আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টির রেকর্ড বইয়ের দিকে তাকালে কেউ হয়তো নিজেকে হঠাৎ করেই কোনো মহাসমুদ্রে হাবুডুবু খাওয়া অবস্থায় আবিষ্কার করতে পারেন! আইসিসির সহযোগী সদস্যদেশগুলোকে আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টির মর্যাদা দেওয়ার পর থেকে রেকর্ড নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করা মানুষদের যেন খেই হারানোর অবস্থা।
প্রায় প্রতিদিনই বিচিত্র সব রেকর্ড হচ্ছে। আর সেই রেকর্ডগুলোর অধিকারী দল বা খেলোয়াড়ের নামও অনেকের কাছেই অচেনা লাগা স্বাভাবিক। এমনই এক অখ্যাত নামের সঙ্গে ক্রিকেটপ্রেমীদের পরিচয় ঘটবে এ বছর আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকদের তালিকায় চোখ রাখে। সবচেয়ে বেশি রান যাঁর, কজন শুনেছে তাঁর নাম!
কেনদেল কাদোওয়াকি–ফ্লেমিং, হ্যাঁ এই ভদ্রলোকই আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টিতে এ বছর এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি রান করেছেন। ২০ ইনিংস খেলে একটি সেঞ্চুরি ও ছয়টি ফিফটিতে ৫০.৫৮ গড়ে এবং ১৫১.১৪ স্ট্রাইক রেটে ৮৬০ রান করেছেন জাপানের ২৮ বছর বয়সী ক্রিকেটার। এই রান করার পথে তিনি ৬৭টি চার ও ৪৩টি ছয় মেরেছেন।
তা কাদোওয়াকি–ফ্লেমিং আসলে কে এবং কী তাঁর ক্রিকেট ক্যারিয়ার—এমন প্রশ্ন ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে জাগতেই পারে। ক্রিকেটই অবশ্য তাঁর একমাত্র পেশা নয়। কাদোওয়াকি–ফ্লেমিংয়ের মা জাপানি, বাবা অস্ট্রেলিয়ান। ১৯৯৬ সালে জাপানেই জন্ম তাঁর, তবে ৬ বছর বয়সে মা–বাবার সঙ্গে অস্ট্রেলিয়াতে পাড়ি জমান।
কাদোওয়াকি-ফ্লেমিংয়ের ক্রিকেটের হাতেখড়ি অস্ট্রেলিয়াতেই। কুইন্সল্যান্ডের হয়ে অনূর্ধ্ব–১২, অনূর্ধ্ব-১৫ ও অনূর্ধ্ব-১৭ ক্রিকেটে খেলেছেন। ব্রিসবেন গ্রামার স্কুলের হয়ে খেলেছেন স্কুল ক্রিকেট। তবে ১৮ বছর বয়সে তিনি জাপানের ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। কাদোওয়াকি-ফ্লেমিংয়ের জাপান জাতীয় দলের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার স্বপ্ন পূরণ হয় ২০২২ সালে। ইন্দোনেশিয়ার বিপক্ষে টি–টোয়েন্টি ম্যাচ দিয়ে অভিষেক হয় তাঁর।
জাপানের হয়ে এখন পর্যন্ত ৩৫টি আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টি খেলে ৪৫.৮০ গড়ে ১৪২০ রান করেছেন। দুটি সেঞ্চুরি আর নয়টি ফিফটি আছে তাঁর। ক্রিকেট খেলা ছাড়াও তিনি একজন ফিন্যান্সিয়াল অ্যানালিস্ট হিসেবে একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। চিবা শার্কস ক্রিকেট ক্লাবের হয়ে খেলার পাশাপাশি জাপানে একটি প্লেয়ার ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিও চালান কাদোওয়াকি-ফ্লেমিং।
এ বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকায় সেরা পাঁচের চারজনই অবশ্য অখ্যাত। যেখানে কাদোওয়াকি-ফ্লেমিংয়ের পর দুই নম্বরে আছেন হংকংয়ের নিজাকাত খান (২৭ ইনিংসে ৭৮৪ রান)। তিন নম্বরে পরিচিত বাবর আজমের (২১ ইনিংসে ৭০৭) পর যুক্তরাষ্ট্রের আন্দ্রিয়েস গাউস (২২ ইনিংসে ৬৯২) ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের মুহাম্মদ ওয়াসিম (২০ ইনিংসে ৬৮৮)।