সোবহানা মোস্তারি। সময়টা ভালো যাচ্ছে না তাঁর
সোবহানা মোস্তারি। সময়টা ভালো যাচ্ছে না তাঁর

‘বিশ্ব এখনো দেখেনি, সে কতটা ভালো’

পূজা বস্ত্রকরের অফ স্টাম্পের বাইরে করা হাফ ভলি পেয়ে কাভার ড্রাইভে চার—মনে হয়েছিল সোবহানা মোস্তারি রানের দেখা পাচ্ছেন অবশেষে। কিন্তু এরপর আবার খোলসে ঢুকে গেলেন, পরের ৫ বলে নিতে পারলেন আর ১ রান। এরপর রেনুকা সিংয়ের বলে বোল্ড হয়ে থামতে হলো তিনে নামা ব্যাটারকে।

ক্যারিয়ারে ৩৫টি ম্যাচ খেলে ফেলা সোবহানা নিজের ব্যাটিং-মেধার পরিচয়টা যে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এখনো রাখতে পারেননি, সেটি বলাই যায়। ১১.২৯ গড় আর ৭৪.৬১ স্ট্রাইক রেট তাঁর, এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ ইনিংস ৩০ রানের। সর্বশেষ কয়েক ম্যাচে তো ফর্মটা আরও বাজে। সর্বশেষ ৪ ইনিংসে তাঁর স্কোর—০, ০, ৫, ৬।

সর্বশেষ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের শেষ ম্যাচে বাদ পড়লেও ভারতের বিপক্ষে টি–টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে আবার একাদশে ফেরানো হয় সোবহানাকে। কিন্তু সম্প্রতি টপ অর্ডারের যে ব্যর্থতা, তারই প্রতিচ্ছবি হয়ে থেকেছে তাঁর ব্যাটিং।

সোবহানাকে দলে ফেরানোর কারণ হিসেবে কোচ হাশান তিলকারত্নে বললেন, সিলেটে এসে ম্যাচ আবহে ভালো করেছেন বলেই নেওয়া হয়েছে তাঁকে, ‘অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলার পর এখানে এসে ম্যাচ আবহে খেলেছি কয়েকবার। সেখানে সে অনেক ভালো করেছে। ফলে আমরা তাকে আরেকটা সুযোগ দিতে চেয়েছি। আসলে নিজেদের খেলোয়াড়দের তো সমর্থন দিতে হবে।’

মেয়েদের কোচ কোচ হাশান তিলকারত্নে

তিলকারত্নে এরপরই বললেন, ‘তার অনেক মেধা আছে। তবে বিশ্ব এখনো দেখেনি, সে কতটা ভালো। মাঠে নেমে নিজেকে মেলে ধরাটা বড় ব্যাপার।’

শুধু সোবহানা নন, এক নিগার সুলতানা ছাড়া স্বীকৃত ব্যাটারদের প্রায় সবারই এ অবস্থা। শুরুতেই উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ চাপে পড়ছে বারবার। এরপর সেখান থেকে নিচের দিকের ব্যাটসম্যানদের নিয়ে যা একটু লড়াই করছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।

সর্বশেষ ৫ ম্যাচে বাংলাদেশ প্রথম ২ উইকেট হারিয়েছে ২৩, ১৭, ৪০, ২ ও ৪ রানে। টি-টোয়েন্টিতে ওপরের দিক থেকে রান না এলে যে কাজটি অনেক কঠিন, সেটি জানা কথাই। ব্যাটিং নিয়ে নিজের হতাশাটা লুকালেন না নারী দলের প্রধান কোচ, ‘তাদের ১৪৫ রানে আটকে রাখার কাজটা আমাদের বোলারদের দিক থেকে বেশ ভালো ছিল। কয়েকটি ক্যাচ ফেলেছি, এরপরও এটা ভালো ছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমাদের ব্যাটিং ক্লিক করেনি। আমার মনে হয়, এটা তাড়া করার মতো ছিল। ব্যাটিং যেভাবে করেছি, তাতে হতাশ।’

ব্যাটিং নিয়ে নিজের উদ্বেগের কথাও বলেছেন এ শ্রীলঙ্কান, ‘জ্যোতি (নিগার) অনেক ভালো ব্যাটিং করেছে। সে চাপ নিয়েছে। তবে অন্যদিক থেকে কেউ সহায়তা করতে পারছে না। এটিই এখন আমাদের সবচেয়ে বড় উদ্বেগের ব্যাপার। আমরা আলোচনা করেছি, কীভাবে আমরা জ্যোতিকে সমর্থন করব। আমি নিশ্চিত অন্যরা বুঝেছে, গতকাল কী ভুল করেছে। সেগুলো শুধরে ঘুরে দাঁড়াবে বলে আশা করি।’

ব্যাটিংয়ে সময়টা ভালো যাচ্ছে না বাংলাদেশের মেয়েদের

কোচরা কোনো ঘাটতি রাখছেন না—তিলকারত্নের দাবি এমন, ‘কোচিং স্টাফ অনেক কাজ করেছে। এখন তাদের (খেলোয়াড়দের) দেশকে ফিরিয়ে দেওয়ার পালা। এটা তাদের ওপর, ভালো কিছু করা।’ দ্বিতীয় ম্যাচেই ঘুরে দাঁড়ানোর আশার কথাও শোনালেন তিলকারত্নে, ‘আমরা আগেও তাদের হারিয়েছি। এখনো পরিস্থিতি বদলাতে পারব। মাঠে নেমে নিজেদের মেলে ধরতে হবে। নিজেদের ওপর বিশ্বাস রাখতে হবে।’

সিলেটে আগামীকাল সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ।