জস বাটলার ও টম ল্যাথাম, দুই দলকে নেতৃত্ব দেবেন আজ
জস বাটলার ও টম ল্যাথাম, দুই দলকে নেতৃত্ব দেবেন আজ

২০২৩-এর আহমেদাবাদে ২০১৯-এর লর্ডসের স্মৃতি

‘এক সেকেন্ডের জন্য ভেবেছিলাম, এউইন হয়তো কেইনকে ২০১৯ বিশ্বকাপের কথা আবার মনে করিয়ে দেবে।’

বিশ্বকাপ শুরুর আগের ক্যাপ্টেনস ডে অনুষ্ঠানে কেইন উইলিয়ামসনের সঙ্গে এউইন মরগানের কথা শেষ হওয়ার পর ওপরের কথাটি বললেন রবি শাস্ত্রী। শাস্ত্রীর কথা শেষ হওয়ার পর ক্যামেরা গেল মরগান ও জস বাটলারের দিকে। দুজনের মুখেই হাসি। উইলিয়ামসনের মুখটা অবশ্য দেখা গেল না। মরগান এ অনুষ্ঠানে এসেছেন বিশ্বকাপজয়ী সাবেক অধিনায়ক ও সঞ্চালক হিসেবে। উইলিয়ামসন অবশ্য চার বছর আগের মতো এবারও আছেন অধিনায়ক হিসেবেই। সর্বশেষ বিশ্বকাপ থেকে অধিনায়ক হিসেবে টিকে আছেন তিনিই। উইলিয়ামসনকে কি এখনো তাড়া করে ফেরে ওই বিশ্বকাপ? আরও নির্দিষ্ট করে বললে, জুলাইয়ের ওই দিনটা?

চার বছর আগে লন্ডনে জুলাইয়ের ওই দিন দুই দলকে নিয়ে গেছে ওয়ানডে ইতিহাসের লোকগাথায়। তর্ক সাপেক্ষে ইতিহাসের সেরা ওয়ানডেটি সেদিন খেলেছিল ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ড, তা–ও আবার বিশ্বকাপ ফাইনালে। গত চার বছরে তিন সংস্করণ মিলিয়ে দুই দল খেলেছে ২৪টি ম্যাচ, সেই ম্যাচটির কথা ঘুরেফিরেই এসেছে। এ ম্যাচের আগে আসছে আরও বেশি করে। গত বিশ্বকাপ শেষ হয়েছিল যে দুই দলের ম্যাচ দিয়ে, এবারের বিশ্বকাপ আজ আহমেদাবাদে শুরু হচ্ছে তাদের দিয়েই।

এ চার বছরে ওয়ানডে ক্রিকেটটা কেমন আড়ালে চলে গেছে। মরগান অবসরে গেছেন। কিন্তু সেসব পেছনে ফেলে আজ শুরু হচ্ছে বিশ্বকাপ-রোমাঞ্চ। এবারের বিশ্বকাপেও ইংল্যান্ড ফেবারিট দলগুলোর একটি, চ্যাম্পিয়ন দলকে সে কাতারে তো ফেলতেই হয়! কিন্তু গতবার রানার্সআপ হলেও নিউজিল্যান্ড আবারও নামছে ওই ‘ডার্কহর্স’ তকমা গায়ে মেখেই। তবে সেসব নিয়ে দুই দলের অধিনায়কের কেউই ভাবছেন না।

অনিশ্চিত বেন স্টোকসের প্রথম ম্যাচে খেলা

গতকাল সংবাদ সম্মেলনে ইংল্যান্ড অধিনায়ক জস বাটলার যেমন বললেন, ‘এ নিয়ে বেশ কয়েকবারই বলেছি, কোনো কিছু ডিফেন্ড করছি, এমন মনে হচ্ছে না আমাদের। অন্য দলগুলোর মতো আমরাও প্রায় একই অবস্থানে এখন। বিশ্বকাপ জিততে এসেছি এখানে। দারুণ একটি টুর্নামেন্ট খেলতে মুখিয়ে আছি। আমরা সবাই এক জায়গা থেকেই শুরু করব, সবারই বড় স্বপ্ন ও উচ্চাকাঙ্ক্ষা আছে শেষ পর্যন্ত যাওয়ার।’

আর নিউজিল্যান্ডের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক টম ল্যাথামের কথা, ‘এটি আসলে আপনারা (সাংবাদিকেরা) ঠিক করবেন। তবে আমরা সেদিকে নজর দিচ্ছি না। আমরা কিউইরা এমন একটু আড়ালেই থাকি, যেভাবে চাই সেভাবে নিজেদের কাজটি করি। প্রতিটি দলই আলাদা একটি ব্র্যান্ডে খেলতে পছন্দ করে, আলাদা ধরনের খেলতে চায়। আমাদেরও নিজস্ব একটা ধরন আছে। আর আমরা জানি, সেটি করতে পারলে, নিজেদের সামর্থ্যের সেরাটি দিয়ে খেলতে পারলে আমাদের হারানো কঠিন।’

ম্যাচের আগেই অবশ্য ধাক্কা লেগেছে নিউজিল্যান্ড দলে। উইলিয়ামসনকে এ ম্যাচে পাওয়া যাবে না, সেটি জানা ছিল আগে থেকেই। গতকাল ল্যাথাম নিশ্চিত করেছেন, খেলতে পারবেন না টিম সাউদিও। ডান হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলে অস্ত্রোপচার করানো এই পেসার এখনো পুরোপুরি সেরে ওঠেননি। চোটের সমস্যা আছে ইংল্যান্ড দলেও। নিতম্বের চোটের কারণে অনিশ্চিত বেন স্টোকস, এমনিতেই এবার বোলিং করার কথা নয় তাঁর। বাটলার জানিয়েছেন, ফিট হয়ে উঠলেই শুধু খেলানো হবে গত বিশ্বকাপের ফাইনালের নায়ককে।

এ ম্যাচে খেলবেন না উইলিয়ামসন

দীর্ঘ টুর্নামেন্টের আগে প্রতিটি দলেরই ছিল দুটি করে প্রস্তুতি ম্যাচ। বৃষ্টির বাধায় ইংল্যান্ড অবশ্য শুধু বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচটাই খেলতে পেরেছে। অন্যদিকে নিউজিল্যান্ড দুটি ম্যাচেই জিতেছে পাকিস্তান ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ড গত মাসেই খেলেছে দ্বিপক্ষীয় সিরিজ। ৪ ম্যাচের সিরিজটি ইংল্যান্ড জিতেছিল ৩-১ ব্যবধানে। ইংল্যান্ডের খেলার ধরনটা তাই নিউজিল্যান্ড দেখেছে আরেকবার। ল্যাথাম অবশ্য প্রস্তুত সেটির জন্য, ‘আমাদের দিক থেকে ভাবলে, যথাসম্ভব সেরা পরিকল্পনাটি করার চেষ্টা করতে হবে আমরা কোথায় বল করতে চাই। আমরা তাদের চাপে ফেলতে চাই। সেটি করতে পারলে দারুণ হবে। আমরা জানি, তারা জোরাল আক্রমণ করবে, তবে সেটি আমাদের সুযোগও তৈরি করে দেবে।’

সে সুযোগ নিশ্চয়ই দিতে চাইবে না ইংল্যান্ড।