৫ উইকেট নেন স্টুয়ার্ট ব্রড
৫ উইকেট নেন স্টুয়ার্ট ব্রড

লর্ডসে ফিরে ‘বাজবল’-এর স্বাদ পেল আইরিশরা

২০১৯ সালে ইংল্যান্ডের সঙ্গে এর আগে একমাত্র যে টেস্ট খেলেছিল আয়ারল্যান্ড, প্রথম ইনিংসে এ ভেন্যুতেই স্বাগতিকদের ৮৫ রানে অলআউট করে দিয়েছিল আইরিশরা। প্রায় চার বছর পর লর্ডসে আরেকটি টেস্ট খেলতে নেমে ভিন্ন এক ইংল্যান্ডের দেখা পেল অ্যান্ডি বলবার্নির দল। স্টুয়ার্ট ব্রডের ৫ উইকেটের তোপে ১৭২ রানে গুটিয়ে যাওয়ার পর প্রথম দিন শেষে তারা আবিষ্কার করেছে—তাদের সঙ্গে ইংল্যান্ডের ব্যবধান এখন মাত্র ২০ রানের, স্বাগতিকদের হাতে এখনো ৯ উইকেট।

জ্যাক ক্রলি ও বেন ডাকেটের ফিফটিতে ইংল্যান্ড ১৫২ রান তুলে ফেলেছে মাত্র ২৫ ওভারেই। ৪৫ বলে ৫৬ রান করা ক্রলি ফিরলেও ডাকেট অপরাজিত ৭১ বলে ৬০ রান করে। তাঁর সঙ্গী ৩৫ বলে ২৯ রান করা পোপ। এই তিনজন মিলে ২৫ ওভারে মেরেছেন ২৫টি চার।

‘বাজবল’, ‘বাজবল’—আয়ারল্যান্ড হয়তো এত দিন শুনেই এসেছে। এবার দেখা পেল সেটির। শেষ সেশনে ব্যাটিংয়ে নামা ইংল্যান্ডের ওপেনিং জুটি ফিফটি পেরোয় ৪৪ বলে। ১০০ ছুঁতে ক্রলি ও ডাকেটের লাগে ১৫.২ ওভার। দুজনের মধ্যে ডাকেটের নিয়ন্ত্রণ ছিল বেশি। দেশের মাটিতে প্রথম টেস্ট ইনিংস খেলতে নামা এই বাঁহাতি ফিফটি পূর্ণ করেন ৫৩ বলে।

ঝোড়ো ব্যাটিং করেন ক্রলি (বাঁয়ে) ও ডাকেট

ফিফটি পেতে ক্রলির অবশ্য লাগে মাত্র ৩৯ বল। মার্ক অ্যাডাইরকে সে সময় দারুণ দুটি চার মারেন, কিন্তু ক্রলি থামেন ঠিক পরের ওভারেই। ফিওন হ্যান্ডকে জোরের ওপর ড্রাইভ করতে গিয়ে ফিরতি ক্যাচ দেন, দ্বিতীয় দফায় দারুণভাবে সেটি নেন আয়ারল্যান্ডের অভিষিক্ত পেসার। ক্রলি ফিরলেও রানের গতি সেভাবে কমেনি ইংল্যান্ডের, পোপের সঙ্গে ডাকেটের জুটি অবিচ্ছিন্ন ৪৩ রানে।

ইংল্যান্ডের এমন ঝোড়ো ব্যাটিংয়ের শিকার হওয়ার আগে আইরিশরা এলোমেলো হয়ে গেছে স্টুয়ার্ট ব্রডের তোপে পড়ে। জেমস অ্যান্ডারসনরা নেই বলে ইংল্যান্ডের পেস আক্রমণের নেতৃত্ব ব্রডের হাতেই। দায়িত্বটা তিনি দারুণভাবেই পালন করছেন বলতে হবে। ৫ উইকেট নিয়ে অ্যাশেজের আগে নির্বাচকদের একটা বার্তাও দিয়েছেন কদিন পরই ৩৭ পূর্ণ করতে চলা এই পেসার।

গ্রীষ্মের প্রথম টেস্টের টসে জেতেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক বেন স্টোকস। সেভাবে সুইংয়ের দেখা না পেলেও আঁটসাঁট লাইন ও লেংথে চাপ তৈরি করেন ব্রড। তাঁর ৮ বলের মধ্যে ৩ উইকেট হারিয়ে সকালেই এলোমেলো হয়ে পড়ে আয়ারল্যান্ড। ব্রডের পরপর ২ ওভারে ফেরেন পিটার মুর, অ্যান্ডি বলবার্নি ও হ্যারি টেক্টর। আয়ারল্যান্ড অধিনায়ক বলবার্নি ও টেক্টর দুজনই ফেরেন কোনো রান না করেই। ১৯ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে বসা আয়ারল্যান্ড এরপর সে চাপ সামাল দেওয়ার চেষ্টাই করে গেছে শুধু।

মধ্যাহ্নবিরতিতে আইরিশরা যায় ৪ উইকেটে ৬৪ রান নিয়ে। তাতে অবদান ছিল ৩৫ বলে ৩০ রানের ইনিংস খেলা পল স্টার্লিংয়ের। তবে বিরতির আগেই জ্যাক লিচকে সুইপ করতে গিয়ে উইকেটকিপার জনি বেয়ারস্টোর হাতে ধরা পড়েন স্টার্লিং। বল গ্লাভসে লেগে উঠেছিল স্টাম্পের ওপরে।

ওপেনার জেমস ম্যাককলাম ও লোরকান টাকারের জুটি মধ্যাহ্নবিরতির পর কিছুটা প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করে, যদিও সেটি টেকে ৯.১ ওভার। ৩৮ রান করা ম্যাককলামকে ফিরিয়ে সে জুটি ভাঙেন ব্রড। এরপর টাকার হয়েছেন লিচের শিকার। আইরিশদের পরের প্রতিরোধের চেষ্টা আসে অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইন ও ক্যাম্ফারের জুটিতে। যদিও জুটিটা ৯ ওভারও টেকেনি, তবে তুলনামূলক দ্রুতগতিতে দুজন তোলেন ৩৮ রান। ম্যাকব্রাইনকে ফেরান ম্যাথু পটস। বিরতির পর মার্ক অ্যাডাইরকে বোল্ড করে নিজের পঞ্চম উইকেটটি পান ব্রড।

ক্যাম্ফার এরপর বোল্ড হন লিচের বলে, ফিওন হ্যান্ড ক্যাচ তোলেন ম্যাথু পটসের বলে। চা-বিরতির পর ৬ ওভারের মধ্যেই অলআউট হয়ে যায় আয়ারল্যান্ড। ইংল্যান্ডের অভিষিক্ত পেসার জশ টাংকে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ব্যবহার করেন স্টোকস, তবে ১৩ ওভার বোলিং করে উইকেটশূন্যই থাকেন তিনি।