একই মাঠে টানা দুটি টেস্ট আগেও দেখা গেছে। আগস্ট-সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশের পাকিস্তান সফরেই টানা দুই টেস্ট হয়েছে রাওয়ালপিন্ডিতে। সেটা করাচিতে সংস্কারকাজ চলছিল বলে। ২০২০-২১-এর দিকে মহামারির কারণেও কিছু সিরিজে একই মাঠে টানা দুই টেস্ট হয়েছে। কিন্তু পরপর দুটি টেস্ট কি একই পিচে হয়েছে কখনো?
উপাত্ত-সংগ্রাহকদের কাছ তো নয়ই, কারও স্মৃতি থেকেও এ ধরনের ঘটনা পাওয়া যাচ্ছে না। এবার ‘নজিরবিহীন’ সেই কাণ্ডই ঘটাতে চলেছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। মঙ্গলবার শুরু হতে যাওয়া পাকিস্তান-ইংল্যান্ড সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে খেলা হবে মুলতানের সেই পিচে, যেটিতে হয়েছে সিরিজের প্রথম টেস্টও। এ ক্ষেত্রে পাকিস্তানের সুবিধা নেওয়াই যে মূল লক্ষ্য, তা সহজেই অনুমেয়।
তবে পিছিয়ে থাকছে না সফরকারী ইংল্যান্ডও। পিচ পুনর্ব্যবহারের সুযোগ নিয়ে মুলতানের দ্বিতীয় টেস্টে নামিয়ে দেওয়া হতে পারে বেন স্টোকসকে, যিনি চোটের কারণে দুই মাসের বেশি সময় ধরে খেলার বাইরে।
সাধারণত সব আন্তর্জাতিক মানের মাঠেই একাধিক পিচ বা উইকেট থাকে। টানা দুটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচের ক্ষেত্রেও পিচ বদলে দেওয়া হয়। দেখা যায়, বোলার-ব্যাটসম্যানদের পায়ে পিষ্ট হয়ে পিচে ভাঙন ধরে, বোলিংয়ের জন্য উইকেট ধীর হয়ে ওঠে। ব্যাটিংয়ে হয়ে পড়ে তুলনামূলক কঠিন।
পিসিবি মুলতানে একই পিচে দ্বিতীয় টেস্টও আয়োজন করতে চায় এ কারণেই। সিরিজের প্রথম টেস্টে বোলারদের জন্য তেমন কিছুই ছিল না উইকেটে। প্রথম তিন দিনে দুই দল মিলে পড়েছিল মাত্র ১৩ উইকেট। পাকিস্তান তাদের প্রথম ইনিংসে ৫৫৬ রান তোলার পর ইংল্যান্ড ৭ উইকেটে ৮২৩ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করে।
মুলতানের প্রথম টেস্টের উইকেটকে ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক মাইকেল আথারটন ‘জঘন্য’ বলে মন্তব্য করেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকে মুলতান পিচকে পিচঢালা মহাসড়কের সঙ্গেও তুলনা করেন। পিসিবি এখন পরের টেস্টে বোলারদের জন্য কিছুটা হলেও সুযোগ রাখতে চায়। আর সে চিন্তা থেকেই একই পিচে পরের ম্যাচ খেলানোর সিদ্ধান্ত।
রোববার এরই মধ্যে ব্যবহার হওয়া পিচটি নিয়ে কাজ করতে দেখা যায় মাঠকর্মীদের। পিসিবির একটি সূত্র এএফপিকে নিশ্চিত করে, একই পিচে হবে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট। ইংল্যান্ড অবশ্য পাকিস্তানের এমন সিদ্ধান্তে অবাক হচ্ছে না। বরং এর মধ্য থেকে সুযোগ খোঁজারই চেষ্টা তাদের।
আগস্টের দ্বিতীয় সপ্তাহে দ্য হানড্রেডে খেলার সময় হ্যামস্ট্রিংয়ের চোটে পড়েন স্টোকস। এরপর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তিন টেস্ট এবং পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম টেস্টে খেলতে পারেননি। এখন মুলতানে দ্বিতীয় টেস্টে খেলানো হলে তৃতীয় পেসার হিসেবে খুব একটা চাপ নিতে হবে না বলে ধারণা বোলিং পরামর্শক জিমি অ্যান্ডারসনের।
সাবেক এই ক্রিকেটার স্টোকসকে খেলানোরই ইঙ্গিত দিয়েছেন, ‘আমরা যখন স্টোকসের ওয়ার্কলোড এবং বোলিং নিয়ে কথা বলছি, তখন এই ব্যাপারটা আমাদের পক্ষেও যেতে পারে। বিশেষ করে (একই পিচে খেলা হওয়ায়) স্পিনারদের কাজই বেশি থাকবে।’