টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদের মতে, মাহমুদউল্লাহ সম্প্রতি তাঁদের প্রত্যাশা পূর্ণ করতে পারেননি।
টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদের মতে, মাহমুদউল্লাহ সম্প্রতি তাঁদের প্রত্যাশা পূর্ণ করতে পারেননি।

বলছেন খালেদ মাহমুদ

মাহমুদউল্লাহর মতো ছেলেকে হঠাৎ ‘নো’ বলা যায় না

মুশফিকুর রহিম এরই মধ্যে টি-টোয়েন্টি থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন, তবে মাহমুদউল্লাহর দলে জায়গা নিয়ে আলোচনা চলছে এখনো। বিশ্বকাপের দল ঘোষণার আগে টেকনিক্যাল কনসালট্যান্ট শ্রীধরন শ্রীরামের অধীনে বিশেষ অনুশীলন ক্যাম্পের প্রথম দিনও তাই এল সে প্রসঙ্গ। দলের টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ বললেন, মাহমুদউল্লাহ সম্প্রতি তাঁদের প্রত্যাশা পূর্ণ করতে পারেননি। তবে তাঁর মতো একজন ক্রিকেটারকে হঠাৎ করে ‘না’ বলা যায় না, এমনও বললেন তিনি।

ব্যাট হাতে সময়টা ভালো যাচ্ছে না মাহমুদউল্লাহর


সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে একটি অর্ধশতক পেয়েছিলেন তখনকার অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। এর পর থেকেই এ সংস্করণে ছন্দে নেই তিনি। বিশ্বকাপের পর থেকে এখন পর্যন্ত ১১ ম্যাচ খেলে মাত্র ১৬.৫৪ গড় ও ১০২.৮২ স্ট্রাইক রেটে ব্যাটিং করেছেন এ ব্যাটসম্যান। এশিয়া কাপের দুই ম্যাচে ২০ পেরিয়েছেন, তবে এক ম্যাচে স্ট্রাইক রেট ছিল ৯২.৫৯, অন্যটিতে ১২২.৭২।

শ্রীধরন শ্রীরাম (মাঝে) ও খালেদ মাহমুদের অধীনে শুরু হয়েছে জাতীয় দলের অনুশীলন ক্যাম্প


এমন ফর্মে থাকা মাহমুদউল্লাহ দলে থাকবেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে আজ মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে সাংবাদিকদের মাহমুদ বলেছেন, ‘যদিও দল ঘোষণার দুই দিন বাকি আছে, তবে এখনই এর উত্তর দেওয়াটা তাড়াহুড়ো হয়ে যায়। যেহেতু এখনো (মাহমুদউল্লাহ) রিয়াদ ক্যাম্পে আছে... সাদা বলের ক্রিকেটে এখনো আমাদের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। টেস্টেও ছিল, যদিও অবসর নিয়েছে। চিন্তা করেছি, তবে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। দল চূড়ান্ত করার সময়ই এলে সিদ্ধান্ত হবে। তবে এটুকু বলি, রিয়াদ এখনো আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কথা যে এদিক-ওদিক হচ্ছে না, তা না। রিয়াদ কেন সুযোগ পাবে বা কেন সুযোগ পাবে না—এসব নিয়ে আলোচনা হওয়া ভালো। তেমনি ওর জায়গায় কেউ এলে কেন আসবে, সেটিও ভাবতে হবে।’

রিয়াদকে নিয়ে যদি হুট করে সিদ্ধান্ত নিয়ে নেই একটা…একটা ছেলে এত বছর ধরে বাংলাদেশের ক্রিকেটকে সার্ভিস দিচ্ছে। সারা জীবন কেউ থাকবে না, এটা খুবই স্বাভাবিক। তবে তাদের সার্ভিসকে আমরা সব সময় মূল্যায়ন করতে চাই।
খালেদ মাহমুদ


২০০৭ সাল থেকে এ সংস্করণে খেলে আসা মাহমুদউল্লাহ এখন পর্যন্ত খেলেছেন ১২১টি ম্যাচ, বাংলাদেশের হয়ে যেটি সর্বোচ্চ। আপাতত মাহমুদউল্লাহর অভিজ্ঞতা দল নির্বাচনে বিবেচ্য হবে না, মাহমুদ বলেছেন এমন, ‘যেহেতু এখনো এ সংস্করণে খেলে, সে আর দশটা ক্রিকেটারের মতোই। তার অভিজ্ঞতা আছে। তবে এটির ভিত্তিতে আমরা কাউকে আলাদা করছি না। রিয়াদ আমাদের জন্য যেমন গুরুত্বপূর্ণ, (ইয়াসির আলী) রাব্বির মতো একজনও আমাদের জন্য তেমনই গুরুত্বপূর্ণ। সবাই জাতীয় দলের চুক্তিবদ্ধ খেলোয়াড়।’

মাহমুদউল্লাহকে নিয়ে হুট করে সিদ্ধান্ত নিতে চায় না দল


অভিজ্ঞতা বিবেচনায় আনা হবে না, কিন্তু জাতীয় দলকে এত দিন ‘সার্ভিস’ দিয়ে আসার ব্যাপারটি আবার তাঁদের মাথায় আছে, মাহমুদ বলছেন এমন, ‘রিয়াদকে নিয়ে যদি হুট করে সিদ্ধান্ত নিয়ে নেই একটা…একটা ছেলে এত বছর ধরে বাংলাদেশের ক্রিকেটকে সার্ভিস দিচ্ছে। সারা জীবন কেউ থাকবে না, এটা খুবই স্বাভাবিক। তবে তাদের সার্ভিসকে আমরা সব সময় মূল্যায়ন করতে চাই। সাকিব (আল হাসান), মাশরাফি (বিন মুর্তজা), তামিম (ইকবাল), মাহমুদউল্লাহ (রিয়াদ), মুশফিকুর রহিমদের (মুশি) আপনারা যে নাম দিয়েছেন—পঞ্চপাণ্ডব। তাদের অবদান অস্বীকার করার উপায় নেই। মুশি হয়তো ভেবেছে টি-টোয়েন্টিকে না বলার এখনই উপযুক্ত সময়। আমি সেটিকে সম্মান করি।’

রিয়াদ ম্যাচ উইনার। এটা ভুলে গেলে হবে না। ওয়ানডেতেও ওর এমন কিছু ইনিংস আছে, যেগুলোতে ও একাই বাংলাদেশকে জিতিয়েছে। এমন একটা ছেলেকে হঠাৎ করে “নো” বলতে পারবেন না। তবে অবশ্যই ব্যক্তি থেকে দল অনেক বড়।
খালেদ মাহমুদ


যে পাঁচজনের কথা মাহমুদ বলেছেন, এরই মধ্যে তিনজন টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নিয়েছেন। সাকিব আল হাসানকে অধিনায়কত্ব দেওয়া হয়েছে, এর আগে যেটি পালন করছিলেন মাহমুদউল্লাহ। সম্প্রতি অবশ্য এ অভিজ্ঞ ক্রিকেটার টিম ম্যানেজমেন্টের প্রত্যাশা মেটাতে পারেননি, সেটি স্বীকার করেছেন মাহমুদ। তবে এরপরই তাঁর পক্ষে কথাও বলেছেন, ‘রিয়াদের এখনো খেলার আগ্রহ ও চেষ্টা আছে। তবে রিয়াদের কাছ থেকে যেটা আশা করি, সেটা পাইনি। অবশ্য ছোট ছোট ইনিংস আছে, একদম নেই তা না। ২৭ বলে ২৭ আছে, ২২ বলে কিছু রান আছে। তবে রিয়াদ ম্যাচ উইনার। এটা ভুলে গেলে হবে না। ওয়ানডেতেও ওর এমন কিছু ইনিংস আছে, যেগুলোতে ও একাই বাংলাদেশকে জিতিয়েছে। এমন একটা ছেলেকে হঠাৎ করে “নো” বলতে পারবেন না। তবে অবশ্যই ব্যক্তি থেকে দল অনেক বড়। দিনশেষে বাংলাদেশ দলের জন্য যা প্রয়োজন, আমরা সেটাই করব।’