পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর আজম
পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর আজম

বাবরকে অধিনায়কত্ব ছাড়তে বললেন সেলিম মালিক

পাকিস্তান ম্যাচটা প্রায় জিতেই নিয়েছিল। পারল না শুধু বিরাট কোহলির জন্য! নাকি নিজেদেরও ভুল ছিল? চাপের মুহূর্তে কতটা বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়েছেন পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর আজম? প্রশ্নটা ধীরে ধীরে উঠছে।

এমসিজিতে ভারতের কাছে হারের পর বাবরের অধিনায়কত্ব নিয়ে এর আগে প্রশ্ন তুলেছেন পাকিস্তানের সাবেক অলরাউন্ডার মোহাম্মদ হাফিজ। এরপর পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক সেলিম মালিকও মুখ খুললেন। বাবর একই ভুল বারবার করছেন বলে মনে করেন সেলিম মালিক।

টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভে পরশু মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে (এমসিজি) ভারতের কাছে ৪ উইকেটে হারে পাকিস্তান। কোহলির ৫৩ বলে ৮২ রানের অপরাজিত ইনিংসে দুর্দান্ত এই জয় তুলে নেয় ভারত—স্কোরকার্ডে তাকালে এটা পরিষ্কার।

কিন্তু জয়টা এত সহজে আসেনি। পাকিস্তানি পেসারদের কাছে ইনিংসের শুরুতে ৭ ওভারের মধ্যে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে ভারত। এরপর কোহলি ও হার্দিক পান্ডিয়া পঞ্চম উইকেটে ৭৮ বলে ১১৩ রানের জুটিতে জয়ের ভিত গড়েন। পেসাররা শেষ দিকে মার খাওয়ায় শেষ ওভারটা স্পিনার মোহাম্মদ নেওয়াজকে দিয়ে করান বাবর। কিন্তু শেষ ওভারে ১৬ রানের সমীকরণ মিলিয়ে অবিশ্বাস্য জয় তুলে নেয় ভারত।

পাকিস্তানে সমালোচনা হচ্ছে বাবরের

নেওয়াজ শেষ ওভার করার আগে ১৯তম ওভারে টানা দুই ছক্কাসহ ১৫ রান দেন পাকিস্তানি পেসার হারিস রউফ। তার আগের ওভারে ১৭ রান দেন শাহিন আফ্রিদি। এই দুই পেসার বোলিংয়ের সময় দলের সিনিয়র কারও বিশেষ করে অধিনায়কের উচিত ছিল তাঁদের সঠিক পরামর্শ দেওয়া—এমনটাই মনে করেন খেলোয়াড়ী জীবনে ফিক্সিংয়ে জড়িয়ে নিষিদ্ধ হওয়া সেলিম মালিক।

পাকিস্তানের টিভি চ্যানেল ২৪ নিউজ এইচডিকে মালিক বলেছেন, ‘চাপের সময় সিনিয়র খেলোয়াড়দের ভূমিকা রাখতে হয়। অধিনায়ক যদি বুঝতে না পারে, যদি মনে হয় ভুল পথে যাচ্ছে, তখন তাকে বলতে পারে, সে ভুল করছে। এ কারণে আমি সব সময় বলি, পেসারদের পাশে সব সময় সিনিয়র কাউকে থাকতে হয়, যে তাকে এসব বলবে। এত বছর পার করেও যদি অধিনায়কত্ব করতে না পারেন তাহলে ছেড়ে দেওয়াই ভালো। একই ভুল বারবার করলে অধিনায়কত্ব না করাই ভালো। এর আগে অনেকেই অধিনায়কত্ব ছেড়েছেন।’

এর আগে মোহাম্মদ হাফিজও বাবরের অধিনায়কত্বের সমালোচনা করেন। পাকিস্তানের এক টিভি চ্যানেলে হাফিজ বলেছেন, ‘ব্যাপারটা এখন এমন হয়ে দাঁড়িয়েছে, বাবর আজমের অধিনায়কত্ব নিয়ে সমালোচনা যেন পাপের পর্যায়ে পড়ে। এ নিয়ে টানা তৃতীয় বড় ম্যাচে আমরা তার অধিনায়কত্বে খুঁত দেখলাম। কিন্তু আমরা শুনে আসছি, ৩২ বছর বয়সে আসতে আসতে সে শিখে ফেলবে। ম্যাচে ভারত যখন ৭ থেকে ১১ ওভারের মধ্যে প্রতি ওভারে ৪ রান করে নিতেও কষ্ট করছে, তখন বাবর স্পিনারদের কোটা শেষ করল না কেন?’

পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক সেলিম মালিক

স্কোরকার্ড বলছে, ভারতের ইনিংসে ৭ থেকে ১১তম ওভারে দুই স্পিনার শাদাব খান ও মোহাম্মদ নেওয়াজকে বল করিয়েছেন বাবর। ১২তম ওভারে নেওয়াজের কাছ থেকে কোহলি–পান্ডিয়া ২০ রান তুলে নেওয়ার পর পেসারদের বোলিং আনেন পাকিস্তান অধিনায়ক। তারপর একেবারে শেষ ওভারে গিয়ে নেওয়াজকে বোলিংয়ে আনেন, যখন জয়ের জন্য ১৬ রান দরকার ছিল ভারতের।

নেওয়াজের করা শেষ ওভার থেকে ১৬ রান তুলে স্মরণীয় জয় তুলে নেয় ভারত। হাফিজ সম্ভবত বোঝাতে চেয়েছেন, ভারত ইনিংসের ওই সময় যেহেতু ধুঁকছিল, তাই সে সময়ই স্পিনারদের বোলিংয়ের কোটা শেষ করে দেওয়া উচিত ছিল। তাহলে শেষ ওভারে পেসারকে আনতে পারতেন। কিন্তু এই যুক্তিও মেলে না।

কারণ, শাহিন আফ্রিদির করা ১৮তম ওভার থেকে ১৭ এবং হারিস রউফের করা ১৯তম ওভার থেকে ১৫ রান তোলেন কোহলি–পান্ডিয়া জুটি। পেসাররাও মার খাওয়ায় শেষ ওভারে নেওয়াজকে এনেছিলেন বাবর।