ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে দুটি ম্যাচে বড় সংগ্রহ করেছিলেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। কিন্তু বোলাররা তা রক্ষা করতে পারেননি। সোমবার থেকে শুরু হচ্ছে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ। সৌম্য সরকারের বিশ্বাস, এই সিরিজে বোলাররা ঘুরে দাঁড়াবেন।
প্রথম ওয়ানডেতে ২৯৪ রানের পুঁজি জয়ের জন্য যথেষ্ট প্রমাণ করতে পারেননি বোলাররা। বাংলাদেশ ম্যাচ হেরেছে ৫ উইকেটে, ১৪ বল বাকি থাকতেই। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে পুঁজি স্বল্প (২২৭) হওয়ায় হয়তো বোলারদের কাঠগড়ায় তোলার সুযোগ নেই। তবে তৃতীয় ওয়ানডেতে বোলারদের সামর্থ্য প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে আরও বেশি।
স্কোরবোর্ডে ৩২১ রান থাকলেও বাংলাদেশ ম্যাচ হেরেছে ২৫ বল বাকি থাকতেই, ৪ উইকেটে। হারের ব্যবধানই বলে দিচ্ছে পুরো ওয়ানডে সিরিজে বাংলাদেশের বোলাররা কতটা ব্যর্থ ছিলেন। কিন্তু ২০ ওভারের ক্রিকেটে বোলারদের ওপর আস্থা রাখছেন সৌম্য। টি-টোয়েন্টি সিরিজের আগে বিসিবির সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম হ্যান্ডলকে সে কথাই বলেছেন বাংলাদেশের এই ওপেনার।
সেন্ট ভিনসেন্টের আর্নস ভেল গ্রাউন্ডে অনুশীলনের ফাঁকে সৌম্য বাংলাদেশ দলের বোলারদের নিয়ে বলেছেন, ‘আমাদের বোলাররা সব সময় ভালো করে আসছিল। (ওয়ানডে) এই সিরিজটাতে তারা স্ট্রাগল করেছে। আমার কাছে মনে হয়, আশা করি সামনে টি-টোয়েন্টিতে ঘুরে দাঁড়াবে।’ সৌম্য এরপর ব্যাটসম্যানদের দায়িত্ব নিয়েও বলেছেন, ‘পাশাপাশি ব্যাটসম্যানরা যারা রান করছিলাম বা রান করছে সবাই, যেহেতু ওয়ানডেতে আমরা তিন শ রান করেছি, এখানে যদি তারা সেটার ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারে তাহলে বোলার আর ব্যাটসম্যান মিলে একটা ভালো টুর্নামেন্ট হবে।’
আইসিসি টি-টোয়েন্টি র্যাঙ্কিংয়ে চতুর্থ দল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বাংলাদেশ ৯ম। টেস্ট সিরিজে ড্র করলেও ওয়ানডে সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে ৩-০-তে ধবলধোলাই হয়েছে বাংলাদেশ। আর সিরিজগুলো হচ্ছেও ক্যারিবিয়ানদের মাটিতে।
স্বাভাবিকভাবেই টি-টোয়েন্টিতে ধারে ও ভারে এগিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। কিন্তু সৌম্য তা মনে করেন না। তাঁর মতে, বিশ-বিশ মোট ৪০টি ওভার ভালো করলে কারা বড় দল, কারা ছোট দল, এই পার্থক্যটা থাকে না। ব্যাটিং, বোলিং ও ফিল্ডিং—এই তিনটি বিভাগেই ভালো করার চ্যালেঞ্জটা নিতে চান সৌম্য, ‘কারা বড় দল, কারা ছোট দল, সেটা থেকে বড় কথা হচ্ছে কারা ২০টা ওভার ভালো খেলবে, কারা ৪০টি ওভার ভালো খেলবে মাঠে। ওইটার জন্য অপেক্ষা করতে হবে। আমরা যদি ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং—তিনটি দিকই ভালো করতে পারি, দল হিসেবে যদি খেলতে পারি, আশা করি তাদের আমরা আরামে হারাতে পারব।’
সৌম্য জানেন, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ‘টি-টোয়েন্টিতে ভালো দল’। কিন্তু নিজেদের প্রতি মনোযোগ দেওয়ার কথা জানালেন সৌম্য, ‘তাদের থেকে মনোযোগ দিতে হবে, আমরা নিজেদের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করতে পারলে ম্যাচ জিততে পারব।’
প্রথম দুটি ওয়ানডেতে সৌম্যর ব্যাটে সেভাবে রান ছিল না। প্রথম ম্যাচে ১৯ রানে এবং পরের ম্যাচে ২ রানে আউট হন। কিন্তু তৃতীয় ম্যাচে ৭৩ বলে ৭৩ রানের ভালো একটি ইনিংস খেলেছেন।
তবে ক্যারিবিয়ান সাগরপারের ভূমিতে এবার বেশ আগেই গেছেন সৌম্য। গায়ানায় কিছুদিন আগে শেষ হওয়া গ্লোবাল সুপার লিগে রংপুর রাইডার্সকে চ্যাম্পিয়ন করার পথে টুর্নামেন্ট-সর্বোচ্চ ৫ ম্যাচে ১৮৮ রান করেন সৌম্য। ফাইনালে ৮৬ রান করে প্লেয়ার অব দ্য ফাইনালের পাশাপাশি টুর্নামেন্ট-সেরা হয়েছিলেন এই বাঁহাতি। স্ট্রাইক রেটও ছিল ভালোই—১৪২.৪২। টুর্নামেন্টে কমপক্ষে ১০০ রান করা ব্যাটসম্যানদের মধ্যে যা সর্বোচ্চ। টি-টোয়েন্টি ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগের এই অভিজ্ঞতাই এবার দেশের হয়ে টি-টোয়েন্টি সিরিজে কাজে লাগাতে চান সৌম্য।
গ্লোবাল সুপার লিগের অভিজ্ঞতার কথা টেনে সৌম্য বলেছেন, ‘আমি কিছুদিন আগে এখানে এসেছি। গ্লোবাল টি-টোয়েন্টি খেলেছি। কিছু ম্যাচ খেলার সুযোগ হয়েছে আমার জন্য। একটা সুযোগ ছিল। একটা ভালো টুর্নামেন্ট গেছে।’
দেখা যাক, সৌম্য ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগের ফর্ম জাতীয় দলের হয়ে টি-টোয়েন্টিতে টেনে নিতে পারেন কি না। সেন্ট ভিনসেন্টের কিংসটাউনে ১৬, ১৮ ও ২০ ডিসেম্বর টি-টোয়েন্টি সিরিজের ম্যাচগুলো অনুষ্ঠিত হবে।