৭ রানের জন্য সেঞ্চুরি করতে পারেননি সাদমান
৭ রানের জন্য সেঞ্চুরি করতে পারেননি সাদমান

রাওয়ালপিন্ডি টেস্ট

সাদমানের ইনিংসটি মুমিনুলের দেখা অন্যতম সেরা

টেস্ট দলে সাদমান ইসলাম সব সময়ই নিয়মিত। কিন্তু একাদশে নন। অধিনায়ক নাজমুল হোসেন, জাকির হাসান, মুমিনুল হকের মতো বাঁহাতিদের ভিড়ে আরেকজন বাঁহাতি ওপেনারের একাদশে জায়গা করে নেওয়া একটু কঠিনই। ডানহাতি মাহমুদুল হাসানই বরং ওপেনিংয়ের জন্য প্রথম পছন্দ।

বাংলাদেশ ‘এ’ দলের হয়ে টানা তিন ফিফটি করা মাহমুদুল ফর্মেও ছিলেন। কিন্তু কুঁচকির চোটে মাহমুদুল ছিটকে পড়ায় সেই বাঁহাতি সাদমানের জায়গা হয় রাওয়ালপিন্ডি টেস্টের একাদশে, প্রায় আড়াই বছর পর। তিনি হতাশ করেননি।

শাহিন আফ্রিদি, নাসিম শাহ, খুররাম শেহজাদ ও মোহাম্মদ আলীকে নিয়ে সাজানো পাকিস্তানের বোলিং আক্রমণের বিপক্ষে ৯৩ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেছেন। টেস্ট ক্রিকেটে সাদমানের তৃতীয় ফিফটির সৌজন্যে বাংলাদেশ পেয়ে যায় লড়াই করার মঞ্চ। যা কাজে লাগিয়ে ফিফটি করেছেন মুমিনুল হক (৫০), মুশফিকুর রহিম (৫৫*) ও লিটন দাস (৫২*)। এই চার ব্যাটসম্যানের ফিফটিতে তৃতীয় দিন শেষে ৯২ ওভারে ৫ উইকেটে ৩১৬ রান তুলেছে বাংলাদেশ। তবে প্রথম ইনিংসে পাকিস্তানের চেয়ে এখনো ১৩২ রান পিছিয়ে নাজমুল হোসেনের দল।

দিন শেষে অভিজ্ঞ মুমিনুলের মুখেও শোনা গেল সাদমানের ইনিংসের প্রশংসা। সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘সাদমানের ৯৩ রানের ইনিংসটি আমার দেখা অন্যতম সেরা ইনিংস। বিদেশের মাটিতে চারজন পেসার, চারজনই দারুণ, তাদের বিপক্ষে যেভাবে খেলেছে, সেটা অসাধারণ। জাকির বড় করতে পারেনি। কিন্তু যতক্ষণ ক্রিজে ছিল, দলের জন্য খেলে গেছে। শেষের দিকে লিটন যেভাবে আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করেছে, খেলাটা মোটামুটি আমাদের হাতে চলে এসেছে।’

ফিফটি পেয়েছেন মুমিনুলও(ডানে)

সাদমান ও জাকিরের ৩২ রানের উদ্বোধনী জুটির কথাটাও আলাদা করে উল্লেখ করেছেন মুমিনুল। জুটি বড় না হলেও ক্রিজে টিকে ছিলেন ১৭তম ওভার পর্যন্ত। যা ছিল ইনিংসের শুরুতে সময়ের দাবি, ‘জাকির আর সাদমান ১২ ওভার খেলেছে, একটা উইকেটও পড়েনি। ওই সময় যেমন খেলা দরকার, তেমনই খেলেছে। ওই সময়টা ছন্দটা ধরিয়ে দিয়েছে।’ পরে মুমিনুলদের পুরো ব্যাটিং পরিকল্পনায়ও ছিল লম্বা সময় ব্যাটিং করার ছাপ, ‘আমরা স্বাভাবিক ব্যাটিং করার চেষ্টা করেছি। আমরা ৫০০ কিংবা ৬০০—এমন বড় কোনো লক্ষ্য নিয়ে ব্যাটিং করিনি। আমরা ঘণ্টা ধরে, সেশন ধরে এগিয়েছি।’

মুমিনুল নিজের ভুলটাও স্বীকার করেছেন। ৭৬ বলে ৫০ রানে আউট হওয়া এই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান নিজের কাছে আরও বড় ইনিংস প্রত্যাশা করেছিলেন, ‘আমি যেহেতু অনেক টেস্ট খেলেছি, আমার ৫০ রান করে আউট হওয়া ঠিক হয়নি।’

আরেক অভিজ্ঞ মুশফিক অবশ্য মুমিনুলের শূন্যতা অনুভূত হতে দেননি। ক্রিজে এসে তিনি সাদমানের সঙ্গে জুটি গড়েছেন। সাকিব দ্রুত আউট হলেও লিটনকে নিয়ে অপরাজিত ৯৮ রানের জুটি গড়ে দিন শেষ করেন। যেখানে মুশফিক দেখেশুনে খেলে লিটনকে আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ের সুযোগ করে দিয়েছেন।

মুমিনুলের মুখে মুশফিকেরও প্রশংসা, ‘মুশফিক ভাই সম্পূর্ণ ভিন্ন ধরনের। আমাদের খেলার ধরনের সঙ্গে তাঁর খেলার ধরনের অনেক পার্থক্য। প্রতিটা বল এত সতর্কতা ও যত্ন নিয়ে খেলেন, বোঝা যায় যে তিনি এতগুলো টেস্ট খেলেছেন। মুশফিক ভাই আসার পর কিন্তু সাদমানও একটু দ্রুত রান তুলেছে। উনি যে দায়িত্ব পালন করেন, সেটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ।’

কাল সকালের সেশনেও সেই মুশফিকে আস্থা রাখতে চান মুমিনুল। লিটনকে নিয়ে মুশফিক প্রথম সেশনের কঠিন সময়টা পার করতে পারলে রাওয়ালপিন্ডি টেস্টের পুরো নিয়ন্ত্রণ চলে আসতে পারে বাংলাদেশের হাতে। মুমিনুলের আশাও সেটাই, ‘আমরা যদি আগামীকাল সকালের সেশনে কোনো উইকেট না হারাই, জুটি গড়তে পারি, তাহলে আমাদের জন্য ভালো হবে।’