শেষ সেশনে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পাকিস্তান
শেষ সেশনে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পাকিস্তান

গল টেস্ট

ধনাঞ্জয়ার প্রতিরোধের পর শেষ বিকেলের উইকেটে চাপে পাকিস্তান

ধনাঞ্জয়া ডি সিলভার ৮২ রানের লড়াকু ইনিংসের পরও দিনের অনেকটা সময় গল টেস্টে পরিষ্কার ফেবারিট ছিল পাকিস্তান। তবে শেষ বেলায় ৩ উইকেট হারিয়ে ভালোই চাপে পড়েছে বাবর আজমের দল। সমীকরণটা অবশ্য এখনো খুব একটা কঠিন নয়—৭ উইকেট বাকি রেখে তাদের প্রয়োজন ৮৩ রান। গলের উইকেটে শেষ দিনে শ্রীলঙ্কার স্পিনারদের সামনে পড়তে হবে তাদের, শেষ দিনে কাজটি পাকিস্তানের জন্য কঠিন হয়ে উঠতে পারে অনেকটাই। শ্রীলঙ্কা তাই লড়াইয়ে আছে বলতে হবে, তবে তাদের কাজটি সহজ নয় মোটেও।

১৩১ রানের লক্ষ্যে নামা পাকিস্তানকে প্রথম আঘাতটা করেন প্রবাত জয়াসুরিয়া, ইনিংসের সপ্তম ওভারে। আবদুল্লাহ শফিক হন কট বিহাইন্ড। তিনে আসা শান মাসুদ সামনে এসে খেলতে গিয়ে ক্যাচ দেন শর্ট লেগে। নাইটওয়াচম্যান হিসেবে এসেছিলেন নোমান আলী, তাঁর রানআউটে চাপ বাড়ে পাকিস্তানের। এরপর আসতে হয় অধিনায়ক বাবরকেই। দিন শেষে ২৫ রানে অপরাজিত ইমাম-উল-হকের সঙ্গে পাকিস্তান অধিনায়কের জুটি অবিচ্ছিন্ন, দুজনের জুটির বয়স ২ ওভার। অবশ্য ১৫ ওভারের মধ্যেই দুটি রিভিউ হারিয়ে ফেলেছে শ্রীলঙ্কা, সেটি শেষ দিনে কতটা ভোগাবে তাদের তা বলবে সময়।

এর আগে শ্রীলঙ্কার দ্বিতীয় ইনিংসের ভিতটা ভালোই গড়ে দিয়েছিলেন দুই ওপেনার দিমুথ করুনারত্নে ও নিশান মাদুশকা, দুজনের ওপেনিং জুটিতে ওঠে ৪২ রান। সে সময় বাউন্ডারিও আসছিল নিয়মিতই। সে জুটি ভাঙে আবরার আহমেদের লেগ স্পিনে করুনারত্নের আলগা শটে, মিড উইকেটে দারুণ ক্যাচ নেন আগা সালমান। প্রথম সেশনে শ্রীলঙ্কা হারায় আরও ২ উইকেট—দুটিই নোমান আলীর বলে। কুশল মেন্ডিস হন এলবিডব্লু, প্রথম স্লিপে বাবরের দুর্দান্ত ক্যাচে পরিণত হন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস। রানের গতি কমে আসা শুরু করে তার আগে থেকেই।

শ্রীলঙ্কার প্রতিরোধের নেতৃত্ব দেন ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা

দ্বিতীয় সেশনের শুরুতেই ফিফটি করা মাদুশকাকে থামান নোমান, পা না নড়িয়েই খেলতে গিয়ে কট বিহাইন্ড হন শ্রীলঙ্কান ওপেনার। তখনো ৫০ রানে পিছিয়ে ছিল শ্রীলঙ্কা। কিন্তু দ্রুতই তাদের থামতে দেননি ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা। দিনেশ চান্ডিমালের সঙ্গে পঞ্চম উইকেটে ৬০ রানের জুটিতে প্রথম প্রতিরোধ গড়েন তিনি। এবার পাকিস্তানকে ব্রেকথ্রু এনে দেন আগা, তাঁর বলে মিড উইকেটে ধরা পড়েন ২৮ রান করা চান্ডিমাল। সাদিরা সামারাবিক্রমা অবশ্য ডি সিলভাকে বেশিক্ষণ সঙ্গ দিতে পারেননি। শর্ট লেগে আগার আরেকটি দুর্দান্ত ক্যাচে পরিণত হয়ে থামতে হয় তাঁকে।

কাজটা সহজ নয় শ্রীলঙ্কার জন্যও

ডি সিলভা পরের লড়াইটা করেন রমেশ মেন্ডিসকে নিয়ে। ইনিংসে পাকিস্তানকে সবচেয়ে বেশি হতাশ করে এ জুটিই। চা-বিরতির আগে–পরে সপ্তম উইকেটে আসে ৭৬ রান। ৬১ রানে এগিয়ে থেকে বিরতিতে গিয়েছিল শ্রীলঙ্কা, ৫৩ রানে অপরাজিত ছিলেন ডি সিলভা, ১৯ রানে মেন্ডিস। বিরতির পর ১২তম ওভারে গিয়ে ভাঙে সে জুটি। আবরারের বলে ৪২ রান করে এলবিডব্লু হন মেন্ডিস।

৮০ ওভার শেষেই দ্বিতীয় নতুন বল নেয় পাকিস্তান, প্রথম ওভারেই আসেন শাহিন শাহ আফ্রিদি। চতুর্থ ও পঞ্চম বলে টানা দুটি চার মারেন ডি সিলভা। আফ্রিদি অবশ্য ফিরে আসেন দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে। লেংথ থেকে বেরিয়ে যাওয়া বলটি থার্ডম্যানে খেলতে গিয়ে কট বিহাইন্ড হন ডি সিলভা। ৮২ রানেই থামেন তিনি, শ্রীলঙ্কাও এরপর বেশিক্ষণ টেকেনি। ৫ রানের মধ্যে শেষ ২ উইকেট হারিয়ে পাকিস্তানকে লক্ষ্য দিতে পারে ১৩১ রানের।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

শ্রীলঙ্কা: ৩১২ ও ৮৩.১ ওভারে ২৭৯ (ডি সিলভা ৮২, মাদুশকা ৫২, মেন্ডিস ৪২; আবরার ৩/৬৮, নোমান ৩/৭৫, আগা ২/৩৯, আফ্রিদি ২/৬৪)পাকিস্তান: ৪৬১ ও ১৫ ওভারে ৪৮/৩ (ইমাম ২৫*, বাবর ৬*; জয়াসুরিয়া ২/১৭)