২০১১ বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি কে ছিলেন, মনে আছে? পাকিস্তানের স্পিনার শহীদ আফ্রিদি। ৮ ম্যাচে এই স্পিনার নিয়েছিলেন ২১ উইকেট। চলতি বিশ্বকাপের আগে সেটিই ছিল এশিয়ায় অনুষ্ঠিত সবশেষ বিশ্বকাপ। এক যুগ পর ভারতের মাটিতে এবার বিশ্বকাপে পাকিস্তানের স্পিনারদের পারফরম্যান্স কেমন?
পাকিস্তানি তিন স্পিনার শাদাব খান, মোহাম্মদ নেওয়াজ ও উসামা মির—তিনজন মিলে চলতি বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত উইকেট নিয়েছেন ৫টি। শাদাব ও নেওয়াজ খেলেছেন ৪টি করে ম্যাচ। ২ ম্যাচ খেলেছেন উসামা। শুধু যে উইকেট নিতে পারছেন না, তা–ও নয়, রানও বিলিয়ে দিচ্ছেন। এবার কি তাহলেই শুধুই পেসারদের দাপট? তা–ও নয়।
সর্বোচ্চ উইকেটশিকারির তালিকায় এখন পর্যন্ত শীর্ষ দুজনই তো স্পিনার। একজন অ্যাডাম জাম্পা ও অন্যজন মিচেল স্যান্টনার। জাম্পা ৫ ম্যাচে নিয়েছেন ১৩ উইকেট আর স্যান্টনার সমান ম্যাচে ১২ উইকেট। তাহলে পাকিস্তানি স্পিনাররা কেন পারছেন না? নাকি এই স্পিনারদের সামর্থ্যেই ঘাটতি?
আসলে ওয়ানডে ক্রিকেটে শাদাব-নেওয়াজদের স্পিন সামর্থ্য নিয়ে প্রশ্ন অনেক দিন ধরেই। বিশ্বকাপের আগে এশিয়া কাপেও তাঁরা দুজনই ছিলেন ছন্দহীন। ৫০ ওভারের ক্রিকেটে তাঁদের সামর্থ্যের ঘাটতির কথা মাথায় রেখেই ‘এ স্পোর্টস’–এর প্যাভিলিয়নে অনুষ্ঠানে এক ক্রিকেট সমর্থকের প্রশ্ন ছিল এমন—কেন পাকিস্তানে সাকলায়েন মুশতাক, সাঈদ আজমলদের মতো স্পিনাররা এখন উঠে আসছেন না? সেই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন মিসবাহ-উল-হক, শোয়েব মালিক ও ওয়াসিম আকরামরা।
মালিক টি-টোয়েন্টি খেলার অভিজ্ঞতা থেকে জানিয়েছেন, টি-টেয়েন্টির কারণে এখন প্রথাগত স্পিনারই কম দেখা যায়। এই সমস্যা সমাধানে তিনি গুরুত্ব দিয়েছেন ঘরোয়া ক্রিকেটের উইকেটে, ‘স্পিনার আমাদের আছে। কিন্তু সবাই টি-টোয়েন্টিকেন্দ্রিক। অবশ্য দুনিয়ায় যেখানেই টি-টোয়েন্টি লিগ চলে, সেখানেই এমন অফ স্পিনার দেখবেন, যে সঙ্গে ব্যাটিংও করতে পারেন। স্যান্টনার-মহারাজদের মতো প্রথাগত বাঁহাতি স্পিনাররাও এখন আসছেন না। আমাদের ঘরোয়া ক্রিকেটের উইকেটই এমন বানাতে হবে যেন স্পিনার উঠে আসেন।’
কেন আগের মতো স্পিনার পাচ্ছে না পাকিস্তান—সেই কারণ খুঁজেছেন পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক মিসবাহও, ‘এখন ৫০ ওভারের ক্রিকেটে আমরা আগের মতো স্পিনার পাচ্ছি না। কারণ, আগে চার দিনের ক্রিকেটে একেক মাঠে একেক ধরনের উইকেট পাওয়া যেত। ভাওয়ালপুর ও ফয়সালাবাদের উইকেট স্পিন সহায়ক হতো। এই ধরনের উইকেট পেলে স্পিনাররা পারফর্ম করতেন, ব্যাটসম্যানরাও খেলতে অভ্যস্ত হতেন। এই কারণে চার দিনের ক্রিকেট থেকে যখন কোনো স্পিনার আসতেন, ওয়ানডেতে কোনো সমস্যা হতো না।’
মিসবাহ আরও যোগ করেন, ‘চার দিনের ক্রিকেট খেলে ওয়ানডেতে আসলে লাইন-লেংথ বাধা হয়ে দাঁড়ায় না। এমনকি পেস বোলারদের ক্ষেত্রেও ব্যাপারটা এমন, লাইন-লেংথ নিয়ে ভাবতে হয় না। তাই ওয়ানডের জন্য দীর্ঘ সংস্করণে পারফর্ম করা পেসার-স্পিনারদের বাড়তি গুরুত্ব দিতে হবে।’