শেষ ওভারে ২৬ রান করে ম্যাচ জয়। কঠিন, কিন্তু অসম্ভব যে নয়, সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আজ সেটাই আরেকবার দেখিয়ে দিলেন রংপুর রাইডার্সের অধিনায়ক নুরুল হাসান। ফরচুন বরিশালের পেসার কাইল মায়ার্সের শেষ ওভারে তিন ছক্কা আর তিন চারে ৩০ রান নিয়ে ম্যান অব দ্য ম্যাচ নুরুল রংপুরকে টানা জয়ের রথে রাখলেন ৩ উইকেটে ম্যাচ জিতে।
কিন্তু নুরুল কি ভেবেছিলেন সত্যিই শেষ ওভারে ২৫ রানের বাধা ডিঙিয়ে দলকে জেতাতে পারবেন? বিপিএলের ইতিহাসে শেষ ওভারে সবচেয়ে বেশি রান করে জিতবেন ম্যাচ? ম্যাচ শেষের সংবাদ সম্মেলনে এই প্রশ্নের উত্তরে রংপুর অধিনায়ক বলেছেন, ‘আগের ওভারে খুশদিল দুটি ছয় মেরেছিল। ও বলছিল, এই ম্যাচ জেতা সম্ভব। রাব্বি (কামরুল ইসলাম) ভাই এসেও বলেছিলেন, তুমিই খেলো ছয়টা বল। আমারও মনে হয়েছিল, ইনশা আল্লাহ মারতে পারলে হয়ে যাবে। এরপর দেখেন প্রথম বল ছয় হলো, তখন আস্তে আস্তে বিশ্বাসটা আরও বেড়েছে যে ইনশা আল্লাহ সম্ভব।’
শেষ দিকে ঝড় তুলে ম্যাচ জেতানো নতুন কিছু নয় নুরুলের জন্য। ঘরোয়া ক্রিকেটে ঝোড়ো ব্যাটিংয়ের প্রদর্শনী অনেকবারই দেখা গেছে তাঁর ব্যাটে, এভাবে ম্যাচও জিতিয়েছেন। অ্যাডিলেডে ২০২২ টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষেও সে রকমই এক কাণ্ড প্রায় করে ফেলেছিলেন তিনি। ডিএল মেথডে ১৬ ওভারে ১৫১ রানের লক্ষ্য তাড়া করার ম্যাচে ১৪ বলে করেছিলেন অপরাজিত ২৫ রান। শেষ ওভারে জয়ের জন্য দরকার ছিল ২০ রান। নুরুলের এক ছক্কা আর এক চারে এসেছিল ১৪।
সেই স্মৃতি আজও ফিরে আসে নুরুলের মনে, ‘এই ম্যাচটা জেতার পরও মনে হচ্ছিল, সর্বশেষ টি-টোয়েন্টিতে ভারতের সঙ্গে বিশ্বকাপের ম্যাচ ছিল। এক ওভারে ২০ রানের মতো দরকার ছিল, আমি মনে হয় ১৫ বা ১৬ রান করেছিলাম। ম্যাচটা ৫ রানে হেরেছিলাম। যদি শেষ করতে পারতাম ভালো লাগত।’
আজও ম্যাচ শেষ করে আসারই পরিকল্পনা ছিল তাঁর, তাতে সফলও হয়েছেন। শেষ বলে ২ রান দরকার থাকলেও নুরুলের পরিকল্পনা ছিল বড় শটেরই, ‘শেষ বলে বড় শটের পরিকল্পনা ছিল। আমি চাচ্ছিলাম যে এক-দুই ওরকম কিছু না, যদি আমার জায়গায় বল পাই ওভার বাউন্ডারি মারব বা বাউন্ডারিই হোক। এটাই চাচ্ছিলাম।’
এটাই তাঁর সেরা ইনিংস কি না, জানতে চাইলে নুরুল হেসেও যেন একটু আক্ষেপই করলেন, ‘দেখেন, আমি যেখানে ব্যাটিং করি, সবাই ভুলে যায়, এটা নতুন কিছু নয়। অবশ্যই সবচেয়ে বড় হলো দলের জন্য অবদান রাখতে পারছি, আলহামদুলিল্লাহ। যেহেতু দলকে জেতাতে পেরেছি, তো এটা সেরা ইনিংসগুলোর একটি।’