বাংলাদেশের হয়ে সব টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলেছেন সাকিব আল হাসান। কিন্তু এর আগে বিশ্বকাপের দ্বিতীয় রাউন্ডে কখনো বাংলাদেশের জয়ের সাক্ষী হতে পারেননি। নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে আজকের জয়ে দীর্ঘদিনের অপেক্ষার অবসান হলো। সে জন্যই কি না, ম্যাচ শেষে সবচেয়ে বেশ নির্ভার মনে হচ্ছিল বাংলাদেশ অধিনায়ককে।
এই জয় যে কতটা দরকার ছিল বাংলাদেশ দলের জন্য, সেটিও বোঝা গেল সাকিবের কথায়। ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের সঞ্চালক নিউজিল্যান্ডের সাবেক ক্রিকেটার সাইমন ডুল প্রসঙ্গটা তুলতেই সাকিব বললেন, ‘হ্যাঁ, একটি জয় পাওয়া খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ২০০৭ থেকে আমি সব বিশ্বকাপ খেলেছি। কিন্তু জয় পাইনি। এটি আমাদের মাথায় ছিল।’
আমরা জানতাম এই উইকেটে আমাদের বোলিং আক্রমণের জন্য ১৫০ থেকে ১৫৫ রান যথেষ্ট। সেদিক থেকে আমরা ১০ রান কম করেছি। তবে আমাদের পেসাররা যেভাবে বোলিং করেছে, দুর্দান্ত।সাকিব আল হাসান
দলের ওপর চাপও যে কম ছিল না, সেটিও বোঝা গেল সাকিবের কথায়, ‘এই কারণে ব্যাট হাতে আমরা কিছুটা নার্ভাস ছিলাম। আমাদের শুরুটা ভালো ছিল। কিন্তু মাঝের ওভারে উইকেট হারিয়েছি, যা আমাদের কোনো সাহায্য করছিল না।’
সাকিবের অবশ্য নিজ দলের বোলিং আক্রমণের ওপর আস্থা ছিল। রান তাড়ায় নেদারল্যান্ডসকে ওভারপ্রতি ৭ থেকে ৮ রানের লক্ষ্য দিতে পারলেই বোলিং দিয়ে ম্যাচ জেতার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী ছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক, ‘আমরা জানতাম এই উইকেটে আমাদের বোলিং আক্রমণের জন্য ১৫০ থেকে ১৫৫ রান যথেষ্ট। সেদিক থেকে আমরা ১০ রান কম করেছি। তবে আমাদের পেসাররা যেভাবে বোলিং করেছে, দুর্দান্ত।’
পেসারদের প্রসঙ্গ আসতেই তাসকিন আহমেদের কথা আলাদা করে বললেন সাকিব, ‘আমরা এখন ফাস্ট বোলিংয়ের গুরুত্ব বুঝতে পারছি। আমি মনে করি, এখন সব সংস্করণেই আমরা দারুণ একটা ফাস্ট বোলিং গ্রুপ পেয়েছি। ফাস্ট বোলাররা সত্যিই অনেক ভালো করছে। আমরা কয়েকজন তরুণ পেসার পেয়েছি। হাসান মাহমুদ তাদের মধ্যে একজন। তাসকিন দু–তিন বছর ধরে আমাদের সেরা বোলার। সব মিলিয়ে আমাদের খুব ভালো ফাস্ট বোলিং আক্রমণ অনেক উন্নতি করেছে।’
বাংলাদেশের ফিল্ডিংও ছিল প্রশংসনীয়। শর্ট কাভারে হাসান মাহমুদের বলে ইয়াসির আলীর একটি সুযোগ হাতছাড়া করা ছাড়া সব ক্যাচই লুফে নিয়েছে বাংলাদেশ। সঙ্গে ম্যাচ ঘুরিয়ে দেওয়ার মতো দুটি রান আউটও ছিল। অথচ হোবার্টের বেলিরিভ ওভাল বাংলাদেশের জন্য অপরিচিত এক মাঠ। এই মাঠে ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা সাকিব আল হাসান ছাড়া আর কারও নেই। বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচের আগে এই মাঠে অনুশীলনও করেনি বাংলাদেশ দল।
সে জন্যই হয়তো দলের গ্রাউন্ড ফিল্ডিংয়ের প্রশংসা করলেন সাকিব, ‘আমাদের মনে হয়েছে, এই একটি জায়গায় (ক্যাচিং-ফিল্ডিং) আমরা বিশ্বের সেরা দলগুলোর একটি হতে পারি। দলের বেশির ভাগ খেলোয়াড় তরুণ। তারা চটপটে ও ক্ষিপ্র। আমাদের সেই বিশ্বাস ছিল যে ফিল্ডিংয়ে আমরা হয়তো ৫ থেকে ১০ রান বাঁচাতে পারব, যা বড় পার্থক্য গড়ে দেবে।’