১১ ছক্কা, ৮ চারে ৮১ বলে অপরাজিত ১২৬ রান। যেকোনো বিচারেই দুর্দান্ত ইনিংস। এমন ইনিংসের বিশেষত্ব আরও বাড়বে, যখন সেই ব্যাটসম্যান ব্যাটিংয়ে নামবেন ৪০১ রান তাড়ায়, বিশ্বকাপ থেকে বাদ পড়ার সমীকরণ নিয়ে। পাহাড় সমান চাপ মাথায় নিয়ে তো আর ব্যাটিং করাটা সহজ নয়! ফখর জামান গতকাল কঠিন কাজটা সহজেই করেছেন।
অথচ এই ফখরই পাকিস্তান দলে ব্রাত্য হয়ে পড়েছিলেন। বাদ পড়েছিলেন বিশ্বকাপে পাকিস্তানের প্রথম ম্যাচের পর। বেঞ্চে বসে দেখেছেন ৫ ম্যাচ। বাদ পড়ার যথেষ্ট কারণও ছিল। গত এপ্রিলে রাওয়ালপিন্ডিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে অপরাজিত ১৮০ রানের ইনিংস খেলেছিলেন। এরপর ১১ ওয়ানডেতে কোনো ফিফটি পাননি। বাদ পড়ার পর ফিরেই কীভাবে এমন রুদ্রমূর্তিতে ফখর? গতকাল সংবাদ সম্মেলনে নিজের এভাবে ফিরে আসার রহস্য জানিয়েছেন এই ওপেনার।
ফখর নিজের ব্যাটিং নিয়ে কাজ করেছেন এশিয়া কাপের পর। অবসরে বিশ্রামে না থেকে পেশোয়ার পাকিস্তানের ফিল্ডিং কোচ আফতাব খানের সঙ্গে দুর্বলতা নিয়ে কাজ করেছেন ফখর। তিনি বলেছেন, ‘এই পর্যায়ের ক্রিকেটে উত্থান-পতন থাকবেই। এশিয়া কাপ আমার জন্য ভালো যায়নি। আমার কি সর্বোচ্চ রান ছিল ৩০? সময়টা ভালো ছিল না। এরপর আফতাব খানের সঙ্গে তাঁর একাডেমিতে কাজ করতে পেশোয়ারে গিয়েছিলাম। অফ স্পিনারদের বিপক্ষে আমার কিছু দুর্বলতা তিনি খুঁজে পেয়েছিলেন। তিনি নিজেও একজন অফ স্পিনার ছিলেন, তাই তাঁর সঙ্গে অনেক কাজ করেছি।’
নিজের এই পারফরম্যান্সকে ফখর উৎসর্গ করেছেন সেই আফতাব খানকেই, ‘পারফর্ম করার পর সব ক্রিকেটারই বলে আমি এটা করেছি, ওটা করেছি। আসলেই আমি এশিয়া কাপের পর অবসর সময়টাতে বিশ্রামে নিইনি। দুই দিন বাড়িতে থেকে ট্রেনে পেশোয়ার চলে যাই। এই পারফরম্যান্স আফতাব খানের উদ্দেশে উৎসর্গ করতে চাই।’
অনেক সাবেক ক্রিকেটার, বিশেষ করে পাকিস্তানের সাবেকদের মুখে শোনা যায়, পাকিস্তানি ক্রিকেটাররা কঠোর পরিশ্রম করেন না। ফখর যেন সেই সমালোচকদের দিকেই ইঙ্গিত করেই বলেছেন, ‘তিনি যেসব বিষয় আমার সঙ্গে ভাগাভাগি করেছেন, আমাকে যে সময় তিনি দিয়েছেন, খুব বেশি মানুষ এটা করে না। সবারই এমন মানুষের প্রয়োজন হয়। আর যখনই পারফরম্যান্স ভালো থাকে, তখনই কঠোর পরিশ্রম চোখে পড়ে। পারফরম্যান্স ভালো না হলে আর চোখে পড়ে না। কিন্তু এর মানে এই নয় যে আমরা কঠিন পরিশ্রম করছি না।’