ফসকে গেল বল!
ফসকে গেল বল!

৬২ ক্যাচের ৩৫টিই মিস, মেয়েদের বিশ্বকাপে এত ক্যাচ ফসকাচ্ছে কেন

শুরুটা হয়েছিল বাংলাদেশ-স্কটল্যান্ড ম্যাচ দিয়ে। সংযুক্ত আরব আমিরাতে চলমান মেয়েদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশ-স্কটল্যান্ডের প্রথম ম্যাচেই ক্যাচ পড়েছিল সাতটি। এর মধ্যে বাংলাদেশের ফিল্ডারদের হাত ফসকে বেরিয়েছে ৪টি। সেই যে শুরু, মেয়েদের বিশ্বকাপে ক্যাচ মিসের সংখ্যা শুধু বেড়েই চলেছে।

রোববার পর্যন্ত হওয়া আট ম্যাচে ক্যাচ উঠেছে মোট ৬২টি, এর মধ্যে ৩৫টিই ফিল্ডাররা মিস করেছেন। অর্থাৎ এবারের বিশ্বকাপে প্রথম চার দিনে ওঠা ক্যাচের মধ্যে ৬৩.৯ শতাংশ নিতে পেরেছেন ফিল্ডাররা, মিস হয়েছে ৩৬.১ শতাংশ!

সাধারণত ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের ক্রিকেটে ক্যাচ মিস বেশিই দেখা যায়। কিন্তু এবার যা দেখা যাচ্ছে, তা মেয়েদের আগের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপগুলোর চেয়েও বেশি।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির হিসাব বলছে, গত বছর দক্ষিণ আফ্রিকায় হওয়া বিশ্বকাপের এই পর্যায়ে ওঠা ৬১ ক্যাচের ৫০টি (৮২ শতাংশ) ঠিকঠাক ধরা হয়েছিল, মিস হয়েছিল বাকি ১৮ শতাংশ। এর আগে ২০২০ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে প্রথম আট ম্যাচে ধরা হয়েছিল ৪৮ ক্যাচ, মিস হয়েছিল ৬টি। মিসের হার ছিল ১১ শতাংশ। তারও আগে ২০১৮ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজে মিসের হার ছিল ১৫ শতাংশ।

দেখা যাচ্ছে, আগের যেকোনোবারের তুলনায় এবার ক্যাচ ফসকানোর হার বেশি। কিন্তু কেন?

এবারের নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ম্যাচগুলো হচ্ছে শারজা ও দুবাইয়ে। দুই ভেন্যুই নিয়মিত আন্তর্জাতিক ক্রিকেট আয়োজন করে থাকে। ২০২০ সালে করোনা মহামারির সময় আইপিএলও হয়েছিল আরব আমিরাতে। লক্ষণীয় ব্যাপার, ২০২০ সাল থেকে এখন পর্যন্ত যে ১৪টি মাঠে অন্তত ১০টি করে ম্যাচ হয়েছে, তার মধ্যে দুবাইয়ে ক্যাচিংয়ের সফলতা সবচেয়ে কম।

২০২০ সালে এ মাঠে হওয়া আইপিএলের ৩৯ ম্যাচে ৩২২ ক্যাচের ৯৩টিই ফসকে গিয়েছিল। ক্যাচ সফলতার হার ছিল ৭৭.৫ শতাংশ।

পরিসংখ্যান বলছে, সংযুক্ত আরব আমিরাতে ক্যাচ বেশিই মিস হয়। এর মূল কারণ আধুনিক প্রযুক্তির ফ্লাডলাইট-ব্যবস্থা। আরব আমিরাতের স্টেডিয়ামগুলোর ফ্লাডলাইট ‘রিং অব ফায়ার’ ডিজাইনের, যেখানে বাকি ক্রিকেট বিশ্বের স্টেডিয়ামে স্থাপন করা পাইলন-স্টাইলের লাইট টাওয়ার। ফুটবল স্টেডিয়ামগুলোতে ‘রিং অব ফায়ার’ ডিজাইনের ফ্লাডলাইটের প্রচলন বেশ আগে থেকেই। কিন্তু ক্রিকেটে এখন অপেক্ষাকৃত নতুন। এই ফ্লাডলাইটের আলো একজন ফিল্ডারের চোখের নিচের অংশে গিয়ে লাগে। সাদা বল দ্রুত ছুটে এলে ফিল্ডারের পক্ষে তাৎক্ষণিকভাবে বল ধরা একটু কঠিন হয়ে ওঠে তাতে।

তবে ফ্লাডলাইটের আলোই বেশি ক্যাচ মিসের একমাত্র কারণ কি না, নিশ্চিত নয়। কারণ, দিনে হওয়া ম্যাচেও ক্যাচ পড়ছে। হতে পারে খেলোয়াড়েরাই এখনো দুবাই-শারজার সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারেননি। তবে ক্যাচ যে বেশি পড়ছে, সেটি তো সংখ্যাই বলে দিচ্ছে।