৫-৪-২-৪—নিজের প্রথম ৫ ওভার শেষে জশ হ্যাজলউডের বোলিং ফিগার ছিল এমন। এক ওভার আগে ফিরলে যা আরও দুর্দান্ত। ৪ ওভারের ৪টিই মেডেন, উইকেট ৩টি।
ট্রাভিস হেডের শতকের পর দ্বিতীয় ইনিংসে হ্যাজলউডের এমন বিধ্বংসী বোলিংয়ে অ্যাডিলেড টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষেই জয়ের কাছাকাছি অস্ট্রেলিয়া। ৯৫ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নামা ওয়েস্ট ইন্ডিজ দ্বিতীয় দিন শেষ করেছে ৬ উইকেট ৭৩ রানে। ক্যারিবীয়রা এখনো ২২ রানে, হাতে ৪ উইকেট।
প্রথম দিনের শেষটুকুর মতো দ্বিতীয় দিনের শুরুটাও ভালোই করেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তবে শেষ পর্যন্ত দিনটা হাসিমুখে শেষ করতে পারেনি তাঁর। এক সেশনেই হারিয়েছে স্বীকৃত ব্যাটসম্যানদের। শেষ বেলায় নাথান লায়নের বলে জাস্টিন গ্রেভস আউট হওয়ার পর দ্বিতীয় দিনের খেলা বন্ধ ঘোষণা করা হয়। নয়তো খেলা হতে পারত আরও কিছুক্ষণ।
দ্বিতীয় ইনিংসে ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুই ওপেনারকেই ফিরিয়েছেন হ্যাজলউড। কোনো রান না করেই হ্যাজলউডের বলে অ্যালেক্স ক্যারির হাতে ক্যাচ দেন তেজনারায়ণ চন্দরপল। অধিনায়ক ব্রাফেট করেন ১ রান, তিনি ক্যাচ দেন শর্ট লেগে দাঁড়ানো হেডের হাতে। এরপর অ্যালিক অ্যাথানেজ ও কাভেম হজকেও ফিরিয়েছেন হ্যাজলউড। প্রথম ইনিংসেও তিনি ৪ উইকেট নিয়েছেন। প্রথম ইনিংসে ফিফটি করা কার্ক ম্যাকেঞ্জি এই ইনিংসে ২৬ রান করে গ্রিনের বলে আউট হয়েছেন।
গতকাল ২ উইকেটে ৫৯ রান নিয়ে আজ দ্বিতীয় দিনের খেলা শুরু করেছিল অস্ট্রেলিয়া। দিনের দ্বিতীয় ওভারেই আজ অস্ট্রেলিয়া হারায় গ্রিনকে। এরপর ক্রিজে আসেন ট্রাভিস হেড। অস্ট্রেলিয়াকে লিড এনে দেওয়ার কাজটি করেছেন এই বাঁহাতিই। তুলে নিয়েছেন ক্যারিয়ারের সপ্তম শতক। খেলেছেন ১৩৪ বলে ১১৯ রানের ইনিংস।
গ্রিনের বিদায়ের পর উসমান খাজা ব্যক্তিগত ৪৫ রান করে আউট হন। কেমার রোচের শিকার হওয়ার আগে মিচেল মার্শ করেন ৫ রান। ৪৮ ওভারে ৫ উইকেটে ১৪৪ রান নিয়ে মধ্যাহ্নভোজের বিরতিতে যায় অস্ট্রেলিয়া। তখন ক্রিজে ছিলেন হেড ও অ্যালেক্স ক্যারি। এই দুজনের ৩৯ রানের জুটি ভাঙে গ্রেভসের বলে ১৫ রানে ক্যারি আউট হলে।
ষষ্ঠ ব্যাটসম্যান হিসেবে যখন অ্যালেক্স ক্যারি আউট হন, তখনো অস্ট্রেলিয়া ওয়েস্ট ইন্ডিজের চেয়ে ২০ রানে পিছিয়ে ছিল। সেখান থেকে স্টার্ক ও প্যাট কামিন্সকে সঙ্গে নিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যান হেড।
স্টার্কের সঙ্গে ৫৪ রানের জুটি গড়ার পর কামিন্সের সঙ্গে যোগ করেন ৩৩ রান। গত বছর টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে শতকের পর টেস্ট এটি হেডের প্রথম শতক। রোচ ও অভিষিক্ত গ্রেভস ২টি করে উইকেট নিয়েছেন। দলীয় ২৫৫ রানে আলজারি জোসেফের বলে ছক্কা মারতে গিয়ে স্কয়ার লেগে ক্যাচ দেন হেড। শেষ দিকে লায়নের ২৪ বলে অস্ট্রেলিয়া প্রথম ইনিংসে তাদের সংগ্রহ ২৮৩ রানে নিয়ে যায়। অস্ট্রেলিয়া লিড পায় ৯৫ রানের।
গতকাল টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম বলে স্টিভ স্মিথকে আউট করা শামার জোসেফ মারনাস লাবুশেনকেও আউট করেছিলেন। আজ দিনের শুরুতে ফিরিয়েছেন গ্রিনকে। এরপর মিচেল স্টার্ক ও নাথান লায়নকে। তাতেই দশম ক্যারিবীয় ক্রিকেটার হিসেবে অভিষেক টেস্টে নিলেন পাঁচ উইকেট। অভিষেক টেস্টে প্রথম বলে উইকেট ও ৫ উইকেট নেওয়া দ্বিতীয় বোলার জোসেফ। অন্যজন লায়ন, যিনিও আছেন এই টেস্টে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১ম ইনিংস : ৬২.১ ওভারে ১৮৮ ( ব্রাফেট ১৩, চন্দরপল ৬, ম্যাকেঞ্জি ৫০, অ্যাথানেজ ১৩, হজ ১২, গ্রেভস ৫, জশুয়া ৬, আলজারি জোসেফ ১৪, মোতি ১,রোচ ১৭, শামার জোসেফ ৩৬) স্টার্ক ১/৩৭, হ্যাজলউড ৪/৪৪, কামিন্স ৪/৪১, লায়ন ১/৩৬, মার্শ ০/৫, গ্রিন ০/১২)
অস্ট্রেলিয়া ১ম ইনিংস : ৮১.১ ওভারে ২৮৩ ( স্মিথ ১২, খাজা ৪৫, লাবুশেন ১০, গ্রিন ১৪, হেড ১১৯, মার্শ ৫, ক্যারি ১৫, স্টার্ক ১০, কামিন্স ১২, লায়ন ২৪, হ্যাজলউড ০* ; রোচ ২/৪৮, আলজারি ১/৫৫, জোসেফ ৫/৯৪, মোতি ০/৪২ গ্রেভস ২/৩৬, )
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২য় ইনিংস : (ব্রাফেট ১, চন্দরপল ০, ম্যাকেঞ্জি ২৫, অ্যাথানেজ ০, হজ ১৩, গ্রেভস ২৪, জশুয়া ১৭* ; স্টার্ক ০/১৬, হ্যাজলউড ৪/১৮, কামিন্স ০/২৫, গ্রিন ১/৯ লায়ন ১/৪)