শেষ দিকে আসা–যাওয়ায় ব্যস্ত ছিলেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা
শেষ দিকে আসা–যাওয়ায় ব্যস্ত ছিলেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা

১৩ রানে শেষ ৫ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশের ২৭৪

কী সুযোগটাই না হাতাছাড়া করল বাংলাদেশ দল! চেমসফোর্ডে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের শেষ ম্যাচে টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশ পাওয়ার প্লেতে ১ উইকেট হারিয়ে ৬২ রান করে।

এমন শুরুর পর ৩০০ ছাড়ানো স্কোরের প্রত্যাশাই করবে যেকোনো দল। কিন্তু সেটি হয়নি। ১৩ রানে শেষ ৫ উইকেট  হারিয়ে বাংলাদেশ দল শেষ পর্যন্ত ৪৮.৫ ওভারে ২৭৪ রান করেছে। অধিনায়ক তামিমের ব্যাট থেকে এসেছে সর্বোচ্চ ৬৯ রান।

আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে উদ্বোধনী জুটি থেকে বড় রান পাচ্ছে না বাংলাদেশ দল। আজও তামিমের সঙ্গে উদ্বোধনে নামা রনি তালুকদার আইরিশ বোলারদের সুইং সামলাতে পারছিলেন না।

মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী (বাঁয়ে) ও রনি তালুকদারের ওয়ানডে অভিষেক হয়েছে আজ

মার্ক অ্যাডাইর ও জস লিটলের বিপক্ষে নিজে ওয়ানডে অভিষেকে মেরে খেলার পথ বেছে নেন রনি। বেশ কয়েকবার ব্যাট চালিয়ে তিনি একটি বাউন্ডারি মেরেছেন। সেই বাউন্ডারিতে পাওয়া ৪ রানেই থেমেছে রনির ইনিংস। অ্যাডাইরের আউট সুইং মেশানো বলে ব্যাট চালিয়ে কট বিহাইন্ড হন তিনি।

জীবন পেয়েছেন আরেক ওপেনার তামিমও। লিটলের আউট সুইংয়ে ব্যাট ছুঁইয়ে সেকেন্ড স্লিপে থাকা অ্যান্ড্রু বলবার্নির হাতে সহজ ক্যাচ তোলেন তামিম। কিন্তু সেটি ধরতে পারেননি আইরিশ অধিনায়ক। তামিম সেই সুযোগ কাজে লাগিয়েছেন ফিফটি করে। ৯ ইনিংস পর ওয়ানডে ক্রিকেটে ফিফটির দেখা পেলেন তামিম।

তবে তামিমের কাজটা সহজ করেছেন তাঁর সতীর্থরা। তিনে নামা নাজমুল হোসেন দারুণ ছন্দে আছেন। আগের ম্যাচে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরির ছন্দটা আজও ধরে রাখলেন। ক্রিজে এসেই দ্রুত রান তুলছিলেন স্বাচ্ছন্দ্যে।

মনে হচ্ছিল, আরও একটি বড় ইনিংস খেলবেন নাজমুল। তাঁর আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ের সুবাদে পাওয়ার প্লের ১০ ওভারে ৬২ রান পেয়ে যায় বাংলাদেশ। কিন্তু ১১তম ওভারেই ভুলটা করে বসেন নাজমুল। ক্রেগ ইয়াংয়ের ভালো লেংথ থেকে বেরিয়ে যাওয়া বলে ব্যাট ছুঁইয়ে আউট হন এই বাঁহাতি। আউট হওয়ার আগে ৩২ বলে ৩৫ রান করেন তিনি।

চার বছর পর চারে নামা লিটন দাসও দ্রুত রান তোলেন। কিন্তু তিনিও নাজমুলের মতো থিতু হয়ে আউট হন। ৩৯ বল খেলে ৩৫ রান করে অ্যান্ড্রু ম্যাকব্রেইনের শর্ট বল মিড অফের ওপর দিয়ে মারতে গিয়ে ক্যাচ আউট হন তিনি। দলের রান তখন ২৩.৩ ওভারে ৩ উইকেটে ১৩৭ রান। ইনিংস বড় হয়নি তাওহিদ হৃদয়েরও। ১৬ বল খেলে ১৩ রান করে জর্জ ডকরেলের বলে বোল্ড হন হৃদয়।

শুরুতে ‘জীবন’ পেয়ে ফিফটি করেছেন অধিনায়ক তামিম

বাংলাদেশ তখন তামিমের ব্যাটে তাকিয়ে। কিন্তু ৬১ বল খেলে ফিফটি করা তামিমের ইনিংস প্রত্যাশিত গতিতে এগোয়নি। টাইমিং নিয়ে ইনিংসের শুরু থেকেই তাঁকে যুদ্ধ করতে হয়েছে। ফিফটি করেও ছন্দটা ধরতে পারেননি।

শেষ পর্যন্ত ডকরেলের বাঁহাতি স্পিনে মারতে গিয়ে শর্ট থার্ড ম্যানে ক্যাচ তোলেন তামিম। আউট হওয়ার আগে ৮২ বল খেলে ৬৯ রান করেন বাংলাদেশ অধিনায়ক, ৬টি বাউন্ডারি ছিল তামিমের ৮৪ স্ট্রাইক রেটের ইনিংসে।

আরেকটি বড় ইনিংসের আভাস দিলেও পারেননি নাজমুল

এরপর বাংলাদেশের রানটাকে ২৫০–এর ওপারে নিয়েছেন মুশফিকুর রহিম ও মেহেদী হাসান মিরাজ। দুজন মিলে ৭২ বলে ৭৫ রান যোগ করেন, যা বাংলাদেশ ইনিংসের সর্বোচ্চ জুটি। দুজনই ইনিংসের শেষ পাঁচ ওভারে মেরে খেলার পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছিলেন। কিন্তু ৪৬তম ওভারে থামে ৫৪ বলে ৪৫ রান করা মুশফিকের ইনিংস।

পরের ওভারে ৩৯ বলে ৩৭ রান করে আউট হন মিরাজ। তখন বাংলাদেশের রান ৭ উইকেটে ২৬৫। সেখান থেকে বেশি দূর এগোয়নি বাংলাদেশের ইনিংস। চোখের পলকে শেষ তিন ব্যাটসম্যানের উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ অলআউট হয় ২৭৪ রানে। ১৩ রানের ব্যবধানে শেষ ৫ উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ। অভিজ্ঞ পেসার অ্যাডাইর ৮.৫ ওভারে ৪০ রান দিয়ে নেন সর্বোচ্চ ৪ উইকেট।