ভারত ক্রিকেট দল
ভারত ক্রিকেট দল

ভারতে ‘ক্রিকেটের চেয়ে ক্রিকেটার বড় হয়ে ওঠে’

একজন ব্যক্তি কখনো ম্যাচ জেতায় না। কিন্তু ভারতীয় ক্রিকেটে ‘নায়ক সংস্কৃতি’ আছে। যা অন্যদের অবদান আড়াল করে একজনের কৃতিত্বকেই বেশি বেশি সামনে তুলে ধরে। ভারতে ক্রিকেটের চেয়ে ক্রিকেটারের বড় হয়ে ওঠার এই প্রবণতা বন্ধ হওয়া দরকার মনে করেন প্রাভিন কুমার।

ভারতের সাবেক এই পেসার কথাগুলো বলেছেন গৌতম গম্ভীরের এক মন্তব্যের সূত্রে। ভারতীয় ক্রিকেটে একজনকে বড় করে তোলার সংস্কৃতি বন্ধ করতে ‘ড্রেসিংরুমে দানব তৈরি’ না করতে বলেছিলেন গম্ভীর। ভারতের সংবাদমাধ্যম যেটিকে ‘গম্ভীর-ধোনি’ বিতর্ক বলে চিত্রিত করে আসছে।

গম্ভীর বহুল আলোচিত মন্তব্যটি করেছিলেন ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সাবেক ওপেনার বলেছিলেন, ‘ড্রেসিংরুমে দানব তৈরি কোরো না। একমাত্র দানব হওয়া উচিত ভারতীয় ক্রিকেট, কোনো ব্যক্তি নয়। আপনি কি মনে করেন না, এই যে নায়ক-পূজার যে ধারা, তা কি পরবর্তী তারকা তুলে আনার পথকে রুদ্ধ করবে না? এই ছায়ায় আসলে কেউ বেড়ে উঠতে পারবে না। এর আগে এটি ছিল মহেন্দ্র সিং ধোনি, এখন বিরাট কোহলি।’ নির্দিষ্ট ক্রিকেটারদের তোষণের সংস্কৃতির জন্য তিনি আঙুল তুলেছিলেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারী এবং সংবাদমাধ্যম ও সম্প্রচার প্রতিষ্ঠানের দিকে।

এমএস ধোনি ও সুরেশ রায়নার মাঝে প্রাভিন কুমার, যখন ভারতের হয়ে খেলতেন।

গম্ভীরের মন্তব্যটি উঠে এসেছে ভারতের হয়ে ৬ টেস্ট, ৬৮ ওয়ানডে ও ১০ টি-টোয়েন্টি খেলা প্রাভিনের মুখেও। আজতকের সাংবাদিক শুভংকর মিশ্রর ইউটিউব চ্যানেলের এক সাক্ষাৎকারে সাবেক এই পেসার তাঁর সাবেক সতীর্থের মন্তব্য সমর্থন করে বলেন, ‘গৌতম ভাই একদম ঠিক কথাটিই বলেছেন। ক্রিকেট রেসলিং বা অন্য কোনো একক ব্যক্তির খেলা নয়। এখানে একজন ব্যক্তি ম্যাচ জেতাতে পারে না। ২০১১ বিশ্বকাপে যুবরাজ সিং ১৫ উইকেট নিয়েছেন, রানও করেছেন, জহির খান ২১ উইকেট নিয়েছেন। ২০০৭ আর ২০১১ বিশ্বকাপে গম্ভীর রান করেছেন। ধোনিও ১১-এর ফাইনালে রান করেছে। টেস্ট, ওয়ানডে বা টি-টোয়েন্টি যেটাই হোক, দল জিততে হলে অন্তত তিনজন ব্যাটসম্যানকে রান করতে হয়, দুজন বোলারকে উইকেট নিতে হয়। কেউ একা টুর্নামেন্ট জেতাতে পারে না।’

ভারতের ২০১১ বিশ্বকাপজয়ে টুর্নামেন্ট সেরা ছিলেন যুবরাজ। ফাইনালে রান তাড়ায় টেন্ডুলকার, বীরেন্দর শেবাগরা শুরুতেই আউট হয়ে যাওয়ার পর ৯৭ রানের ইনিংস খেলেছিলেন গম্ভীর। তবে এ সব ছাপিয়ে বেশি আলোচনা হয় ধোনির ৯১ রানের অপরাজিত ইনিংসটির।

একজনকে ওপরে তুলে ধরার মাধ্যমে খেলোয়াড়েরা খেলার চেয়ে বড় হয়ে ওঠে বলে মনে করেন ২০১২ সালে সর্বশেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা প্রাভিন, ‘ভারতের ক্রিকেটে নায়ক-সংস্কৃতি সব সময়ই ছিল। আমার মনে হয় সেই আশির দশক থেকেই। এটা ভুল প্রবণতা। এতে একটা সময় ক্রিকেটাররা ক্রিকেটের চেয়ে বড় হয়ে ওঠে। যার ব্র্যান্ড সাপোর্ট বেশি, সে তত বেশি মনোযোগ পায়।’