পাকিস্তানের বিপক্ষে পার্থ টেস্টে ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে কালো আর্মব্যান্ড পরার কারণে অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটসম্যানকে প্লেয়িং কন্ডিশন ভঙ্গের দায়ে অভিযুক্ত করেছে আইসিসি। ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা এখন পর্যন্ত এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু না জানালেও অস্ট্রেলিয়ান সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, খাজার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ গঠন করেছে আইসিসি, যার ন্যূনতম শাস্তি ভর্ৎসনা।
অস্ট্রেলিয়ান সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, খাজা কালো আর্মব্যান্ড পরার ক্ষেত্রে আইসিসির অনুমতি নেননি। সেটিকেই প্লেয়িং কন্ডিশন ভঙ্গ বলে জানিয়েছে আইসিসি। সংস্থাটির একজন মুখপাত্র বলেছেন, ‘উসমান খাজা আইসিসির প্লেয়িং কন্ডিশনের পোশাক ও সরঞ্জাম নিয়মের “এফ” ধারা ভঙ্গ করেছেন বলে অভিযোগ এসেছে।’
এরপর ওই মুখপাত্র যোগ করেন, ‘পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম টেস্টে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া ও আইসিসির পূর্বানুমতি ছাড়াই উসমান ব্যক্তিগত বার্তা প্রদর্শন করেছেন। এটি “অন্যান্য নিয়ম ভঙ্গের” আওতায় পড়ে, প্রথম অপরাধে যেটির শাস্তি ভর্ৎসনা।’
আইসিসির পোশাক ও সরঞ্জাম নিয়মে বলা আছে, ‘খেলোয়াড় এবং দলীয় কর্মকর্তাদের পোশাক, সরঞ্জাম বা এমন কিছুতে ব্যক্তিগত বার্তা প্রদর্শনের ক্ষেত্রে খেলোয়াড় ও বোর্ড এবং আইসিসির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের পূর্বানুমোদন লাগবে। এমন বার্তা নির্দিষ্ট কোনো পোশাক বা অন্যান্য জিনিসের মাধ্যমে (যেমন আর্মব্যান্ড) অথবা শব্দ, প্রতীক, চিত্রলেখা, ছবি বা এমন যেকোনো কিছুর মাধ্যমে প্রদর্শন বা প্রদান করা হোক না কেন। রাজনৈতিক, ধর্মীয় অথবা বর্ণ–সম্পর্কিত কর্মকাণ্ডের কোনো বার্তা প্রদানের ক্ষেত্রে অনুমতি দেওয়া হবে না।’
অবশ্য এ ধারা ভঙ্গের সর্বোচ্চ শাস্তি পেলেও খাজার দ্বিতীয় টেস্টে খেলা নিয়ে কোনো সমস্যা হবে না, এমসিজিতে যেটি শুরু হবে ২৬ ডিসেম্বর। তবে আইসিসির এমন অবস্থানের পর সে ম্যাচে খাজা কোন পথ অবলম্বন করেন, সেটিই দেখার বিষয় এখন।
পার্থ টেস্টের আগে অনুশীলনে নিজের জুতায় ‘স্বাধীনতা একটি মানবাধিকার’ এবং ‘প্রতিটি জীবনের মূল্য সমান’—এমন স্লোগান লিখেছিলেন খাজা। তবে সেটি পরে টেস্ট খেলতে নামলে আইসিসির শাস্তির মুখোমুখি হবেন, এমন জানার পর কালো আর্মব্যান্ড পরে নেমেছিলেন খাজা। এর আগে আইসিসির সঙ্গে লড়াই করার ঘোষণাও দেন তিনি।
এক ভিডিও বার্তায় ৩৭ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান বলেন, ‘আইসিসি আমাকে বলেছে, তাদের নিয়ম অনুযায়ী আমি আমার জুতা পরতে পারব না। কারণ, এখানে রাজনৈতিক বিবৃতি আছে। আমি এমনটা বিশ্বাস করি না, এটা মানবিক আবেদন। তাদের মতামত ও সিদ্ধান্তকে আমি সম্মান করি, কিন্তু আমি এর বিরুদ্ধে লড়াই করব।’
এরপর সম্প্রচারক চ্যানেলে খাজা মনে করিয়ে দেন, ‘আমি মনে করি, অতীতে এত কিছু ঘটেছে যে এখন তা নজির হয়ে গেছে। আমি ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটারের প্রতি পূর্ণ সমর্থনের কথা বলছি। এর আগে অনেকেই জুতায় বার্তা লিখেছে। অন্যদের বার্তায় ধর্মীয় ব্যাপার থাকলেও এবং যেটা আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী কৌশলগতভাবে অনুমোদন দেওয়া হয় না, তারপরও কিন্তু আইসিসি এ বিষয়ে কিছু বলেনি। তারা আমার ব্যাপারে কঠোর হওয়ায় হতাশ হয়েছি। কিন্তু তারা সবার প্রতিই এত কঠোর হয় না। এটাই সম্ভবত সবচেয়ে হতাশার ব্যাপার।’
পার্থে প্রথম ইনিংসে ৪১ রানের পর দ্বিতীয় ইনিংসে ৯০ রান করেন বাঁহাতি এই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান।