বিপিএলে সর্বশেষ ম্যাচে ফিফটি পেয়েছেন রিজওয়ান
বিপিএলে সর্বশেষ ম্যাচে ফিফটি পেয়েছেন রিজওয়ান

নিজের ভূমিকায় ‘বিব্রত’ হন রিজওয়ানও

টি-টোয়েন্টিতে ‘অ্যাঙ্করের’ ভূমিকা পালন মাঝেমধ্যে বিব্রতকর মনে হতেই পারে। তবে দলের প্রয়োজনের কথা মাথায় রাখলে এ ভূমিকা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। মোহাম্মদ রিজওয়ানের জন্য তো এটা একটা অনুপ্রেরণাও।

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের পাকিস্তানি উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান মনে করেন, দলের চাহিদা মেটানোর লক্ষ্যে পারফর্ম করেই তিনি সাফল্য পান। দলের সবাই তাঁর পারফরম্যান্সে খুশি বলেও জানিয়েছেন এই উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান।

১৩ জানুয়ারি রাতে করাচিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে খেলে পরদিন দুপুরে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে কুমিল্লার হয়ে মাঠে নেমে যান রিজওয়ান। প্রথম ৩ ম্যাচে বড় স্কোর না পেলেও সর্বশেষ ম্যাচে পেয়েছেন ফিফটি।

রিজওয়ানের ধীরগতির ফিফটির দিনে খুশদিলের স্ট্রাইক রেট ছিল ২৬৬.৬৬

যদিও ওপেনিংয়ে নেমে ৫৫ রানের অপরাজিত ইনিংসে খেলেছেন ৪৭ বল, পাকিস্তান জাতীয় দলের মতো কুমিল্লাতেও তাঁর ভূমিকাটা প্রথম ৪ ম্যাচেই পরিষ্কার—‘অ্যাঙ্করিং’। মানে একদিক থেকে উইকেট ধরে রেখে ইনিংস গড়ার চেষ্টা করা।

রিজওয়ানের সে ফিফটির দিনে পাঁচে নেমে ২৪ বলে ৬৪ রানের ইনিংস খেলেন তাঁরই স্বদেশি খুশদিল শাহ। সেদিন তাঁর স্ট্রাইক রেট ছিল ২৬৬.৬৬, রিজওয়ান সেখানে ব্যাট করেছিলেন ১১৭.০২ স্ট্রাইক রেটে।

তবে দলের চাহিদা অনুযায়ী দুই ধরনের ব্যাটিংই দরকার আছে বলে মনে করেন রিজওয়ান, ‘মাঝেমধ্যে টি-টোয়েন্টিতে ধীর ব্যাটিংটাই হয়ে ওঠে দলের চাহিদা, (প্রতিপক্ষের) মোমেন্টামও ব্রেক করতে পারেন এভাবে। আবার দলের যখন মোমেন্টাম আছে, তখন বড় শট খেলে সেটার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হয়। আমি এভাবেই দেখি। বেশির ভাগ সময় আল্লাহর সহায়তায় আমি সফলও হই।’

রিজওয়ান অনুসরণ করেন এবি ডি ভিলিয়ার্সকে, এমনকি টেস্টেও। তবে টি-টোয়েন্টিতে তাঁর ব্যাটিংয়ের ধরনটা যে দর্শকচাহিদা সব সময় মেটায় না, সেটি জানেন এ সংস্করণে ৪২.৯০ গড় ও ১২৫.১৯ স্ট্রাইক রেটে ব্যাট করা ব্যাটসম্যান নিজেও। রিজওয়ান তবু দলের কথাটাই আগে চিন্তা করেন, ‘দলের কী চাহিদা সেটা বুঝতে হবে।কন্ডিশন ও প্রতিপক্ষ পর্যালোচনা করতে হবে। আমি সব সময়ই এসব করতে চাই। মাঝেমধ্যে এটা একটু বিব্রতকর। টি-টোয়েন্টিতে সবাই চার-ছক্কা চায়, ৩০-৩৫ বলে ৬০-৭০ রান চায়। তবে আমার কাছে কীভাবে ম্যাচ জেতা যায়, আমি কীভাবে দলকে জয়ের পথে রাখতে পারি, এটাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ।’

আর তাঁর এই পারফরম্যান্সে যে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসও খুশি, সেটা জানেন রিজওয়ানও, ‘এটা কঠিন একটা দায়িত্ব। মাঝেমধ্যে তো বিব্রতকরই মনে হয় (বাইরে থেকে দেখলে)। তবে আমি যা জানি, সেটাই করার চেষ্টা করি। দলের যা চাহিদা, আমি সেটাই করব। কোচ, অধিনায়ক, দলের মালিক—কুমিল্লা পরিবারের সবাই আমার পারফরম্যান্সে খুশি।’

কুমিল্লার কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের পর্যবেক্ষণ—রিজওয়ান খেলাটা খেলেন মস্তিষ্ক দিয়ে। আজ রিজওয়ানও বললেন, ‘আল্লাহ মস্তিষ্ক দিয়েছেন কাজে লাগানোর জন্য। অন্য কিছুর জন্য নয়। আমি সেটাই চেষ্টা করি। মাঝেমধ্যে থামতে হবে, শট খেলতে হবে। কারণ সবাই—দর্শক, সংবাদমাধ্যম, বিশ্ব খেলা দেখছে। মাঝেমধ্যে কিছু বিষয় আপনার পক্ষে আসবে না। দলের চাহিদাই আপনাকে শক্তিশালী করে তুলবে। আপনি যা-ই করুন না কেন, দলের জন্য করবেন। লোকে কী বলল, তাতে কিছু যায় আসে না। দলের চাহিদাটাই বড়।’