ভারতের চাওয়ায় মুম্বাইয়ের ভারত–নিউজিল্যান্ড ম্যাচের পূর্বনির্ধারিত পিচ শেষ মুহূর্তে বদলে দেওয়ার ঘটনা বিশ্বকাপে আলোড়ন তুলেছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের দাবি, রোহিত শর্মার দল ফাইনালে উঠলে শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচের নির্ধারিত উইকেটও বদলে ফেলা হবে।
২০২৩ বিশ্বকাপের আয়োজক বিসিসিআই হলেও বিশ্বকাপের মূল কর্তৃপক্ষ আইসিসি। আয়োজক বোর্ড ও ক্রিকেট দলের চাওয়া অনুসারে পিচ বদলে ফেলার ঘটনায় আইসিসির ভূমিকা নিয়ে যখন প্রশ্ন উঠেছে, তখন নিজেদের অবস্থান তুলে ধরেছে ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। আইসিসি জানিয়েছে, পূর্বনির্ধারিত পিচ বাদ দিয়ে ভিন্ন পিচে খেলা চালানো নতুন কিছু নয়, অস্বাভাবিকও নয়।
আজ আইসিসির মুখপাত্র এ বিষয়ে বলেন, ‘লম্বা দৈর্ঘ্যের একেকটা টুর্নামেন্টের শেষ দিকে পরিকল্পিত পিচের বদল ঘটানো স্বাভাবিক ব্যাপার। এ রকম ঘটনা এরই মধ্যে কয়েকবার ঘটেছেও।’
মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়েতে সেমিফাইনালের আগে বিশ্বকাপের চারটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছিল। পূর্বপরিকল্পনা অনুসারে সেমিফাইনালের ম্যাচ হওয়ার কথা ৭ নম্বর উইকেটে, যেখানে এর আগে কোনো ম্যাচ হয়নি। আইসিসি নিশ্চিত করেছে, ভারতের চাওয়ায় এরই মধ্যে ব্যবহৃত পিচে ভারত–নিউজিল্যান্ড ম্যাচের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ‘আমাদের আয়োজক ও ভেন্যু কিউরেটরের সুপারিশে এই পরিবর্তন আনা হয়েছে। পিচ বদলের বিষয়টি আইসিসির স্বাধীন পিচ পরামর্শককে অবহিত করা হয়েছে এবং (ব্যবহৃত) পিচে খেলা ভালো হবে না, এমনটা বিশ্বাস করার কোনো কারণ ছিল না।’
ভারতীয় ক্রিকেট পোর্টাল ক্রিকবাজ জানিয়েছে, ভারতের ক্রিকেট বোর্ড বিসিসিআই এবং ক্রিকেট দলের কোচ রাহুল দ্রাবিড়ের নেতৃত্বাধীন টিম ম্যানেজমেন্টের তাড়নায় পিচ বদল করা হয়েছে। পিচ নির্ধারণের বিষয়ে জানে, এমন একটি সূত্র ক্রিকেট পোর্টালটিকে জানায়, পিচ চূড়ান্তকরণের বিষয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট ধারা নেই। যে ভেন্যুতে খেলা হবে, তারা ম্যাচের সম্ভাব্য সেরা পিচ ও আউটফিল্ড দেখে খেলার ব্যবস্থা করে।
গত বছর অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দুটি সেমিফাইনালেই ম্যাচ গড়িয়েছিল আগেই ব্যবহার হওয়া পিচে। যদিও ইংল্যান্ডে ২০১৯ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ব্যবহার হয়েছে নতুন পিচ।
এবারের বিশ্বকাপের প্লেয়িং কন্ডিশনের ৬.৩ ধারা অনুসারে, পিচ নির্বাচন ও প্রস্তুতের দায়িত্ব মাঠ কর্তৃপক্ষের। ভারত–নিউজিল্যান্ড সেমিফাইনালের ক্ষেত্রে যা মুম্বাই ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের (এমসিএ) দায়িত্ব। তবে আইসিসির স্বাধীন পিচ পরামর্শক অ্যান্ডি অ্যাটকিনসনের সঙ্গে সমন্বয় করার কথা ওয়াংখেড়ের কিউরেটরের।
ডেইলি মেইলের খবরে বলা হয়, পূর্বপরিকল্পিত পিচ বদলে ফেলায় হতাশা প্রকাশ করেছেন অ্যাটকিনসন। নিজের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে পাঠানো অ্যাটকিনসনের মেইলের কিছু অংশ প্রকাশ করেছে মেইল অনলাইন। সেখানে অ্যাটকিনসন লিখেছেন, ‘এসব কাজের কারণে অবশ্যই এটা ভাবার সুযোগ আছে যে এটাই কি প্রথম আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ ফাইনাল, যেখানে পিচ বিশেষভাবে পছন্দ ও প্রস্তুত করা হয় টিম ম্যানেজমেন্ট কিংবা আয়োজক দেশের বোর্ডের উচ্চস্তরের অনুরোধে।’