‘ম্যাচ পাতানোর সমঝোতা বা পরিকল্পনা’সহ দুর্নীতির সাতটি অভিযোগ এনে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটার ডেভন থমাসকে সাময়িকভাবে নিষিদ্ধ করেছে আইসিসি। তিনটি ভিন্ন ভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক লিগ—লঙ্কা প্রিমিয়ার লিগ, টি-টেন ক্রিকেট লিগ ও ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগে থমাস এ দুর্নীতি করেছেন বলে জানিয়েছে আইসিসি।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা জানায়, শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট (এসএলসি), এমিরেটস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি) ও ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (সিপিএল) পক্ষে থমাসকে এ সাতটি অভিযোগে অভিযুক্ত করেছে আইসিসি। তাঁর সাময়িক নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়ে গেছে। অভিযোগের জবাব দিতে তাঁকে ১৪ দিন সময় দিয়েছে আইসিসি।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে ৩৪টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা থমাসের আন্তর্জাতিক অভিষেক হয়েছিল ২০০৯ সালে, বাংলাদেশের বিপক্ষে। তবে ২০১৩ সালের পর থেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অনুপস্থিত ছিলেন তিনি। ২০২২ সালে এসে টেস্ট অভিষেক হয় তাঁর। এখন পর্যন্ত এ সংস্করণে একটি ম্যাচই খেলেছেন তিনি। ৩৩ বছর বয়সী থমাস সামনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজেও ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলে ছিলেন।
আইসিসির অভিযোগ, এলপিএল, টি-টেন লিগ ও সিপিএল—তিনটিতেই দুর্নীতি করেছেন থমাস। তাঁর বিরুদ্ধে সবচেয়ে গুরুতর অভিযোগ শ্রীলঙ্কার এলপিএলে—২০২১ সালে ক্যান্ডি ওয়ারিয়র্সের হয়ে খেলার সময় একটি ম্যাচ পাতানোর উদ্যোগ নিয়েছিলেন তিনি। সে মৌসুমে থমাস এলপিএলে একটি ম্যাচই খেলেছিলেন।
সব মিলিয়ে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটের দুর্নীতিবিরোধী কোডের চারটি ধারা ভেঙেছেন থমাস। এ চারটি ধারা হলো— ‘কোনো ম্যাচের ফল, গতিপথ, সদাচরণ ও অন্যান্য দিক পাতানোর সমঝোতা বা এর পরিকল্পনায় অংশ নেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ’, ‘দুর্নীতিবিরোধী বিভাগকে দুর্নীতিতে অংশ নেওয়ার প্রস্তাবের ব্যাপারে পূর্ণাঙ্গভাবে খুলে বলার ব্যাপারে ব্যর্থ হওয়া’, ‘তদন্তে সহায়তা করার ক্ষেত্রে ব্যর্থ হওয়া বা অস্বীকৃতি জানানো’, ‘সম্ভাব্য ঘটিত দুর্নীতির তদন্তে বাধা দেওয়া বা বিলম্বিত করা, এমন তদন্তে সংশ্লিষ্ট কোনো নথি বা তথ্য গোপন, বিকৃত বা বিনষ্ট করা; যেগুলো দুর্নীতির প্রমাণ হতে পারে অথবা দুর্নীতির প্রমাণ আবিষ্কারের পথ দেখাতে পারে’।
ইসিবির দুর্নীতিবিরোধী কোডের একটি ধারা ভঙ্গের অভিযোগ আছে থমাসের বিরুদ্ধে। সেখানে তদন্তে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে বিস্তারিত জানাতে ব্যর্থ বা অস্বীকৃতি জানানোর ব্যাপার আছে। এ অভিযোগ ২০২১ সালের আবুধাবি টি-টেন লিগে, যেখানে পুনে ডেভিলস দলে খেলেছিলেন তিনি।
থমাসের বিরুদ্ধে আনা বাকি দুটি অভিযোগ সিপিএলের দুটি সংস্করণে। এর মধ্যে একটিতে সেন্ট কিটস অ্যান্ড নেভিস প্যাট্রিয়টস ও আরেকটিতে বার্বাডোজ রয়্যালসের হয়ে খেলেছিলেন থমাস। সেখানেও একটি অভিযোগ আছে দুর্নীতির প্রস্তাব জানাতে ব্যর্থ হওয়ার ব্যাপারে।
অন্য অভিযোগ হলো, দুর্নীতিবিরোধী কর্মকর্তাকে অপ্রয়োজনীয় বিলম্ব ছাড়াই কোনো উপহার, নগদ অর্থ, আতিথেয়তা বা সুবিধা পাওয়ার ব্যাপারটি জানাতে ব্যর্থ হওয়া। অভিযোগে বলা হয়েছে, তিনি জানতেন যে সিপিএলের দুর্নীতিবিরোধী কোড ভাঙতেই এ কাজগুলো করা হয়েছে বা এর মাধ্যমে ক্রিকেটের অসম্মান হতে পারে।