এখনকার দিনে ব্যাটিংবান্ধব উইকেট আর ছোট বাউন্ডারির মাঠে ৫০ ওভারে ৬ উইকেটে ২৯৪ রান আহামরি কিছু নয়; তবে একেবারে কমও নয়। সেন্ট কিটসে কাল প্রথম ওয়ানডেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে এই রান তুলে তাই বাংলাদেশ কিছুটা হলেও স্বস্তিতে ছিল। কিন্তু পরে দেখা গেল তিন শর কম রান যথেষ্ট নয়। বাংলাদেশের দেওয়া লক্ষ্য ওয়েস্ট ইন্ডিজ ছুঁয়ে ফেলেছে ৫ উইকেট আর ১৪ হাতে রেখে দিয়েই।
কারও কারও প্রশ্ন, বাংলাদেশ দল কি আরও বড় সংগ্রহ গড়ার সুযোগ হারিয়েছে? অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ চারে নেমে ৭৪ রান করতে খেলেছেন ১০১ বল, মাহমুদউল্লাহর ৫০ রান করতে লেগেছে ৪৪ বল। বিপরীতে মিরাজের মতোই চারে নামা ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক শাই হোপ ৮৬ রান করেছেন ৮৮ বলে। শেরফান রাদারফোর্ড তো ৮০ বলে ১১৩ রানের ইনিংস খেলে ম্যাচটা ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রায় হাতের মুঠোয় এনে দিয়ে আউট হয়েছেন।
লক্ষ্য তাড়া করতে নামার চাপ মাথায় নিয়ে ক্যারিবীয়রা যদি ভালো স্ট্রাইক রেটে রান করতে পারেন, বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানরা আগে ব্যাট করেও কেন পারেনি? হারটাও কি সেখানেই লেখা হয়ে গেছে?
ম্যাচ শেষে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মিরাজ। অষ্টম ওভারে লিটন দাসের আউটের পর ব্যাটিংয়ে নামা এই ডানহাতি ক্রিজে ছিলেন ৩৮তম ওভার পর্যন্ত। এর মধ্যে তৃতীয় উইকেটে তানজিদ হাসানের সঙ্গে ৯৭ বলে ৭৯, চতুর্থ উইকেটে আফিফ হোসেনের সঙ্গে ৬২ বলে ৫৪ এবং পঞ্চম উইকেটে মাহমুদউল্লাহর ২২ বলে ১৯ রানের জুটি গড়ে ওঠে তাঁর।
৭১ বলে ফিফটি ছোঁয়া মিরাজ পরের ২৪ রান করতে খেলেন আরও ৩০ বল। তবে সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগালেও সেটি পারেননি, ‘সেঞ্চুরির কথা আমি ভাবিনি। দরকার ছিল দলকে ভালো একটা অবস্থায় নিয়ে যাওয়া। আমি চেষ্টা করেছি ৪০ ওভারের মধ্যে দলের রান একটা ভালো অবস্থায় নিয়ে যাওয়া। মনে হয়েছে এই উইকেটে ৩০০ রানের বেশি করতে পারলে ভালো হবে। যে কারণে রানের জন্যই খেলেছি।’
উইকেট ব্যাটিংয়ের জন্য ভালো ছিল, মিরাজই বলেছেন। তবু প্রত্যাশিত মাত্রায় রান তুলতে না পারার একটা ব্যাখ্যা আছে তাঁর, ‘একটা ভালো জুটির পর তানজিদ আউট হয়ে গেল। এরপর আফিফের সঙ্গে ভালো জুটি গড়ে ওঠার পর (৩৩.৬ ওভারে ১৭৯/৪) সেও আউট হয়ে গেল। ওই অবস্থায় আমি ঝুঁকি নিতে পারি না। কারণ আরেকজন সেট ব্যাটসম্যান আউট হয়ে গেলে নতুন ব্যাটসম্যানের ওপর চাপ পড়বে। এরপর যখন রিয়াদ ভাই (মাহমুদউল্লাহ) সেট হল, তখন আমি চালিয়ে খেলার চেষ্টা করেছি।’
শেষ দিকে জাকের আলী ৪০ বলে ৪৮ রান না করলে বাংলাদেশ দলের রান আরও কম হতে পারত বলেও মনে করেন মিরাজ।
নাজমুল হোসেনের অনুপস্থিতিতে দলকে নেতৃত্ব দেওয়া মিরাজ অবশ্য এখনো সিরিজ জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী, ‘এখনো সুযোগ আছে। ম্যাচ তো মাত্র একটা গেল। পরের ম্যাচ জিততে পারলে আমরা সিরিজও জিততে পারি।’
সেন্ট কিটসে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের দ্বিতীয়টি আগামীকাল।