল ম্যাচটা জিততে পারেনি। কিছু প্রশ্নবোধক চিহ্ন হয়তো থাকবে। তবে সামগ্রিকভাবে দক্ষিণ আফ্রিকা ছিল দুর্দান্ত।’