মাঝে সময়ের ব্যবধান তিন সপ্তাহেরও কম। রাওয়ালপিন্ডিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্ট শেষ হয়েছে ৩ সেপ্টেম্বর। এর ১৬ দিন পর ১৯ সেপ্টেম্বর চেন্নাইয়ে বাংলাদেশ দল দাঁড়াবে ভারতের সামনে।
ভারত ও পাকিস্তান উপমহাদেশের দুই ক্রিকেট পরাশক্তি, বেশ কয়েক বছর ধরেই যাদের বিপক্ষে খেলা মানে বাংলাদেশেরও দারুণ কিছু করে দেখানোর তেষ্টা। এই দুই প্রতিপক্ষের সঙ্গে খেলায় মাঠে যেমন বাড়তি উত্তেজনা ভর করে, মাঠের বাইরেও ছড়ায় বারুদ পোড়া গন্ধ। কাগজ-কলমে ভারত ও পাকিস্তান বাংলাদেশের কাছে এগিয়ে থাকা প্রতিপক্ষ। হয়তো সে কারণেই তাদের বিপক্ষে গর্জে ওঠার তাড়নাটাও বেশি। সঙ্গে সর্বক্ষেত্রে উপমহাদেশীয় প্রতিদ্বন্দ্বিতার অদৃশ্য আঁচ তো আছেই। সব মিলিয়ে বাংলাদেশ বনাম পাকিস্তান এবং বাংলাদেশ বনাম ভারত ইদানীং অন্তত বাংলাদেশের কাছে অ্যাশেজ–তুল্য সিরিজই হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তো পাকিস্তানে সেরকমই এক অ্যাশেজ জিতে বাংলাদেশ দল এবার ভারতের অপেক্ষায়। আজ মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে আসন্ন সিরিজ নিয়ে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে বাংলাদেশ ব্যাটসম্যান লিটন দাস ‘ভারত অনেক ভালো দল’, ‘আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ’ কথাগুলো বেশ কয়েকবারই বললেন, বলাটা স্বাভাবিকও। কিন্তু পাকিস্তান থেকে নিয়ে আসা আত্মবিশ্বাস সঙ্গী বলেই কিনা, তিনি এটাও বললেন, ভারতের বিপক্ষে খেলাটা কোনো চাপ নয়, বরং অনুপ্রেরণা।
প্রশ্নটা অবশ্য ভারত–পাকিস্তান মিলিয়েই করা হয়েছিল। এই দুই দলের বিপক্ষে খেলা মানেই যেহেতু দর্শক প্রত্যাশা সীমাহীন বেড়ে যাওয়া, এটাকে তাঁরা কীভাবে দেখেন? উত্তরে লিটন বলেছেন, ‘এটা আসলে অনুপ্রেরণাই দেয়। ভালো খেললে সুনাম হবে, দুজন মানুষ চিনবে। এর চেয়ে বড় পাওয়া তো আর কিছু থাকতে পারে না! আমার মনে হয় না চাপের কিছু আছে। টেস্ট ক্রিকেটটা আমরা এখন মোটামুটি ভালো খেলছি। সেই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে, এটাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ এখন।’
পাকিস্তানকে তাদেরই মাঠে ২-০–তে সিরিজ হারিয়ে আসার পর লিটনের মুখে টেস্ট ক্রিকেট ভালো খেলার দাবিটাকে বাড়াবাড়ি মনে হয়নি। বরং ভারতেও সেই ধারাবাহিকতা ধরে রাখার যে আশাবাদ তিনি জানালেন, সেটাকেও যৌক্তিক মনে হচ্ছে।
অবশ্য লিটন এ–ও বলেছেন, পাকিস্তান সিরিজ এখন অতীত, ‘পাকিস্তানের বিপক্ষে আমরা খুব ভালো ক্রিকেট খেলেছি। তবে এটা এরই মধ্যে অতীত হয়ে গেছে।’ পরে একই প্রসঙ্গে আরেক প্রশ্নে ব্যাপারে সংবাদমাধ্যমেরও সাহায্য চাইলেন বাংলাদেশ ব্যাটসম্যান, ‘সামনে তাকানোটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনাদেরও একটু সাহায্য করতে হবে। আপনারা যদি পাকিস্তান সিরিজ নিয়ে বেশি কথা না বলেন, খুব ভালো হবে। খেলোয়াড় হিসেবে আমার কাছে ওটা অতীত হয়ে গেছে।’
অতীত, তবে খুব দূরের অতীত কিন্তু নয়। ভারত সফরে পাকিস্তান জয় থেকে পাওয়া আত্মবিশ্বাস বড় শক্তি হবে বাংলাদেশের। শুধু সেই শক্তিটাকে ধারাবাহিকতায় অনুবাদ করে দেখাতে হবে।