দারুণ এক ইনিংস খেলেছেন নাজমুল হোসেন
দারুণ এক ইনিংস খেলেছেন নাজমুল হোসেন

বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের হারিয়ে যা ভাবছেন নাজমুল

নাজমুল হোসেন যখন ক্রিজে আসেন, ঝোড়ো শুরুর পর ফিরে গেছেন রনি তালুকদার। এরপর নাজমুলকে রেখে পাওয়ার প্লের মধ্যে ফেরেন আরেক ওপেনার লিটন দাসও। দুটি উইকেট নিয়ে উজ্জীবিত ইংল্যান্ড তখন ম্যাচে ফেরার চেষ্টায়, স্বাভাবিকভাবেই বাংলাদেশের ওপর একটা চাপ ছিলই।

তবে তৌহিদ হৃদয়ের সঙ্গে নাজমুল হোসেনের জুটিতে সে চাপ উড়ে গেল। নিশ্চিত করল, ম্যাচের নিয়ন্ত্রণটা থাকছে বাংলাদেশের কাছেই। সেটির পথ ধরেই এল দাপুটে এক জয়। নাজমুলের বিশ্বাস, এমন একটি জয়ের পর দলের চিন্তাভাবনাতেও অনেক পরিবর্তন আসবে।

টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ ভুগছে বেশ কিছুদিন ধরে। বিশেষ করে টপ অর্ডারের ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ অনেকটাই পিছিয়ে অন্য দলগুলোর তুলনায়—সেটি মনে হয়েছে বরাবরই। তবে আজকের ব্যাটিং ছিল পুরোই আলাদা। সবার ব্যাটিংয়েই নিজেকে মেলে ধরার একটা ছাপ ছিল।

ব্যাট হাতে ছন্দে আছেন নাজমুল

ইংল্যান্ড সিরিজের শুরু থেকেই ব্যাটসম্যানদের প্রতি এমন একটা বার্তা ছিল বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন নাজমুল, ‘এই সিরিজের একটাই (লক্ষ্য) ছিল, ব্যাটসম্যানরা যে যেভাবে স্বাভাবিক খেলা খেলে, ওভাবেই খেলবে। একদম স্বাধীনতা নিয়ে খেলবে। “ইমপ্যাক্ট” বা “ইন্টেন্ট” এক দিনে বললে তার পরের দিনই তো করা সম্ভব নয়। এর জন্য একটা সময়ের প্রয়োজন। আর অনেক সময় উইকেট, পরিস্থিতি একেক রকম থাকে। সবাই এমন খেলারই চেষ্টা করে। কিন্তু আমার মনে হয় এখন ব্যাটাররা অনেক স্বাধীনতা নিয়ে খেলছে।’

আগে ফিল্ডিং নিলেও জস বাটলারের ব্যাটিংয়ে অনেকটা সময়জুড়েই চাপে ছিল বাংলাদেশ। তবে শেষ দিকে হাসান মাহমুদসহ তাসকিন আহমেদ-মোস্তাফিজুর রহমানের বোলিংয়ে বেশ ভালোভাবে ঘুরে দাঁড়ায় স্বাগতিকেরা।

তৌহিদ হৃদয়ের সঙ্গে দারুণ এক জুটি গড়েছেন নাজুল

সেটিই দলকে জয়ের পথে নিয়ে গেছে বলেও মনে করেন নাজমুল, ‘শেষের ১০ ওভার আমরা বোলিংয়ে যেভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছি, তখনই আমাদের ওই আত্মবিশ্বাসটা এসেছে যে এই রান তাড়া করা সম্ভব। পরে ব্যাটিংয়ে যেভাবে শুরুটা পেয়েছি, তখন থেকেই আমরা আত্মবিশ্বাসটা পেয়েছি যে আমরা যদি এক-দুটি জুটি গড়তে পারি, তাহলে খেলাটা আমরা জিততে পারব।’

বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচেই সিরিজে এগিয়ে যাওয়ার পর বাংলাদেশের এখন স্বাভাবিকভাবেই লক্ষ্য সিরিজ জয়। তবে এ জয়ের দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব থাকবে বলেও মনে করেন নাজমুল, ‘প্রথম ম্যাচ জিততে পেরেছি, এটা দলকে অনেক আত্মবিশ্বাস দেবে। আমরা যখন দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে যাব, নতুন করে শুরু করতে হবে। এখন যদি চিন্তা করি, এই ম্যাচটা জেতার পর আমাদের দলের চিন্তাভাবনায় অনেক পরিবর্তন আসবে।’

ওয়ানডে সিরিজের শেষ ম্যাচের পর টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচ—দুই সংস্করণেরই বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশ জিতল টানা দুটি ম্যাচ। এমন দুটি জয় বাড়তি আত্মবিশ্বাসও জোগাবে বলে আশা নাজমুলের, ‘ওরা যেমন দল, বিশ্বের সেরা দলগুলোর একটি। আর ওরা এখন যেমন ক্রিকেট খেলছে, আমাদের জন্য অনেক চ্যালেঞ্জিং। এই দলের বিপক্ষে আমরা যখন ম্যাচ জিতছি, অবশ্যই এটা আমাদের দলকে অনেক আত্মবিশ্বাস দেবে।’

সেসব আত্মবিশ্বাসে ভর করেই অনেক দূর যাওয়ার আশাও করছেন তিনি, ‘সামনে আমরা যখন বড় বড় দলের বিপক্ষে খেলব, বেশি বেশি ম্যাচ খেলব, আমাদের এই দলটাও ধীরে ধীরে গড়ে উঠবে। ওয়ানডে দলটা এখন যেমন অনেকটা ভালো করছে, আমার মনে হয় টি-টোয়েন্টি দলটাও ধীরে ধীরে ওই জায়গায় যাবে।’