গ্লেন ফিলিপসও যেন বিশ্বাস করতে পারছিলেন না—এমন ফুলটসেও উইকেট পাওয়া যায়!
নিজেকে দুর্ভাগা ভাবতেই পারেন নাজমুল হোসেন। প্রথমবার সাদা পোশাকে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। সুযোগ পেয়েছিলেন বড় একটা ইনিংস খেলার। শুরুটাও আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে দুর্দান্ত করেছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত উইকেট দিলেন ফিলিপসের করা এক ফুলটস ডেলিভারিতে। টেস্ট ক্রিকেটে যেটি ফিলিপসের প্রথম উইকেট।
নাজমুলের উইকেট হারানোর আগে আউট হয়েছেন ওপেনার জাকির হাসান। ২ উইকেট হারালেও প্রথম সেশনটা বাংলাদেশেরই বলতে হবে। এই সেশনে ২৭ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ তুলেছে ১০৪ রান।
দুই দলের একাদশ আর সিলেটের উইকেট দেখেই ধারণা করা যাচ্ছিল, এই টেস্টে ব্যাটসম্যানদের মূল লড়াইটা হতে যাচ্ছে স্পিনারদের বিপক্ষে। তিন স্পিনার ও এক পেসার নিয়ে মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ। নিউজিল্যান্ড দলেও তিন স্পিনার, সঙ্গে দুই পেসার।
দলে তিন স্পিনার থাকলেও নতুন বলে টিম সাউদি পেসারদের ওপরই ভরসা রেখেছেন। সাউদি নিজে বোলিং করার পাশাপাশি বল তুলে দিয়েছেন আরেক পেসার কাইল জেমিসনের হাতে। দুজনে শুরুটাও ভালোই করেছিলেন। কয়েকবারই বাংলাদেশের দুই ওপেনারকে বিপদে ফেলেছিলেন, বিশেষ করে জাকির হাসানকে।
সিলেটের উইকেটে অবশ্য বেশিক্ষণ স্পিনারদের আক্রমণের বাইরে রাখেননি সাউদি। সপ্তম ওভারেই বল তুলে দেন স্পিনার এজাজ প্যাটেলের হাতে। ওপেনার জাকির শুরু থেকেই বেশ অস্বস্তির মধ্যে ছিলেন। দিনের দ্বিতীয় ওভারেই জেমিসনের মিডল স্টাম্পের ওপর করা বল অন সাইডে খেলার চেষ্টা করলে পায়ে লাগে জাকিরের। ব্যাট ঘেঁষে প্যাডে লাগায় নিউজিল্যান্ড রিভিউ নিলেও বেঁচে যান জাকির।
বাঁহাতি এই ওপেনারের ইনিংসের শেষ হয় প্যাটেলের দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে। অফ স্টাম্পে পিচ করা ডেলিভারি পেছনের পায়ে গিয়ে কাট করতে চেয়েছিলেন জাকির। কিন্তু বড় টার্ন করে ভেতরে ঢোকার কারণে তিনি শট খেলার জায়গা পাননি। ১২ রান করে জাকির বিদায় নিলে ভাঙে ৩৯ রানের উদ্বোধনী জুটি।
৩ নম্বরে নেমে আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করতে থাকেন নাজমুল। যার শুরুটা হয় প্যাটেলের বিপক্ষে লং অনের ওপর ছক্কা দিয়ে। এক বল পর আবারও ডাউন দ্য উইকেটে গিয়ে শট খেলেন নাজমুল। এক্সট্রা কভার দিয়ে মারেন চার। বাঁহাতি স্পিনার প্যাটেলকে এই সেশনে থিতু হতে দিতে চাননি নাজমুল।
১৯তম ওভারে প্যাটেলের ঝুলিয়ে দেওয়া ডেলিভারিতে সামনে এগিয়ে গিয়ে ছক্কা মারেন নাজমুল। এক বল পর খেলেন রিভার্স সুইপ, পান বাউন্ডারি। স্লগ সুইপেও প্যাটেলের বলে ছক্কা মারেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। মাহমুদুলকে নিয়ে গড়েন ৫১ রানের জুটি। তবে শেষ পর্যন্ত তাঁর ইনিংসের ‘অপমৃত্যু’ ঘটে ফিলিপসের ফুলটস আর কেইন উইলিয়ামসনের ক্যাচে। আউট হওয়ার আগে ২ চার ও ৩ ছক্কায় নাজমুল করেন ৩৫ বলে ৩৭ রান। নাজমুলের বিদায়ে ক্রিজে আসেন মুমিনুল হক।
অন্য প্রান্তে নিজের মতো ব্যাটিং করতে থাকেন আরেক ওপেনার মাহমুদুল। আক্রমণ ও রক্ষণের মিশেলে ব্যাটিং করতে থাকা মাহমুদুল অপরাজিত আছেন ৭৮ বলে ৭ চারে ৪২ রান করে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
১ম দিনের ১ম সেশন শেষে
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস
২৭ ওভারে ১০৪/২
(মাহমুদুল ৪২*, নাজমুল ৩৭, জাকির ১২, মুমিনুল ৩*; ফিলিপস ১/১২, এজাজ ১/৩৭)