ওয়ানডে দলের অধিনায়কত্ব নতুন করে পেয়েছেন ১১ আগস্ট। দেশের ক্রিকেটে তখন এ নিয়েই সব আলোচনা চলছিল। কিন্তু কেন্দ্রীয় চরিত্র হয়েও সাকিব ছিলেন সে আলোচনার বাইরে। বিদেশে ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ খেলায় ব্যস্ত ছিলেন বলে অধিনায়কত্ব পাওয়ার আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়াও জানা যায়নি তাঁর কাছ থেকে। পরে বিচ্ছিন্নভাবে দুই-এক জায়গায় এ নিয়ে কথা বললেও সেসব বক্তব্যে অধিনায়ক সাকিবের চিন্তাটা পুরোপুরি বোঝা যায়নি।
সেটি বোঝা গেল আজ, যখন এশিয়া কাপ সামনে রেখে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের সংবাদ সম্মেলনকক্ষে সাকিব সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হলেন কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহেকে সঙ্গে নিয়ে। যৌথ সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নোত্তর পর্বটা শুরু হয় হাথুরুসিংহেকে দিয়ে। পাশে বসে মনোযোগ দিয়ে কোচের কথা শুনছিলেন সাকিব।
এরপর যখন তাঁর পালা এল, সাকিব জানান, বিশ্বকাপ এখনো তাঁর কাছে দূরের ছবি। আপাতত ভাবনাটা শুধু শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানে অনুষ্ঠেয় এশিয়া কাপ নিয়ে। আরও নির্দিষ্ট করে বললে গ্রুপ পর্বে শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ দুটি নিয়েই।
সাকিব বলেছেন, ‘এখন সবকিছুতেই এশিয়া কাপের ভাবনা। আরও ছোট করে বলতে গেলে, আফগানিস্তান ও শ্রীলঙ্কা নিয়ে ভাবছি। বিশ্বকাপেরটা পরে ভাবা যাবে।’ অন্য এক প্রশ্নের উত্তরে সাকিব বলেন, ‘দুটি আলাদা টুর্নামেন্ট। এশিয়া কাপে ভালো করলে বিশ্বকাপ ভালো হয়ে যাবে, এমন নয়। খারাপ করলেও খারাপ হয়ে যাবে না।’
তারপরও বিশ্বকাপ প্রসঙ্গ আসেই। ২০১১ সালেও সাকিবের নেতৃত্বে বিশ্বকাপ খেলেছিল বাংলাদেশ দল। সেই সাকিব আর এই সাকিবে যে বিরাট পার্থক্য, সেটি আলাদা করে বলার প্রয়োজন নেই। সাকিবও আজ এ নিয়ে বিশেষ কিছু বললেন না, ‘বিশ্বকাপ…যদিও অনেক অল্প বয়স ছিল। এখন যেহেতু অনেক বড় একটা অভিজ্ঞতা আছে, সেদিক থেকে অনেক ভালো একটা দল। আমাদের ভালো করার সম্ভাবনাটাও অনেক বেশি।’
এশিয়া কাপ খেলতে শ্রীলঙ্কার উদ্দেশে কালই দেশ ছাড়বে বাংলাদেশ দল। তার আগে দলের সঙ্গে অনুশীলন করার সুযোগ হয়নি তাঁর। সতীর্থদের সঙ্গেও কথা বলতে পেরেছেন মাত্র একবার। সাকিবের কাছে অবশ্য এটাকে কোনো সমস্যাই মনে হচ্ছে না, ‘আমার খুব বেশি একটা কথা বলতে হয়নি। আমাদের দলে যাঁরা আছেন, বেশির ভাগকেই আমি অনেক দিন ধরে চিনি। বেশির ভাগই আমার অধীনে খেলেছেন, না হয় আমি তাঁদের অধীনে খেলেছি। মানিয়ে নেওয়ার ব্যাপারটা যে কঠিন হবে, তা আমার মনে হয় না।’
দলে কিছু নতুন ক্রিকেটার থাকলেও সাকিবের আস্থা আছে সবার ওপরেই, ‘কিছু নতুন খেলোয়াড় এসেছে। আমার সম্পর্কে ওদের ধারণা আছে। মানিয়ে নিতে খুব একটা কষ্ট হবে না। সবাই জানে, কার কী করতে হবে। আমরা যে সংস্কৃতি তৈরি করার চেষ্টা করছি, সেদিক থেকে যার যে দায়িত্ব, তা সবাই বোঝে।’
সাকিব সংবাদ সম্মেলনে কথাগুলো বলছিলেন বাংলায়। পাশে বসা হাথুরুসিংহের পক্ষে সেসব বোঝার কথা নয়। তবে সাকিব সম্পর্কে কোচের ধারণা এতটাই উঁচু যে সাকিবের সব কথা বোঝার তাঁর দরকারও নেই। সাকিব যে এখন তিন সংস্করণেই বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক, হাথুরুসিংহের কাছে এটাই সবচেয়ে বড়, ‘যে সংস্করণেই হোক, ভালো অধিনায়ক সব সময় ভালো। কিন্তু তিন সংস্করণে অধিনায়কত্ব করা যেকোনো ক্রিকেটারের জন্যই কঠিন। কোচের সঙ্গে যোগাযোগ এ ক্ষেত্রে খুব গুরুত্বপূর্ণ।’