ওভার যত কম, দুই দলের শক্তির ব্যবধান নাকি তত কমে আসে। কিন্তু সিলেটে বৃষ্টির কারণে ১৪ ওভারে নেমে আসা চতুর্থ টি-টোয়েন্টিতে ভারত ও বাংলাদেশের পার্থক্যটা যেন ধরা দিল আরও বড় হয়ে। ১২৫ রানের লক্ষ্যে স্বাগতিকেরা থেমেছে ৬৮ রানেই, ৫৬ রানের বড় জয়ে ভারত এগিয়ে গেছে ৪-০ ব্যবধানে।
লক্ষ্যটা কঠিন হবে, সেটি জানাই ছিল। কিন্তু বাংলাদেশের ব্যাটিং দেখে ঠিক কোনো পর্যায়েই মনে হয়নি তাড়া করার সামর্থ্য আছে তাদের। ৬ ওভারের পরই প্রয়োজনীয় রান রেট গিয়ে দাঁড়ায় ১২-তে, লড়াইটা হয়ে পড়ে অসম। ম্যাচ হয়ে পড়ে শুধুই আনুষ্ঠানিকতার।
চতুর্থ ওভারে মাত্র পঞ্চম বল খেলা মুর্শিদা খাতুন হন কট বিহাইন্ড। অন্যদিকে প্রথম ২ ওভারে দিলারা আক্তার দুটি চার মেরেছিলেন, কিন্তু তিনিও রানে গতি আনতে পারেননি। ১৩ রানে দাঁড়িয়ে ১ বলেই দুবার জীবন পান দিলারা—প্রথমে আশা শোভানা ক্যাচ ফেলেন, সে বলে দিলারা নন স্ট্রাইক প্রান্তে হতে পারতেন রানআউটও। শেষ পর্যন্ত দীপ্তি শর্মার বলে এলবিডব্লু হন অষ্টম ওভারে।
সিরিজের ‘রীতি’ মেনে এরপর বাংলাদেশ ইনিংসে নামে ধস। সে সময় ৯ রানের মধ্যে পড়ে ৫ উইকেট। শরীফা খাতুন ও রাবেয়া খানের জুটিতে মূলত বাংলাদেশ ১৪ ওভার খেলে মাঠ ছাড়তে পারে।
সিলেটে গতকাল রাত থেকেই বৃষ্টি হচ্ছে একটু পরপর, আজ ম্যাচ শুরুর আগেও ছিল সেটি। বৃষ্টির পর ভেজা মাঠের কারণে ১৫ মিনিট দেরিতে শুরু হয় ম্যাচ, তখন পর্যন্ত সেটি ২০ ওভারেরই ছিল। আগে ব্যাট করতে নামা ভারতের ইনিংসের ৫.৫ ওভার পর আবার বৃষ্টি নামলে খেলা বন্ধ থাকে প্রায় দেড় ঘণ্টা, তাতে ম্যাচ নেমে আসে ১৪ ওভারে।
ভারত বড় স্কোর গড়ে দয়ালান হেমলতা, রিচা ঘোষ ও অধিনায়ক হারমানপ্রীত কৌরের ঝোড়ো ইনিংসে। বৃষ্টি-বিরতির পর ভারত তাদের রানের গতি ধরে রাখে দারুণভাবে। তাদের ইনিংসে ১৪টি চারের সঙ্গে ছিল ৩টি ছক্কা।
দ্বিতীয় ওভারে শরীফা খাতুনের বলে আগের ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় শেফালি বর্মা ক্যাচ দিয়ে ফিরলেও হেমলতার ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে শুরুটা ভালো হয় সফরকারীদের। হেমলতা মারেন মারেন ২টি করে চার ও ছক্কা। মারুফাকে এক্সট্রা কাভারের ওপর দিয়ে ছক্কা মারার পরের বলে অবশ্য ইনসুইং মিস করে হন এলবিডব্লু।
বৃষ্টি-বিরতির পর রাবেয়া খানকে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে খেলতে গিয়ে বোল্ড হন স্মৃতি মান্ধানা। ভারতের তাতেও সমস্যা হয়নি। রিচা ঘোষ ও হারমানপ্রীত এরপর গড়েন ২৮ বলে ৪৪ রানের জুটি। রিচা পরিণত হন রাবেয়ার দ্বিতীয় শিকারে আর শেষ ওভারে গিয়ে রানআউট হন হারমানপ্রীত। শেষ বলে সজীবন সাজনার উইকেটও নেন মারুফা।
ভারত নারী দল: ১৪ ওভারে ১২২/৬
(হারমানপ্রীত ৩৯, রিচা ২৪, হেমলতা ২২; মারুফা ২/২৪, রাবেয়া ২/২৮, শরীফা ১/২৯)
বাংলাদেশ নারী দল: ১৪ ওভারে ৬৮/৭ (লক্ষ্য ছিল ১২৫)
(দিলারা ২১, রুবাইয়া ১৩; দীপ্তি ২/১৩, শোভানা ২/১৮, রাধা ১/১২
ফল: ভারত নারী দল ৫৬ রানে জয়ী (ডিএলএস পদ্ধতিতে)।
ম্যাচসেরা: হারমানপ্রীত কৌর (ভারত নারী দল)।
সিরিজ: ৫ ম্যাচের সিরিজে ভারত নারী দল ৪–০ ব্যবধানে এগিয়ে।