আপনি কি পেস বোলিং–সহায়ক কন্ডিশনে পেসারদের দাপট দেখতে পছন্দ করেন? বাউন্স, সুইং, পেসে ব্যাটসম্যানদের নাকানিচুবানি খাওয়া দেখতে ভালোবাসেন, তাহলে ব্রিসবেনের এই টেস্টটা আপনার জন্য।
পাঁচ দিনের টেস্টে যেখানে কমপক্ষে ৪৫০ ওভার খেলা হয়, সেখানে ব্রিসবেনে দক্ষিণ আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়া টেস্ট শেষ হয়েছে দুই দিনে। খেলা হয়েছে ১৪৫ ওভারেরও কম। এর আগে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে এর চেয়ে কম সময়ে টেস্ট শেষ হয়েছে মাত্র একবার। ক্রিকেট ইতিহাসের অষ্টম সংক্ষিপ্ততম টেস্ট এটি।
দুই ইনিংস মিলিয়ে উইকেট পড়েছে ৩৪টি, যার ৩০টিই নিয়েছেন পেসাররা। প্রথম দিনে উইকেটের পতন হয় ১৫টি, দ্বিতীয় দিনে ১৯টি। সবচেয়ে বড় কথা ব্রিসবেনে প্রতিটি রানের জন্যই কষ্ট করতে হয়েছে ব্যাটসম্যানদের। গ্যাবার উইকেটে সবুজ ঘাসের সঙ্গে বাউন্স ছিল অসমান। বলের গতিতেও হয়েছে তারতম্য। সে জন্যই তো ৩৪ রানের লক্ষ্য দিলেও ম্যাচ অনেকটা জমিয়ে ফেলেছিলেন প্রোটিয়া পেসাররা।
উসমান খাজা, ডেভিড ওয়ার্নার, স্টিভেন স্মিথরা সবাই মিলে যত না রান করেছেন, এর চেয়ে অতিরিক্ত (১৯) থেকেই বেশি রান পেয়েছে অস্ট্রেলিয়া। ৬ উইকেটের এই জয়ে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল অস্ট্রেলিয়া।
ব্রিসবেন টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার সপ্তম বোলার ও পঞ্চম পেসার হিসেবে ৩০০ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করেন মিচেল স্টার্ক। এই টেস্টের আগে স্টার্কের উইকেট ছিল ২৯৬টি। প্রথম ইনিংসে ৩ উইকেট নেওয়ার পর স্টার্ক দ্বিতীয় ইনিংসে নিয়েছেন ২ উইকেট। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টে চোটের কারণে না খেললেও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দলে ফেরেন নিয়মিত অধিনায়ক প্যাট কামিন্স।
ফিরেই টেস্টে সাত উইকেট নিয়েছেন কামিন্স। প্রথম ইনিংসে দুই উইকেটের পর দ্বিতীয় ইনিংসে প্রোটিয়াদের গুঁড়িয়ে দেওয়ার নেতৃত্বটা তিনিই দিয়েছেন, নিয়েছেন পাঁচ উইকেট। তবে ম্যাচসেরা হয়েছেন ট্রাভিস হেড। প্রথম ইনিংসে তাঁর ৯৬ বলে ৯২ রানের ইনিংসটাই মূলত পুরো ম্যাচে পার্থক্য গড়ে দিয়েছে।
ডিন এলগারের দল প্রথম ইনিংসে মিচেল স্টার্ক, প্যাট কামিন্সদের সামনে গুটিয়ে যায় ১৫২ রানেই। চলতি বছর এই নিয়ে অষ্টমবারের মতো ২০০ রানের নিচে অলআউট হলো এলগারের দল। জবাবে অবশ্য শুরুটা ভালো না করলেও হেডের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে প্রথম দিনটা নিজেদের করে নিয়েছে অস্ট্রেলিয়া।
প্যাট কামিন্সের দল তাদের প্রথম দিন শেষ করে ৫ উইকেটে ১৪৫ রান তুলে। অস্ট্রেলিয়া তাদের প্রথম ইনিংসে করে ২১৮ রান। ৬৬ রানে পিছিয়ে থেকে দক্ষিণ আফ্রিকা দ্বিতীয় ইনিংসে গুটিয়ে যায় মাত্র ৯৯ রানে। প্রথম ইনিংসে ৪ উইকেট নেওয়া রাবাদা দ্বিতীয় ইনিংসেও নেন ৪ উইকেট। এটি প্রতিপক্ষকে সবচেয়ে কম লক্ষ্য দিয়ে ৪ উইকেট নেওয়ার কীর্তি।