তাইজুল ইসলামের বলটা লরকান টাকার সজোরে ড্রাইভ করলেন। শর্ট কাভার ফিল্ডার সেটি লাফিয়ে উঠেও ধরতে পারলেন না। ব্যর্থ হলেন মিড অফ ফিল্ডারও। বল বাউন্ডারিতে পৌঁছানোর আগেই গ্র্যান্ড স্ট্যান্ডে বসে থাকা আয়ারল্যান্ড সমর্থকরা দাঁড়িয়ে হাততালি দিতে শুরু করলেন। সেখানে ছিলেন আয়ারল্যান্ড অধিনায়ক অ্যান্ড্রু বলবার্নির বাবা-মা–ও।
মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের এনালগ স্কোরবোর্ডে টাকারের নামের পাশে থাকা ৯৬ সংখ্যাটা ততক্ষণে ১০০ হয়ে গেছে। টেস্ট অভিষেকেই এই আইরিশ উইকেটকিপার–ব্যাটসম্যানের সেঞ্চুরি, কিন্তু টাকার বিশেষ কোনো উদযাপন করলেন না। হেলমেট খুললেন, মুখে হাসি টেনে ব্যাট উঁচিয়ে ধরলেন আইরিশ ড্রেসিংরুমের দিকে। উদযাপন বলতে এটুকুই।
আয়ারল্যান্ডের টেস্ট অভিষেকে সেঞ্চুরি করেছিলেন কেভিন ও’ব্রায়েন। সেটি ২০১৯ সালে ডাবলিনের মালাহাইডে, পাকিস্তানের বিপক্ষে। এরপর আয়ারল্যান্ড টেস্টই খেলেছে দুটি। মিরপুরে বাংলাদেশের বিপক্ষে তারা খেলছে নিজেদের চতুর্থ টেস্ট। দ্বিতীয় আইরিশ হিসেবে আজ টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেকে সেঞ্চুরি পেলেন লরকান টাকার। এর আগে ১৪টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচে কোনো সেঞ্চুরি ছিল না টাকারের। টেস্টে আয়ারল্যান্ডের পক্ষে সেঞ্চুরি এই দুটিই।
৯৪ বলে ফিফটি করে টাকার সেটিতে সেঞ্চুরিতে রূপ দেন ১৪৯ বল খেলে। তবে সেঞ্চুরির পর টাকারের ইনিংস বেশিদূর এগোয়নি। ইবাদতের হোসেনের বলে কাভার দিয়ে উড়িয়ে মারতে গিয়ে শরীফুল ইসলামের হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হয়ে যান তিনি। তাঁর দুর্দান্ত ইনিংসের সমাপ্তি ঘটে ১০৮ রানে। ১৬২ বল খেলে ১৪টি চার ও ১টি ছক্কা ছিল টাকারের ইনিংসে।
টাকারের ইনিংসের সিংহভাগ রান এসেছে লেগের দিকে। স্পিনারদের বিপক্ষে ফ্লিক শটটা নিয়মিত খেলেছেন, স্কয়ার লেগ ও মিড উইকেটে প্রচুর রান নিয়েছেন। ১০৮ রানের মধ্যে ৫৩ রানই এসেছেন স্কয়ার লেগ ও মিড উইকেটে। বাংলাদেশ দলের বোলারদের পায়ের ওপর করা বলগুলো ফাইন লেগে ঠেলে খেলেছেন, সেদিক থেকে তুলে নিয়েছেন ১৬ রান। সেই তুলনায় অফের দিকে খুব বেশি রান (২৩) পাননি তিনি।
টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেকে সেঞ্চুরি করেছেন ১১২ জন ব্যাটসম্যান। তবে একটা কীর্তিতে টাকার আছেন ছোট্ট এক দলে। এই ১১২ জনের মধ্যে মাত্র নয়জনই সাত নম্বরে ব্যাটিং করে সেঞ্চুরি করতে পেরেছেন।