সেঞ্চুরির পর কামিন্দু মেন্ডিস
সেঞ্চুরির পর কামিন্দু মেন্ডিস

ব্র্যাডম্যানের পিছু ছাড়ছেনই না কামিন্দু মেন্ডিস

২৫০ বলে অপরাজিত ১৮২ রান, ১৬ চারের সঙ্গে ৪ ছক্কা। গলে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দুর্দান্ত এই ইনিংস খেলার পথে দারুণ সব কীর্তি গড়েছেন কামিন্দু মেন্ডিস। টেস্ট ক্রিকেটের রেকর্ড বইয়ের পাতায় কোথাও বসেছেন স্যার ডন ব্র্যাডমানের পাশে, কোথাও চলে এসেছেন ব্র্যাডম্যানের একেবারে কাছাকাছি। তাঁর এই কীর্তির দিনে শ্রীলঙ্কা ইনিংস ঘোষণা করেছে ৫ উইকেটে ৬০২ রান তুলে। সেঞ্চুরি পেয়েছেন দিনেশ চান্ডিমাল (১১৬) ও কুশল মেন্ডিসও (১০৬*)। দ্বিতীয় দিনের শেষ দিকে ব্যাট করতে নেমে ২২ রান তুলতেই ২ উইকেট হারিয়েছে নিউজিল্যান্ড। তবে সব ছাপিয়ে দিনটা আসলে কামিন্দুময়।
টেস্ট ক্যারিয়ারে তাঁর নামের পাশে তখন ৯৯৮ রান। উইকেট থেকে বেরিয়ে এসে রাচিন রবীন্দ্রকে মারলেন ছক্কা। হাজার রানের মাইলফলক পেরিয়ে গেলেন মাত্র ১৩ ইনিংসে। ইনিংসের হিসাবে যেটি দ্বিতীয় দ্রুততম। টেস্ট ইতিহাসে কামিন্দুর চেয়ে কম ইনিংসে হাজার করতে পেরেছেন শুধু দুজন, দুজনই কিংবদন্তি—ইংল্যান্ডের হার্বার্ট সার্টক্লিফ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্যার এভারটন উইকস। দুজনেরই লেগেছিল ১২ ইনিংস। ১৯২৫ সালে সার্টক্লিফ এই কীর্তি গড়ার পর ১৯৪৯ সালে তাঁর পাশে বসেন এভারটন উইকস। এরপর গত ৭৫ বছরের মধ্যে হাজারের মাইলফলকে কামিন্দুই দ্রুততম। সর্বকালের সেরা স্যার ডন ব্রাডম্যানেরও লেগেছিল কামিন্দুর মতোই ১৩ ইনিংস।
১৮২ রানে অপরাজিত ছিলেন কামিন্দু
শুধু হাজারের মাইলফলকেই নয়, অন্য একটি কীর্তিতেও আজ ব্র্যাডম্যানকে ছুঁয়েছেন কামিন্দু। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে আজ সেঞ্চুরি করেছেন, যেটি তাঁর টেস্ট ক্যারিয়ারের পঞ্চম। ক্যারিয়ারের প্রথম ৫ টেস্ট সেঞ্চুরি করতে সমান ১৩ ইনিংস লেগেছিল ব্র্যাডম্যান এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের জর্জ হেডলিরও। সব মিলিয়ে কামিন্দু দ্রুততম পঞ্চম সেঞ্চুরির তালিকায় যৌথভাবে তৃতীয়, তবে এশিয়ান ব্যাটসম্যানদের মধ্যে ২৫ বছর বয়সী এই লঙ্কানই দ্রুততম।
ব্যাটিং গড়ের হিসাবেও এই মুহূর্তে ব্র্যাডম্যানের আশপাশেই কামিন্দুর অবস্থান। টেস্ট ক্যারিয়ারে এই মুহূর্তে তাঁর গড় ৯১.২৭, যা হাজার রান করা ব্যাটসম্যানদের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। শীর্ষে যথারীতি স্যার ডন ব্র্যাডম্যান—৯৯.৯৪। ১৩ ইনিংস পর সর্বোচ্চ রানের তালিকায় কামিন্দু কিছুটা পিছিয়ে আছেন। ক্যারিয়ারের প্রথম ১৩ ইনিংস পর সর্বোচ্চ রানের মালিক ব্র্যাডম্যান—১১৯৬। কামিন্দু আছেন তালিকার ৪ নম্বরে—১০০৪ রান। ১৩ ইনিংস পর গড়ের দিক থেকেও চতুর্থ স্থানে আছেন কামিন্দু। ১৩ ইনিংস পর সর্বোচ্চ গড় ছিল নিল হার্ভের—১০৬.৫৬, ব্র্যাডম্যানের ৯৯.৬৭, সুনীল গাভাস্কারের ৯১.৮০।
গতকাল ৫১ রানে অপরাজিত থেকে টেস্ট অভিষেক থেকে টানা ৮ ম্যাচের প্রতিটিতে ন্যূনতম একটি ফিফটি করে বিশ্ব রেকর্ড করেছিলেন। শ্রীলঙ্কার হয়ে টানা ৯ টেস্টে ফিফটির রেকর্ড আছে কুমার সাঙ্গাকারার। কামিন্দু পরের টেস্টে ৫০ করলেই ছুঁয়ে ফেলবেন সাঙ্গাকারাকে। তবে সব মিলিয়ে টানা ১২ টেস্টে ফিফটির রেকর্ড এবি ডি ভিলিয়ার্সের।
কামিন্দু তাঁর ক্যারিয়ারের ৫টি সেঞ্চুরিই করেছেন ৫ নম্বর কিংবা এর পরে নেমে। প্রতিটিই এসেছে এ বছর। এক পঞ্জিকাবর্ষে পাঁচ বা এর পরে নেমে এর সমান বা বেশি সেঞ্চুরি করার কীর্তি আছে মাত্র দুজনের—জনি বেয়ারস্টোর ৬ (২০২২), মাইকেল ক্লার্ক ৫টি (২০১২)।