দুই টেস্ট সিরিজে ২–০ ব্যবধানে হার। তিন ম্যাচের টি–টোয়েন্টি সিরিজের প্রথমটিতে ফল হয়নি। পরের দুটি ম্যাচে হার। কিন্তু তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ধবলধোলাই করেছে বাংলাদেশ। এবারের ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে বাংলাদেশ দল আরও একবার প্রমাণ করেছে, তিন সংস্করণের মধ্যে তারা ওয়ানডে ক্রিকেটাই সবচেয়ে ভালো খেলে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ থেকে আজ দেশে ফিরে বাংলাদেশের অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজও তাই ওয়ানডে বিশ্বকাপ নিয়েই বড় স্বপ্নের কথা বললেন। পরবর্তী ওয়ানডে বিশ্বকাপ হবে আগামী বছর, ভারতে। ওই বিশ্বকাপে ভালো কিছু করার আশা মিরাজের।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর শেষে বাংলাদেশ দল দেশে ফিরছে কয়েক ভাগে ভাগ। মিরাজ, তাসকিন ও চার কর্মকর্তাসহ আজ দেশে ফিরেছেন দলের ৬ সদস্য। বাকিরা দুই ভাগে ফিরবেন আগামীকাল। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে মিরাজ বলেছেন, ‘এটা ঠিক যে, ওয়ানডেতে আমরা সাচ্ছন্দ্য বোধ করি। এই সংস্করণে সব সময়ই ভালো খেলি। ৪-৫ বছর ধরে ভালো ফলও আসছে। যেখানে সফলতা পাওয়া যায়, সেখানে অবশ্যই সবাই বেশি আত্মবিশ্বাসীও থাকে।’
ওয়ানডে ক্রিকেটে ভালো করার প্রসঙ্গ ধরেই এসেছে ২০২৩ বিশ্বকাপের কথা। মিরাজ বললেন, ‘টুর্নামেন্টটা খুব বেশি দূরে নয়। হয়তো ১ বছর ২ বা ৩ মাস বাকি আছে। আমরা যেভাবে এগোচ্ছি, ঠিক পথেই আছি। তাই আমি মনে করি, এভাবে এগোলে আমাদের জন্য বিশ্বকাপটা আরও বেশি ভালো হবে।’
বিশ্বকাপে ভালো কিছু করতে পারলে আমাদের নিজেদের জন্য যে রকম ভালো হবে, দেশের জন্যও ভালো হবে। তাই অবশ্যই বড় কিছু অর্জনের চেষ্টা করব। কিন্তু এটা তো আপনি বলতে পারেন না যে বিশ্বকাপে আমরাই চ্যাম্পিয়ন হব।মেহেদী হাসান মিরাজ, অলরাউন্ডার, বাংলাদেশ
মিরাজ বিশ্বকাপে আশা দেখছেন আরও একটা কারণেও, ‘দলে অনেক অভিজ্ঞ খেলোয়াড়ও থাকবে। তামিম ভাই, সাকিব ভাই, মুশি ভাই (মুশফিকুর রহিম), রিয়াদ ভাই (মাহমুদউল্লাহ) আছেন, তাঁরা তো অনেক অভিজ্ঞ। তারপর আমি, মোস্তাফিজ, লিটনরাও অনেক দিন ধরে খেলছি। আমাদের অনেকেরও আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার পাঁচ বছর হয়ে যাবে। তাই মোটামুটি ভালো একটা একটা অভিজ্ঞতা নিয়ে বিশ্বকাপে যাব আমরা, আশা করি ভালো খেলতে পারব।’
সব মিলিয়ে তাই বিশ্বকাপ নিয়ে বড় স্বপ্নই দেখছেন মিরাজ, ‘বিশ্বকাপে ভালো কিছু করতে পারলে আমাদের নিজেদের জন্য যে রকম ভালো হবে, দেশের জন্যও ভালো হবে। তাই অবশ্যই বড় কিছু অর্জনের চেষ্টা করব। কিন্তু এটা তো আপনি বলতে পারেন না যে বিশ্বকাপে আমরাই চ্যাম্পিয়ন হব। আমরা যেটা পারি, তা হলো চেষ্টা করতে। ভালো ক্রিকেট খেলতে পারি। কীভাবে বিশ্বকাপটা জেতা যায়, সে পথটা খুঁজে বের করতে পারি। এ ছাড়া ভাগ্যেরও ব্যাপার আছে। আমরা তো স্বপ্ন দেখি এশিয়া কাপ জিতব, বিশ্বকাপ জিতব।’
আপাতত অবশ্য বিশ্বকাপ নয়, মিরাজদের ভাবতে হচ্ছে জিম্বাবুয়ে সফর নিয়ে। আগামী মঙ্গলবারই জিম্বাবুয়ের উদ্দেশে রওনা হয়ে যাবে বাংলাদেশ দল। ওয়েস্ট ইন্ডিজ থেকে ফেরার পর সতেজ হওয়ার জন্য হাতে খুব কম সময়ই পাচ্ছেন বাংলাদেশের খেলোয়াড়েরা। জিম্বাবুয়ে সফরের আগে হাতে খুব বেশি সময় না পাওয়া নিয়ে মিরাজ বলেন, ‘আমরা পেশাদার খেলোয়াড়। আমাদের অবশ্যই খেলতে হবে এবং আমি মনে করি যে যতদিন ক্রিকেট খেলব এবং যে–ই খেলুক, পেশাদার খেলোয়াড় হিসেবে এটা মেনে নিতে হবে।’
আপাতত এই অল্প সময়টা নিজের মতো কাটাতে চান মিরাজ, ‘আমরা চার দিন সময় পেয়েছি। এরপর আমাদের জিম্বাবুয়ে সিরিজ, তারপর হয়তো আরও অনেক খেলা আছে। তাই আমরা মনে করি, দ্রুত মানসিকভাবে সতেজ হয়ে উঠতে হবে। চারটা দিন পরিবারের সঙ্গে কাটানোর চেষ্টা করব এবং প্রত্যেক খেলোয়াড়ই হয়তো পরিবারের সঙ্গে সময় কাটিয়ে মানসিকভাবে সতেজ হয়ে উঠবে।’