শেষ পর্যন্ত বৃষ্টিই জিতে গেল সিলেটে। পরিত্যক্ত হয়ে গেল বাংলাদেশ-আয়ারল্যান্ড দ্বিতীয় ওয়ানডে।
বৃষ্টি নামার আগে অবশ্য বাংলাদেশ নিজেদের ইনিংসে পুরো ৫০ ওভারই ব্যাটিং করেছে। ৬ উইকেট হারিয়ে তুলেছে ওয়ানডেতে নিজেদের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ৩৪৯ রান।
যতক্ষণ খেলা হয়েছে, তাতে সবচেয়ে বেশি আলো কেড়েছেন মুশফিকুর রহিম। ৬০ বলে ১৪ চার ও ২ ছক্কায় অপরাজিত ১০০ রান করে গড়েছেন বাংলাদেশের হয়ে ওয়ানডেতে দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড। পাশাপাশি নাজমুল হোসেন করেছেন ৭৭ বলে ৭৩ রান, লিটন দাস ৭১ বলে ৭০ ও তাওহিদ হৃদয় ৩৪ বলে ৪৯ রান করেন। ইনিংস বিরতির সময়ই নামে ঝুম বৃষ্টি।
কাট-অফ টাইম ছিল ৯.৩৩। তবে এর ঘণ্টাখানেক আগেও থামেনি বৃষ্টি। স্থানীয় সময় রাত ৮-৩২ মিনিটে আনুষ্ঠানিকভাবে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে বাংলাদেশ ও আয়ারল্যান্ডের দ্বিতীয় ওয়ানডে। এ মাঠেই আগামী ২৩ মার্চ হবে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে।
বৃষ্টির আগে কেমন ছিল বাংলাদেশের ইনিংস, জানতে পারবেন নিচের ধারাবর্ণনায়।
গতকাল দিনভর বৃষ্টি হয়েছে সিলেটে। আজ সকাল থেকে আকাশ একটু মেঘলা থাকলেও বৃষ্টির দেখা নেই এখন পর্যন্ত। অবশ্য রোদের দেখাও মেলেনি। ফলে এখন পর্যন্ত নির্দিষ্ট সময়েই শুরু হওয়ার কথা সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে আয়ারল্যান্ড ও বাংলাদেশের টস।
দুই দলের খেলোয়াড়েরা মাঠে গা গরমে ব্যস্ত আপাতত, মিনিট বিশেকের মধ্যে হবে টস। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে প্রথম আলোর লাইভ আপডেটে আপনাকে স্বাগত!
শুধু হোম সিরিজ নয়, আগামী মে মাসে ইংল্যান্ডে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের ফিরতি সিরিজের সঙ্গেও সাংঘর্ষিক আইপিএলের সূচি। মোস্তাফিজুর রহমান, সাকিব আল হাসান ও লিটন দাস—তিন জন এবার আছেন আইপিএলে। এরই মধ্যে ছুটি চেয়ে বিসিবির কাছে আবেদন করেছেন তাঁরা। শেষ পর্যন্ত সেটি মিলবে?
বিসিবির মেডিকেল বিভাগ টিম ম্যানেজমেন্টকে পরামর্শ দিয়েছে, সিরিজ শুরুর আগে অনুশীলনে ফুটবল খেলতে গিয়ে চোট পাওয়া মেহেদী হাসান মিরাজকে শুধু এ ম্যাচ নয় ওয়ানডে সিরিজেই না খেলাতে। ফলে আজও বাংলাদেশ একাদশে দেখা যেতে পারে তিন পেসার। কিছুক্ষণের মধ্যেই নিশ্চিত হওয়া যাবে সেটি, টসের জন্য এরই মধ্যে পিচের পাশে এসেছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক তামিম ইকবাল, ম্যাচ রেফারি ডেভিড বুন, আয়ারল্যান্ড অধিনায়ক অ্যান্ডি বলবার্নি।
আবারও টসে জিতেছেন আয়ারল্যান্ড অধিনায়ক অ্যান্ডি বলবার্নি। আবারও ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। ফলে টানা দ্বিতীয় ম্যাচে আগে ব্যাটিং করবে বাংলাদেশ।
এ মুহূর্তে মূল উইকেটের পাশে বোলিং অনুশীলন করছেন মোস্তাফিজুর রহমান, শরীফুল ইসলাম, তাসকিন আহমেদরা। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে অবশ্য দলে নেই মোস্তাফিজ। তাঁর জায়গায় খেলানো হচ্ছে হাসান মাহমুদকে। আগেই যেমন বলা হয়েছে—এ ম্যাচেও নেই মেহেদী হাসান মিরাজ। প্রথম ম্যাচের একাদশ থেকে বাংলাদেশ এনেছে একটিই পরিবর্তন।
বাংলাদেশ একাদশ
তামিম ইকবাল (অধিনায়ক), লিটন দাস, নাজমুল হোসেন, মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসান, তৌহিদ হৃদয়, ইয়াসির আলী, তাসকিন আহমেদ, হাসান মাহমুদ, ইবাদত হোসেন ও নাসুম আহমেদ।
টস হেরে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশ শুরুটা করেছে সতর্ক পদক্ষেপে। প্রথম চার এসেছে পঞ্চম ওভারের তৃতীয় বলে, মার্ক অ্যাডাইরের বলে তামিমের ব্যাটে।
৫ ওভার শেষে বাংলাদেশের রান বিনা উইকেটে ১৪। তামিম ১৪ বলে ৭ রান, লিটন ১৬ বলে ৬।
লেগ স্পিনার গ্যারেথ ডিলানির জায়গায় খেলানো হচ্ছে ২০ বছর বয়সী বাঁহাতি স্পিনার ম্যাথু হামফ্রিসকে। অভিষেক হচ্ছে তাঁর।
আয়ারল্যান্ড একাদশ
অ্যান্ড্রু বলবার্নি (অধিনায়ক), মার্ক এডেয়ার, কার্টিস ক্যাম্ফার, জর্জ ডকরেল, স্টিফেন ডোহেনি, গ্রাহাম হিউম, ম্যাথু হামফ্রিস, অ্যান্ড্রু ম্যাকব্রাইন, পল স্টার্লিং, হ্যারি টেক্টর, লরকান টাকার।
প্রথম ২২ বলে লিটন দাসের রান ছিল ৬। আগের ম্যাচে ৪ উইকেট নেওয়া গ্রাহাম হিউমের ওপর এরপর চড়াও হলেন লিটন। ডাউন দা গ্রাউন্ডে গিয়ে লং অফের ওপর দিয়ে ছক্কার পর মিডউইকেট দিয়ে মেরেছেন চার। হিউমের ওভারে এসেছে ১২ রান, ৮ ওভার শেষে বাংলাদেশ ৩০/০।
এ ইনিংস শুরুর আগে তামিম ইকবালের প্রয়োজন ছিল ১৪ রান। নবম ওভারে মার্ক এডেয়ারের বলে ডাবলস নিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১৫ হাজার রান পূর্ণ করলেন তামিম। ৩৮৩তম ম্যাচ ও ৪৪৪তম ইনিংসে এ মাইলফলক পূর্ণ হলো তাঁর। জন্মদিনে এ কীর্তি গড়লেন তিনি।
যদিও সব রান বাংলাদেশের হয়ে আসেনি তাঁর, বিশ্ব একাদশের হয়ে পাকিস্তান ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৪টি টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ অধিনায়ক করেন ৫৭ রান। বাংলাদেশের আর কোনো ব্যাটসম্যানের ১৪ হাজার রানই নেই। ১৩ হাজারের ওপর আছে দুজনের—সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিম।
স্কয়ার লেগে খেলেছিলেন লিটন দাস। রান নেবেন কি না, সেটি নিশ্চিত ছিলেন না লিটন বা তামিমের কেউই। একটু দেরি করে দৌড়ানো শুরু করেন দুজন, তবে বিপজ্জনক প্রান্তে ছিলেন তামিম। মার্ক এডেয়ারের থ্রো সরাসরি ভাঙে স্ট্রাইক প্রান্তের স্টাম্প। দুই ওভারে টানা দুই চার মেরে ছন্দে আসার ইঙ্গিত দেওয়া তামিম হলেন রানআউট। ইংল্যান্ড সিরিজে তিন ম্যাচেই মোটামুটি শুরুর পরও ইনিংস বড় করতে পারেননি, আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে ফিরেছিলেন আগেভাগেই। আরেকবার মোটামুটি শুরু করলেও ইনিংস বড় করা হলো না বাংলাদেশ অধিনায়কের। প্রথম পাওয়ারপ্লের শেষ বলে গিয়ে প্রথম উইকেট হারাল বাংলাদেশ, ওপেনিং জুটি ভাঙল ৪২ রানে।
১২তম ওভারে দলীয় ৫০ রান পূর্ণ হয়েছে বাংলাদেশের, ১৩তম ওভার শেষে ৫৭/১।
ম্যাথু হামফ্রিস ও অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইনের করা শেষ ২ ওভারে এসেছে ২৪ রান। হামফ্রিসকে চার-ছক্কা মেরেছেন লিটন, ম্যাকব্রাইনকে ছক্কা মেরেছেন নাজমুল। বাংলাদেশ পেরিয়ে গেছে ১০০, ২০ ওভার শেষে ১০২/১। লিটন ও নাজমুলের জুটি এর আগেই পেরিয়েছে ৫০ রান।
২১তম ওভারের প্রথম বলে হামফ্রিসকে শর্ট লেংথে পেয়ে ওয়াইড লং অফ দিয়ে ছক্কা মেরে ফিফটি পূর্ণ করে ফেলেছেন লিটন। মাইলফলকে যেতে তাঁর লেগেছে ৫৪ বল। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে লিটনের এটি অষ্টম ফিফটি।
নবম বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান হিসেবে ওয়ানডেতে ২ হাজার রান পূর্ণ করলেন লিটন।
তামিম ইকবাল রানআউট হয়ে ফিরেছিলেন দশম ওভারে, বাংলাদেশের রান ছিল ৪২। লিটন ও নাজমুলের জুটি এবার পেরিয়ে গেল ১০০। এবং আলগাভাবে আউট হলেন লিটন! কার্টিস ক্যাম্ফারের শর্ট লেংথের বলে ঘুরিয়ে খেলতে গিয়ে শর্ট মিডউইকেটে সহজ ক্যাচ দিয়েছেন লিটন। অতি-আত্মবিশ্বাসের মাশুল দিলেন লিটন। সেঞ্চুরিকে বেশ নাগালের মধ্যেই মনে হচ্ছিল, সেটিই ছুড়ে এলেন বাংলাদেশ ওপেনার। অবশেষে কাঙ্খিত উইকেটের দেখা পেল আয়ারল্যান্ড।
বাংলাদেশে ২৬ ওভারে ১৪৩/২।
লিটন পরে গতি বাড়িয়েছিলেন, নাজমুল অবশ্য এমন গতিতে খেলছেন শুরু থেকেই। ৫৯ বলে ফিফটিও পেয়ে বাংলাদেশের তিন নম্বর। বাংলাদেশ পেরিয়ে গেছে ১৫০, ২৮ ওভারে ১৫২/২।
পাওয়ারপ্লেতে আমরা কিছু উইকেট নিয়েছিলাম, মাঝের ওভারে তারা ভালো জুটি গড়েছিল। ফলে সফল ডেথ ওভারের জন্য একটা ভিতও পেয়েছিল। আমরা সেটি বিবেচনায় আনছি, আগামীকাল প্রতিপক্ষের দারুণ কিছু খেলোয়াড়কে চাপে ফেলতে আমাদের দুই-একটি উদ্ভাবনী উপায় বের করতে হবে উইকেট নিতে গেলে।দ্বিতীয় ম্যাচের আগের দিন আয়ারল্যান্ড কোচ আইনরিখ ম্যালান
আজ পাওয়ারপ্লেতে মাত্র একটি উইকেট নিতে পেরেছে আয়ারল্যান্ড, সেটিও এসেছিল তামিম ইকবালের রানআউটে। এরপর লিটনকে ফিরিয়ে বড় জুটি ভাঙতে পারলেও আবারও ভুগছে আয়ারল্যান্ড। এবার সাকিব ও নাজমুলের জুটি এগোচ্ছে, এরই মধ্যে তাতে উঠেছে ৩৬ রান। ৩১ ওভারে ২ উইকেটে হারিয়ে ১৭৯ রান তুলেছে বাংলাদেশ, আরেকটি বড় স্কোরের ভিত গড়ে উঠছে তাই।
আয়ারল্যান্ড হয়তো তেমন চাপ তৈরি করতে পারেনি, তবে সাকিব নিজের ধৈর্য রাখতে পারলেন না। গ্রাহাম হিউমকে যেভাবে টেনে খেলতে গেলেন, বলের লেংথ সে শটের পক্ষে ছিল না। ফল—খাড়া ওপরে উঠল ক্যাচ। শর্ট থার্ডম্যানে ভুল করেননি হ্যারি টেক্টর। ৩৯ রানেই থামল নাজমুলের সঙ্গে সাকিবের জুটি। ৩২তম ওভারের শেষ বলে তৃতীয় উইকেট হারাল বাংলাদেশ, রান ১৮২।
লিটনের সেঞ্চুরি নাগালে ছিল, ছুড়ে এসেছিলেন উইকেট। একই কাজ করলেন নাজমুলও। গ্রাহাম হিউমের ক্রস সিমে করা ডাউন দা লেগের ডেলিভারিতে ব্যাট চালিয়ে কট বিহাইন্ড হয়েছেন এ বাঁহাতি, ৭৭ বলে ৭৩ রান করে আউট তিনি। ক্যারিয়ারের তৃতীয় ফিফটিকে তাই সেঞ্চুরিতে পরিণত করতে পারলেন না নাজমুল। ৮ রানের মধ্যে সাকিব ও নাজমুল নেই।
৮ রানের মধ্যে সাকিব ও নাজমুল ফেরার পর রানের গতি কমে এসেছে বাংলাদেশের। ৩৬তম ওভারে ২০০ পেরিয়েছে তারা।
সাকিব ও নাজমুল দ্রুত ফিরলেও বাংলাদেশকে এগিয়ে নিচ্ছেন মুশফিকুর রহিম ও তাওহিদ হৃদয়। দুজনের জুটিতে এরই মধ্যে উঠেছে ৫১ রান, বাংলাদেশ ইনিংসে যেটি দ্বিতীয় ফিফটি জুটি। শেষ ৪ ওভারে ৩৯ রান তুলে শেষ পাওয়ারপ্লেতে ঢুকছে বাংলাদেশ, ৪০ ওভারে এখন ৪ উইকেটে ২৪১ রান স্বাগতিকদের।
কাট করে চার। ফুলটসে ড্রাইভ করে কাভার দিয়ে চার। কাট করে ছক্কা। সিলেটে ঝড় তুলছেন মুশফিকুর রহিম। মার্ক এডেয়ারের ওপর চড়াও হয়েছেন, ওই ছক্কায় ৩৩ বলে ফিফটি পূর্ণ করে ফেলেছেন। আগের ম্যাচে ঝোড়ো ব্যাটিং করলেও ফিফটি পাননি, আজ সে আক্ষেপ মিটল তাঁর। মুশফিক আবারও বাংলাদেশকে এগিয়ে নিচ্ছেন বড় সংগ্রহের দিকে, ৪৩ ওভার শেষেই স্বাগতিকদের স্কোর ২৭৮ রান।
৪০ ওভার শেষেও বাংলাদেশের স্কোর ছিল ৪ উইকেটে ২৪১ রান। পরের ৫ ওভারে এলো ৬৬ রান। মাত্র ৬৩ বলেই ১০০ রানের জুটি হয়ে গেছে মুশফিক ও হৃদয়ের। সিলেটে বৃষ্টির দেখা না পাওয়া গেলেও মুশফিক তুলেছেন ঝড়, সঙ্গে আছেন হৃদয়।
প্রথম বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান হিসেবে অভিষেকে সেঞ্চুরি মিস করেছিলেন ৮ রানের জন্য। এবার প্রথম বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান হিসেবে প্রথম দুই ম্যাচেই ফিফটি মিস করলেন ১ রানের জন্য! তাওহিদ হৃদয়! মার্ক এডেয়ারের সিম-আপ ডেলিভারিতে ব্যাট চালিয়েছিলেন, তবে যতটা ভেবেছিলেন ততটা ওঠেনি বল। কট বিহাইন্ডের সিদ্ধান্ত রিভিউ করলেও হৃদয় নিজেও জানতেন, আউটই হয়েছেন তিনি। ফিফটি না পেলেও মুশফিকের সঙ্গে ৭৮ বলে ১২৮ রানের দুর্দান্ত এক জুটির অংশ থাকলেন হৃদয়।
আগের ম্যাচেই নিজেদের সর্বোচ্চ স্কোরের রেকর্ড গড়েছিল বাংলাদেশ। ঠিক পরের ম্যাচেই ভাঙল সেটি। ১ ওভার বাকি থাকতে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৩৩৯/৫, ওয়ানডেতে এখন এটিই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ।
শেষ ওভারে প্রথমবারের মতো যখন স্ট্রাইক প্রান মুশফিক, ৫৬ বলে তাঁর রান ৯১। সে বলে ডাবলসের পর গ্রাহাম হিউমকে রিভার্স স্কুপে চার মেরে সেঞ্চুরিকে এনেছিলেন এক শটের দূরত্বে। পরের বলে ওয়াইড লং অনে খেলে আবার ডাবলসে মুশফিক চলে যান ৯৯ রানে। শেষ বলে মিডউইকেটে খেলে সিঙ্গেল নিয়ে মুশফিক মেতেছেন উল্লাসে, যে উল্লাস রেকর্ডগড়া সেঞ্চুরির। ৬০ বলেই সেঞ্চুরি পেলেন মুশফিক, বাংলাদেশের হয়ে যেটি এখন দ্রুততম। মুশফিক ভাঙলেন সাকিব আল হাসানের রেকর্ড, ২০০৯ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ছুঁয়েছিলেন ৬৩ বলে। মুশফিকের আগের দ্রুততম সেঞ্চুরি ছিল ৬৯ বলে, ২০১৫ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে।
৫০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ তুলেছে ৩৪৯ রান।
প্রথম ম্যাচে নেমেই আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করেছিলেন মুশফিকুর রহিম। তবে থেমেছিলেন ফিফটির আগেই। এবারও নেমে একটু সময় নিয়েছিলেন, প্রথম ১১ বলে তুলেছিলেন ১০ রান। তবে মুশফিক ঝড় তুলেছেন এরপর। সাকিব ও নাজমুল ৮ বলের মধ্যে ফিরলেও বড় সংগ্রহের পথে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার মূল কারিগর তিনিই। তাওহিদ হৃদয়ের সঙ্গে মুশফিকের জুটিত ৭৮ বলেই ওঠে ১২৮ রান। লেংথ বা জায়গা—মুশফিক যা-ই পেয়েছেন, কাজে লাগিয়েছেন দারুণভাবে। যখন আইরিশ বোলাররা একটু আঁটসাঁট বোলিং করতে পেরেছেন, মুশফিক বের করে এনেছেন স্কুপ। ড্রাইভ, ইনসাই-আউটে শট তো ছিলই। ১৪টি চারের সঙ্গে মুশফিক মেরেছেন ২টি ছক্কা।
গতকাল দিনভর বৃষ্টি হলেও আজ সেটি ছিল না। অবশেষে সিলেটে নামল বৃষ্টি। বাংলাদেশ ইনিংসের শেষের পর উইকেট ঢেকে দেওয়া হয়েছে কাভারে। যদিও বৃষ্টির তোপ খুব একটা বেশি নয়।
এ মুহূর্তে অবশ্য নেমেছে ঝুম বৃষ্টি।
সন্ধ্যা ৬-২৮ মিনিটের মধ্যে খেলা শুরু না হলে কাটা যাবে ওভার, ফলে এখন সেটিই হচ্ছে। ম্যাচ রাত ১১টা পর্যন্ত চলতে পারে, সেক্ষেত্রে ন্যূনতম ২০ ওভার খেলা হতে গেলে ম্যাচ শুরু হতে হবে প্রায় ৯-৪০ মিনিটের দিকে। এ মুহূর্তে বৃষ্টির তোপ বেড়েছে সিলেটে, আপাতত আশার খবর নেই কোনো।
বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের আজ যেন মাইলফলক ছোঁয়ার দিন!
আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে আজ দ্বিতীয় ওয়ানডেতে আগে ব্যাট করতে নেমে সবার আগে মাইলফলকের দেখা পান তামিম ইকবাল। ব্যক্তিগত ১৪ রানে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১৫ হাজার রানের মাইলফলকের দেখা পান তামিম। এরপর লিটন তাঁর ৭০ রানের ইনিংসে দেখা পান ওয়ানডেতে যৌথভাবে বাংলাদেশের হয়ে দ্রুততম ২ হাজার রানের মাইলফলকের। এরপর মুশফিকুর রহিম।
অফিশিয়াল কাট-অফ টাইম ৯-৩৩ মিনিট, মানে এ সময়ের মধ্যে শুরু হতে হবে খেলা। ওয়ানডে ম্যাচে ফল আনতে ন্যূনতম ২০ ওভার খেলা হতে হয়। ডিএলএস পদ্ধতিতে ২০ ওভারে আইরিশদের লক্ষ্য দাঁড়াবে ১৮৫ রান। এখনো অবশ্য বৃষ্টি থামেনি, তোপও আছে প্রায় আগের মতোই। দর্শকেরা এখনো অপেক্ষায়।
মুশফিকুর রহিম আজ ছয় নম্বরে নেমেছিলেন ৩৪তম ওভারে, ওই ওভারের দ্বিতীয় বলে নাজমুল হোসেন আউট হওয়ার পর। ছয় বা এর পরে নেমে মুশফিকের আগে বাংলাদেশের হয়ে সেঞ্চুরি করেছেন আরও পাঁচ জন—অলক কাপালি, নাসির হোসেন, মাহমুদউল্লাহ, সাব্বির রহমান ও মেহেদী হাসান মিরাজ। তবে ইনিংসে মুশফিকের মতো এত কম ওভার বাকি থাকতে ব্যাটিংয়ে নেমে এর আগে সেঞ্চুরি করেননি কেউ। স্বাভাবিকভাবেই বাংলাদেশের দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ডও অমনই বলে। মুশফিকের আগে ওভারের হিসেবে সবচেয়ে পরে নেমেছিলেন অলক কাপালি। ২০০৮ সালে এশিয়া কাপে ভারতের বিপক্ষে অলক খেলেছিলেন ৯৬ বলে ১১৫ রানের ইনিংস, ২৪তম ওভারে নেমেছিলেন তিনি। বাংলাদেশ ৬ উইকেটে সেবার ২৮৩ রান তুললেও হেরেছিল ৭ উইকেটে।
যদিও এ মুহূর্তে চলছে ওয়ানডে সিরিজ, কিন্তু বৃষ্টি-বিরতিতে খেলতে পারেন এই কুইজ।
ভালো খবর! সিলেটে কমে এসেছে বৃষ্টি! মাঠে গ্রাউন্ডসম্যানদের আনাগোণা দেখা যাচ্ছে আপাতত, তবে কভার সরানো হয়নি এখনো। পিচ ও আউটফিল্ডের বেশ খানিকটা জায়গা কাভারে ঢাকা থাকলেও মূল চ্যালেঞ্জ হবে আউটফিল্ড খেলার উপযুক্ত করা।
এখনো পড়ছে বৃষ্টি। কিছুক্ষণ আগে একটু কমে আসার পর গ্রাউন্ডসম্যানরা মাঠে নেমেছিলেন, তবে খানিক বাদেই ফিরে গেছেন তাঁরা। কাভারও সরেনি তাই। কাট-অফ টাইমের বাকি এক ঘণ্টার একটু বেশি।