সিলেটের উইকেট যতই রানপ্রসবা হোক না কেন, ২০৭ রানের লক্ষ্য টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের জন্য কঠিনই। কঠিন পথটা বাংলাদেশ পার হতে পারেনি। তবে চোখে চোখ রেখে যে লড়াই করেছে, সেটা মাত্র ৩ রানের হারের ব্যবধানেই স্পষ্ট। তাই সিরিজের প্রথম ম্যাচে হারলেও এই হারের মধ্যে ইতিবাচক দিক খুঁজে নিতে পারেন ক্রিকেটাররা। সিরিজের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের নায়ক জাকের আলীও এমনটাই মনে করেন।
গতকাল জাকেরের ব্যাট থেকে এসেছে ৩৪ বলে ৬৮ রান। তাঁর এই ৬ ছক্কার ইনিংসই বাংলাদেশকে শেষ ওভার পর্যন্ত ম্যাচে রাখে। তবে এমন খেলেও তিনি দলকে জেতাতে পারেননি।
আমার চেহারা দেখে কিন্তু বুঝতে পারছেন আমি কী রকম আছি। হার সব সময়ই বেদনার। বিপিএলের ফাইনাল হেরে এসেছি। রাতে ঘুম হয়নি। দেশের হয়ে জিততে পারলে আরেকটু ভালো লাগত।জাকের আলী, বাংলাদেশ ব্যাটসম্যান
তাই জাকেরের কণ্ঠে গতকাল সংবাদ সম্মেলনে কিছুটা আক্ষেপের সুর ছিল। সঙ্গে শোনা গেছে ঘুরে দাঁড়ানোর বার্তাও, ‘আমার চেহারা দেখে কিন্তু বুঝতে পারছেন আমি কী রকম আছি। হার সব সময়ই বেদনার। বিপিএলের ফাইনাল হেরে এসেছি। রাতে ঘুম হয়নি। দেশের হয়ে জিততে পারলে আরেকটু ভালো লাগত। আমি ভেঙে পড়ব না। কীভাবে জেতা যায় পরের ম্যাচ। এই ম্যাচে আমাদের পাওয়ার অনেক কিছু আছে। খাতা কলম নিয়ে নোট করতে বসলে দল হিসেবে অনেক প্রাপ্তি আছে।’
জাকেরের আগে গতকাল দুর্দান্ত খেলছিলেন প্রায় দেড় বছরের বেশি সময় পর দলে ফেরা মাহমুদউল্লাহ। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ফেরার ম্যাচে ৩১ বলে ৫৪ করেছেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যান। দুজনে গড়েন ২৯ বলে ৪৭ রানের জুটি। এর চেয়ে বড় জুটি জাকের মেহেদী হাসানের সঙ্গে গড়েছেন। তবে ৬৮ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর এই জুটিই বাংলাদেশকে ম্যাচে ধরে রাখে। জাকেরের দাবি, মাহমুদউল্লাহ ক্রিজে থাকার সময়েই জয়ের স্বপ্ন দেখা শুরু করেছিলেন তিনি, ‘যখন ব্যাটিংয়ে যাই, ক্রিজে রিয়াদ ভাই (মাহমুদউল্লাহ) ছিলেন। তিনি স্বাভাবিক ব্যাটিং করতে বলেছেন। ওরকমই চেষ্টা করেছি যেরকম আমি সচরাচর খেলি। বাড়তি কোনো পরিকল্পনা ছিল না। রিয়াদ ভাই ঝুঁকি নিয়ে কিছু বাউন্ডারি বের করলে আমার কাজ সহজ হয়ে যায়।
জাকের এরপর ব্যাখ্যা করেন ব্যাটিং পরিকল্পনা, ‘দুজনেরই এ রকম পরিকল্পনা ছিল। রিয়াদ ভাই সুযোগ নিচ্ছিলেন, তখন আমারও পরিকল্পনা ছিল এক ওভারে কীভাবে ১০-১২ রান বের করা যায়। রিয়াদ ভাই থাকলেও আমি আমার ভূমিকাটা এ রকমই রাখতাম। উনি চলে যাওয়ার পর আমি গিয়ার পরিবর্তন করিনি।’
বল হাতে গতকাল বাংলাদেশের বোলাররা ভালো করতে পারেননি। বিশেষ করে ডেথ ওভারে। কাল মোস্তাফিজুর রহমানের করা শেষ ওভার থেকে রান এসেছে ২৪। শেষ চার ওভারে শ্রীলঙ্কা তোলে ৬৪ রান। শেষদিকে লঙ্কান ব্যাটসম্যানদের রানের চাকা একটু টেনে ধরতে পারলেই হয়তো সিরিজে এগিয়ে যেতে পারত বাংলাদেশ।
সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি আগামীকাল। সিরিজে ফেরার আত্মবিশ্বাস নিতে বাংলাদেশকে বেশি দূরে যেতে হচ্ছে না। প্রথম ম্যাচে হারলেও ইতিবাচক অনেক কিছুরই নেওয়ার আছে। অবশ্য সেটা শুধুই ব্যাটিংয়ে। বোলারদের ভাবতে হবে নতুন করেই।