ব্যাটিং–ধস চলছেই। আর ফিল্ডিংয়ের সময় সুযোগ হাতছাড়া। বোলিং ভালো করলেও তাই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টের প্রতিযোগিতা থেকে ছিটকে গেছে বাংলাদেশ দল। লঙ্কানদের ৫৩১ রানের বিশাল সংগ্রহের জবাবে প্রথম ইনিংসে ১৭৮ রানে অলআউট হওয়া বাংলাদেশ তৃতীয় দিন শেষে পিছিয়ে ৪৫৫ রানে। এমন অবস্থায় ব্যর্থতার অজুহাত দেওয়ার মতো অবস্থায় নেই বাংলাদেশ দল। দলের প্রতিনিধি হিসেবে দিনের খেলা শেষে সংবাদ সম্মেলনে তাই দায় মাথা পেতে নিলেন জাকির হাসান।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিলেট টেস্টের পর চট্টগ্রামেও ব্যাটিং–ব্যর্থতার কারণ জানতে চাইলে জাকির সরাসরি বলেছেন, ‘আসলে কারণটা আর কী বলব, আমরা টোটালি ফেল করেছি। আমরা কেউ পটেনশিয়াল অনুযায়ী পারফর্ম করতে পারিনি। আমার কাছে মনে হয় যে আমাদের যে রোলটা ছিল, ওই রোলটাও আমরা পালন করতে পারিনি। ব্যাটিংয়ের ক্ষেত্রে আমাদের যেমন খেলার কথা ছিল, হয়তো আমরা ও রকম খেলতে পারিনি।’
সিলেট টেস্টে ব্যর্থতার প্রভাব কি তবে ছাপ ফেলেছে চট্টগ্রাম টেস্টেও? জাকির অবশ্য তেমন মনে করেন না, ‘ওটা কাজ করা উচিত না (অতীত ব্যর্থতার প্রভাব)। আমার হয়তো ওইভাবে করে না। আমি চেষ্টা করি প্রতিদিনই নতুনভাবে শুরু করার। আসলে অন্য কারও করলে তা আমি জানি না। কিন্তু আমার মনে হয়, এইগুলো না চিন্তা করে বর্তমান নিয়ে যদি আমরা ভালো পারফর্ম করতে পারি, সেটাই গুরুত্বপূর্ণ হবে আমাদের জন্য।’
ব্যাটিংয়ে খুঁটিনাটিতে যাওয়ার আগে মৌলিক দিকগুলো ঠিকমতো হচ্ছে কি না, সেদিকে মনোযোগ দিতে চান জাকির, ‘আমরা তো আমাদের যে কাজটা করার, সেটা করতে পারিনি। মানে ফার্স্ট প্ল্যানটা যদি কাজে লাগাতে পারি, তখন পরের প্ল্যানটা করা উচিত।’
জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের উইকেটে প্রথম দুই দিনের মতো আজও তেমন কিছুই ছিল না। তাইজুলকে নিয়ে জাকিরের দিনের প্রথম দেড় ঘণ্টা স্বাচ্ছন্দ্যে কাটিয়ে দেওয়াই তার প্রমাণ। কিন্তু লঙ্কানরা হাল ছাড়েননি। বোলিং–কৌশলের ক্ষেত্রে তাঁরা ছিলেন সৃজনশীল। ওয়াইড অব দ্য ক্রিজ থেকে অ্যাঙ্গেল কাজে লাগিয়ে জাকির, তাইজুলের পর সাকিব আল হাসানকেও আউট করেছেন লঙ্কানরা পেসাররা।
জাকির অবশ্য ভেতরে আসা বলটাকে ঠিকমতো ব্যাটে আনতে না পারার দায়টা নিজের কাঁধেই নিলেন, ‘আমাদের তো ওই পার্টিকুলার ডেলিভারিটা ফেস করতে হবে। আজকে বেশি বাতাস থাকার কারণে অনেক উইকেট পড়েছে। আদারওয়াইজ সবই ঠিক ছিল। উইকেট ভালো ছিল। কিন্তু ওই পার্টিকুলার বলের জন্য...এটা আসলে কোনো কথা হতে পারে না যে এটার জন্য আউট হয়ে গিয়েছি। আমাদের ওখানে আরও ভালো খেলার দরকার ছিল।’
ক্যাচ নেওয়ার ক্ষেত্রেও জাকিরের কথার সুরে ছিল অনুশোচনা, ‘অবশ্যই ক্যাচ ড্রপ হলে সবার খারাপ লাগে। এই ম্যাচেও আমাদের অনেক ক্যাচ ড্রপ হয়েছে। আসলে এটা তো কোনো এক্সকিউজ হতে পারে না। চেষ্টা করছি ইনশা আল্লাহ ওই জায়গায় উন্নতি করার।’ জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের বাতাসকেও ক্যাচ হাতছাড়ার অজুহাত হিসেবে দেখাতে চান না জাকির, ‘ফিল্ডিংয়ের ক্ষেত্রে বাতাস কোনো এক্সকিউজ নয়। আমরা চান্সগুলো নিতে করতে পারিনি।’