টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শুরুর আগে পাকিস্তান দলের প্রস্তুতি চলছে ইংল্যান্ড সিরিজ দিয়ে। চার টি-টোয়েন্টির এই সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে ইংলিশদের ১৮৩ রান তাড়া করতে পারেনি বাবর আজমের দল। ১৬০ রানে অলআউট হয়ে ম্যাচ হেরেছে ২৩ রানে। এর আগে সিরিজের প্রথম ম্যাচ বৃষ্টির কারণে পণ্ড হয়।
পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক ও ধারাভাষ্যকার রমিজ রাজার মতে, পাকিস্তান এখনো বিশ্বকাপের সেরা প্রস্তুতির পর্যায়ে যেতে পারেনি। কারণ হিসেবে শীর্ষ ক্রিকেটারদের ব্যাটিং ও বোলিংয়ের বিভিন্ন দুর্বলতা উঠে এসেছে তাঁর বিশ্লেষণে।
এজবাস্টনে ১৮৪ রানের লক্ষ্যে পাকিস্তান দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ রিজওয়ান ও সাইম আইয়ুবকে হারিয়ে ফেলে ১৪ রানের মধ্যে। রমিজ মনে করেন, সাইমকে ওপেনিংয়ে প্রচুর সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এখন তাঁকে বাদ দিয়ে রিজওয়ান-বাবরকে দিয়ে আবারও ওপেনিং শুরু করানো উচিত, ‘সাইমকে এভাবে খেলিয়ে যাওয়া উচিত হবে না। তাকে প্রচুর সুযোগ দেওয়া হয়েছে, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সুযোগ কাজে লাগিয়ে ভালো করতেই হবে। কিন্তু সে যথেষ্ট প্রস্তুত নয়। এখন দরকার রিজওয়ান-বাবর জুটিতে ফেরা। ওরা একে অপরের খেলা ভালো বোঝে। সাইমের কারণে পাকিস্তানের দলের পুরো কম্বিনেশনেই ঝামেলা হচ্ছে।’
নিজের ইউটিউব চ্যানেলে খেলোয়াড়দের দুর্বলতা ধরে ধরেও কথা বলেছেন রমিজ। ২৬ বলে ৩২ রান করে মঈন আলীর বলে এলবিডব্লু হওয়া বাবরের বিষয়ে তাঁর মন্তব্য, ‘স্পিনের বিপক্ষে বাবরের সমস্যা আছে। পেসে ভালো করে, কিন্তু যখন স্পিন আক্রমণ শুরু হয়, সে আটকে যায়। সেটা লেগ স্পিন হোক বা অফ স্পিন। এসব ক্ষেত্রে হয় তাকে রিভার্স সুইপ, সুইপ বা সুইচ হিট খেলতে হবে, নয়তো ফুটওয়ার্ক নিয়ে কাজ করতে হবে এবং স্পিনারের ওপর আধিপত্য বিস্তার করতে হবে।’
এ ম্যাচে বল হাতে পাকিস্তানের সবচেয়ে সফল শাহিন শাহ আফ্রিদি, ৪ ওভারে ৩৬ রানে নিয়েছেন ৩ উইকেট। তবে বাঁহাতি এই পেসারের বোলিংয়ে পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়ার ঘাটতি দেখছেন রমিজ, ‘বল সুইং না করলে সে ফুল লেংথ ডেলিভারি করা শুরু করে। ওখানেই মার খায়। শাহিনের লেংথ বল এবং গতিতে বৈচিত্র্য নিয়ে কাজ করা দরকার, বিশেষ করে উইকেট থেকে যখন কিছু পাওয়া যায়।’
আর উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান আজম খানের ক্ষেত্রে পেস বোলিং সামলানোর ক্ষেত্রে সমস্যা চোখে পড়েছে রমিজের। পিসিবির সাবেক চেয়ারম্যান বিষয়টি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন, ‘পেসে আজমের ব্যাটিং সমস্যাপূর্ণ। বড় দলগুলো তার এই দুর্বলতা বুঝে শর্ট বল করে যাবে, তাকে স্বচ্ছন্দের জায়গা থেকে সরিয়ে দেবে। স্পিনের বিপক্ষে ওর স্ট্রাইক রেট ভালো, কিন্তু সেটা পেসে নয়।’
রমিজের বিশ্লেষণে সবচেয়ে কঠোর মন্তব্য এসেছে শাদাবের বেলায়। এই লেগ স্পিন বোলিং অলরাউন্ডার ৪ ওভারে দিয়েছেন ৫৫ রান, ব্যাটিংয়ে পাঁচে নেমে ৪ বলে করেছেন ৩ রান। এ ধরনের পারফরম্যান্সের কারণে শাদাবের একাদশেই জায়গা দেখেন না রাজা, ‘ব্যাটিংয়ে শাদাবের ভূমিকাটা আসলে কী, আমি বুঝতে পারছি না। সে ৫ নম্বরে ব্যাট করতে নেমে স্লগারের মতো মারার চেষ্টা করে, যখন কিনা জুটি গড়ে খেলাটা শেষ দিকে টেনে নেওয়া দরকার। শাদাবের বোলিংও যথেষ্ট মানসম্পন্ন নয়।’
পাকিস্তান দলকে ১৬০ রান নয়, ১৮০ রানের লক্ষ্য নিয়ে ব্যাট করতে হবে বলেও মত দেন রমিজ রাজা, ‘এই যুগে তেমন কোনো ঝুঁকি ছাড়াই ১৮০ রান সহজে তোলা যায়।’
পাকিস্তান-ইংল্যান্ড সিরিজের তৃতীয় টি-টোয়েন্টি মঙ্গলবার, কার্ডিফে।