বেশ কয়েকজন খেলোয়াড় ও কোচ আইপিএলে ইমপ্যাক্ট বদলি নিয়মের বিপক্ষে কথা বললেও এবার এটিকে সমর্থন জানিয়েছেন ভারতের সাবেক কোচ ও ধারাভাষ্যকার রবি শাস্ত্রী। ভারতীয় তরুণ ক্রিকেটারদের জন্য নিয়মটি ভালো বলে মনে করেন অফ স্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিনও।
অশ্বিনের ইউটিউব চ্যানেলে এক শোতে গিয়ে শাস্ত্রী বলেছেন, ‘ইমপ্যাক্ট খেলোয়াড়টা (নিয়ম) ভালো। আপনাকে সময়ের সঙ্গে বদলাতে হবে। এটা কিন্তু অন্য খেলাতেও হয়। ফলে শেষগুলো আরও টান টান হয়। আপনাকে সময়ের সঙ্গে বদলাতে হবে এবং আমার মনে হয় এটি ভালো নিয়ম। গত বছরের আইপিএলে আমরা কতগুলো টান টান শেষ দেখেছি, তা আপনারা দেখেছেন। ফলে এটা বড় একটা পার্থক্য গড়ে দিয়েছে।’
২০২৩ সাল থেকে আইপিএলে চালু করা হয়েছে ইমপ্যাক্ট বদলির নিয়ম। এ নিয়ম অনুযায়ী, ম্যাচের যেকোনো সময় একজন বদলি খেলোয়াড়কে নামাতে পারে দলগুলো, যাঁরা ব্যাটিং-বোলিং যেকোনো কিছুই করতে পারেন। নিয়মটি এমনভাবে কার্যকর করা হচ্ছে, কার্যত এখন প্রতি ম্যাচে খেলছেন ১২ জন করে খেলোয়াড়। তাতে কার্যত অলরাউন্ডারদের ভূমিকাও কমে গেছে। নিয়মটি পছন্দ নয়, এর আগে এমন বলেছেন ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মাও। তবে অশ্বিন বলছেন, এ নিয়মের কারণেই ধ্রুব জুরেলের মতো খেলোয়াড় সুযোগ পাচ্ছেন, যিনি সম্প্রতি ভারতের হয়ে খেলারও সুযোগ পেয়েছেন।
অশ্বিনের মতে, ‘আমাদের এটাও বুঝতে হবে, সাতজনের বদলে আটজন ভারতীয় সুযোগ পাচ্ছে। এটা আসলে সুযোগ। অতীতেও এমন হয়েছে, তরুণ তারকারা বসে ছিল। সুযোগ পায়নি।’
এরপর শাস্ত্রী যোগ করেছেন, ‘যেকোনো নতুন নিয়ম এলেই লোকে এটা কেন ঠিক নয়, সেটি প্রমাণের চেষ্টা করে দেখবে। কিন্তু যখন আপনি দেখবেন ১৯০-২০০ রানের স্কোর হচ্ছে এবং আপনি যেমন কারও কথা উল্লেখ করলে যারা সুযোগ পাচ্ছে এবং সেটি কাজে লাগাচ্ছে, তখন লোকে এত দিন যা ভাবত, তার চেয়ে ভিন্নভাবে চিন্তা করবে।’
অবশ্য সম্প্রতি এ নিয়মের ব্যাপারে কথা বলেছেন বিসিসিআইয়ের সেক্রেটারি জয় শাহও। তিনি জানিয়েছেন, ইমপ্যাক্ট বদলির নিয়মটি স্থায়ী নয়। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে কথা বলে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
গত বৃহস্পতিবার মুম্বাইয়ে বিসিসিআইয়ের প্রধান কার্যালয়ে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘ইমপ্যাক্ট খেলোয়াড় হচ্ছে পরীক্ষামূলক নিয়মের মতো। আমরা ধীরে ধীরে এটি কার্যকর করেছি। সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, (প্রতি ম্যাচে) দুজন করে ভারতীয় খেলোয়াড় (বাড়তি) সুযোগ পাচ্ছে। যেটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। (তবে) আমরা খেলোয়াড়, ফ্র্যাঞ্চাইজি, ব্রডকাস্টারদের সঙ্গে কথা বলব (এরপর সিদ্ধান্ত নেব)। এটি স্থায়ী নয়, (কিন্তু) আমি এটাও বলছি না যে এ নিয়ম থাকবেই না।’
রোহিতের বাইরে প্রকাশ্যে এ নিয়মের বিপক্ষে কথা বলেছেন অক্ষর প্যাটেল ও মুকেশ কুমার। অবশ্য দিল্লি ক্যাপিটালসের কোচ রিকি পন্টিংয়ের এ নিয়মের ব্যাপারে মিশ্র অনুভূতিই আছে। তাঁর মতে, আইপিএলকে আকর্ষণীয় করে তুলতে এ নিয়ম ধরে রাখলে তিনি খুশিই হবেন। তবে কোচ হিসেবে চিন্তা করলে নিয়মটি তাঁর কাছে ‘দুঃস্বপ্নের’ মতো।
অবশ্য জয় বলেছেন, এ নিয়মের বিপক্ষে এখনো কেউ তাঁদের কিছু জানাননি, ‘এটি খেলাকে আরও প্রতিদ্বদ্বিতাপূর্ণ করছে কি না (সেটি দেখব)। কোনো খেলোয়াড় যদি মনে করে এটি ঠিক নয়, তাহলে তার সঙ্গে কথা বলব আমরা। কিন্তু কেউ আমাদের এখন পর্যন্ত কিছু বলেনি, ফলে বিশ্বকাপের পরই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’