বিশ্বকাপে আফগানিস্তানের বিপক্ষে পাকিস্তানের হারের পর ব্যাপক চাপে আছেন অধিনায়ক বাবর আজম। সাবেক ক্রিকেটারদের অনেকেই বাবরের অধিনায়কত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। সমালোচকদের সে দলে যোগ দিয়েছেন সাবেক অধিনায়ক শহীদ আফ্রিদিও।
অধিনায়কত্ব ফুলের বিছানা নয় উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, দলের মধ্যে অধিনায়কই সবকিছু। তাই অধিনায়ক উজ্জীবিত না থাকলে দলের ভালো করার কোনো সুযোগ নেই। পাশাপাশি আফগানিস্তান ম্যাচে বাবরের শরীরী ভাষার সমালোচনাও করেছেন সাবেক এই অলরাউন্ডার। নেতৃত্বের ধরন না বদলালে বাবর দলকে ম্যাচ জেতাতে পারবেন না বলেও মন্তব্য করেছেন আফ্রিদি।
সামা টিভির এক অনুষ্ঠানে পাকিস্তান দলের পারফরম্যান্স ও বাবরের অধিনায়কত্বে হতাশ আফ্রিদি বলেছেন, ‘আপনি যখন ম্যাচে মনোযোগী হবেন না, তখন এই সমস্যাগুলো (ফিল্ডিং মিস করা) দেখা দেবে। আর আপনি যখন নিজেকে লুকোনোর চেষ্টা করবেন, ইতিবাচকভাবে ভাবতে পারেন না, তখন বাউন্ডারি লাইনে দাঁড়িয়ে ভাবতে থাকেন আরে, আমরা আফগানিস্তানের কাছেই হেরে যাচ্ছি। কোনো উইকেট পড়ছে না। অনেক সময় মনে হয় আমরা অলৌকিক কিছুর অপেক্ষায় থাকি। অলৌকিক কিছু এমনিতেই হয়ে যায় না। এটা ঘটে সাহসী মানুষদের সঙ্গে, যারা জানে কীভাবে লড়াই করতে হয়।’
অধিনায়ক বাবরকে দলকে জাগিয়ে তোলার দায়িত্ব নিতে হবে মন্তব্য করে আফ্রিদি আরও বলেছেন, ‘দেখুন, একজন অধিনায়ক কিন্তু সবকিছু। যদি একজন অধিনায়ক নিজে ফিল্ডিংয়ে নিজের জান-প্রাণ দিয়ে দেন, ডাইভ মারেন, দৌড়ে গিয়ে খেলোয়াড়দের সমর্থন দেন, তখন গোটা দল ঐক্যবদ্ধ হয়ে যায়। সবাই দারুণভাবে জেগেও ওঠে। কারণ, অধিনায়ক নিজেকে উজাড় করে দিচ্ছেন আর অন্যরা সেটা করলে লজ্জা লাগবে। সে ভাববে, আরে, আমার অধিনায়ক এভাবে উজ্জীবিত হয়ে লড়ছেন, আমি কেন নিষ্ক্রিয় থাকব।’
এ সময় নিজের ও সাবেক অধিনায়ক মোহাম্মদ ইউসুফের উদাহরণও টানেন আফ্রিদি, ‘আমি বা মোহাম্মদ ইউসুফ যখন অধিনায়ক ছিলাম, আমরা যখন উজ্জীবিত থাকতাম, তখন দলও জেগে উঠত। অধিনায়ক কিছু না করলে গোটা দল কিছু করবে না। যদি ইনজি ভাই (ইনজামাম উল হক) ডাইভ মারত তবে আমাদের লজ্জা লাগত। আরে, অধিনায়ক ডাইভ মারছেন, আমরা কেন মারব না! তাই ঘুরেফিরে সব অধিনায়কের ওপরই আসবে।’
অধিনায়ক বাবর প্রতিপক্ষের ওপর যথেষ্ট চাপ তৈরি করছেন না বলেও মন্তব্য করেছেন আফ্রিদি, ‘অধিনায়কেরই দায়িত্ব বৃত্তের খেলোয়াড়দের সামনে রাখা এবং চাপ তৈরি করা। ফাস্ট বোলার বল করছে অথচ আপনার স্লিপ নেই। ১২ বলে ৪ রান দরকার আর আপনি পয়েন্ট পেছনে ঠেলে দিয়েছেন। আরে, চাপ তৈরি করো। চাপে যে রাখছ, সেটা অন্তত চোখে পড়ুক। অস্ট্রেলিয়ানরা কী করে, দুই উইকেট পড়লেই তারা এগিয়ে এসে চাপ তৈরি করে, যেমনটা তারা পাকিস্তানের বিপক্ষে করেছিল। দেখুন, অধিনায়কত্ব সম্মানের ব্যাপার। কিন্তু সেটা ফুলের বিছানাও নয়। যখন সব ঠিকঠাক হয়, তখন প্রশংসা যেমন অধিনায়ক পান, আর না হলেও তখন সব দায় অধিনায়ক ও কোচকে নিতে হয়।’
এ সময় বাবর তাঁর নেতৃত্বের ধরন না বদলালে পাকিস্তানের জয়ে ফেরা সম্ভব নয় বলেও মন্তব্য করেছেন আফ্রিদি, ‘এখনো বিশ্বকাপ শেষ হয়ে যায়নি। অস্ট্রেলিয়ার মতো পাকিস্তানও ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য বিখ্যাত। তবে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে অধিনায়কের যে শরীরী ভাষা এবং সংবাদ সম্মেলনে যে শরীরী ভাষা ছিল, তেমনটা হলে আপনি জিততে পারবেন না।’