আইপিএল এলেই ভারতের ক্রিকেটপ্রেমীদের মধ্যে উৎসবের আমেজ দেখা যায়। তবে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর কট্টর সমর্থকদের রেষারেষির কারণে আইপিএল মাঝেমধ্যে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনারও কারণ হয়। সম্প্রতি এমনই এক ঘটনা ঘটেছে ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যের কোলাপুরে।
গত বুধবার সানরাইজার্স হায়দরাবাদ–মুম্বাই ইন্ডিয়ানস ম্যাচের রাতে রোহিত শর্মার আউটকে কেন্দ্র করে সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এ সময় মুম্বাইয়ের সমর্থকেরা বন্দোপন্ত বাপসো তিবিলে নামে এক ব্যক্তিকে লাঠি ও কাঠের তক্তা দিয়ে আঘাত করে মাথা ফাটিয়ে দেন। রক্তাক্ত বন্দোপন্তকে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চার দিন লড়াইয়ের পর গতকাল তিনি মারা যান।
ভারতের সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, নিহত বন্দোপন্ত কোলাপুরের হন্তমন্তবাড়ি এলাকার বাসিন্দা। তাঁর বয়স ৬৩ বছর এবং তিনি চেন্নাই সুপার কিংসের পাঁড়ভক্ত ছিলেন। বাংলাদেশের পেসার মোস্তাফিজুর রহমান এবার চেন্নাইয়ের হয়েই আইপিএলে খেলছেন।
বন্দোপন্তকে হত্যার অভিযোগে স্থানীয় করবীর ইউনিট পুলিশ মুম্বাই ইন্ডিয়ানসের দুই সমর্থককে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তার দুই ব্যক্তির নাম বলবন্ত মহাদেব ঝাঞ্জগে (৫০ বছর) ও সাগর সাদাশিব ঝাঞ্জগে (৩৫ বছর)। তাঁরাও হন্তমন্তবাড়ি এলাকার বাসিন্দা। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
হায়দরাবাদের রাজীব গান্ধী স্টেডিয়ামে বুধবার আগে ব্যাট করে ২৭৭ রান তোলে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ, যা আইপিএল ইতিহাসের সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ। রেকর্ড লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে রোহিত শর্মা ঈশান কিষানকে নিয়ে মুম্বাইকে উড়ন্ত শুরু এনে দেন। তবে বেশি দূর এগোতে পারেননি রোহিত। ১২ বলে ২৬ রান করে প্যাট কামিন্সের বলে আউট হন।
আইপিএলে মুম্বাই ইন্ডিয়ানস আর চেন্নাই সুপার কিংস চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই দল, তা তো অনেকেরই জানা। মুম্বাই আর চেন্নাই আইপিএল ইতিহাসের সবচেয়ে সফলও, দুদলই জিতেছে সমান পাঁচটি করে শিরোপা। দুদলের লড়াইকে অনেকে ক্রিকেটের ‘এল ক্লাসিকো’ বলে থাকে। সমর্থকদের মধ্যেও তাই সাপে–নেউলে সম্পর্ক। তবে সেই প্রতিদ্বন্দ্বিতার পরিণাম যে এমন ভয়াবহ হতে পারে, তা হয়তো কেউ কল্পনা করতে পারেননি।
ভারতের সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেদিন রোহিত আউট হতেই চেন্নাই–ভক্ত বন্দোপন্ত মুম্বাই সমর্থকদের উত্ত্যক্ত করে তোলেন এই বলে যে, রোহিত আউট হওয়ায় মুম্বাইয়ের জেতার আর কোনো সম্ভাবনা নেই। এতেই গণ্ডগোল লেগে যায়।
বন্দোপন্তকে উচ্ছ্বাস করতে দেখে তাঁর ওপর হামলা চালান মুম্বাই সমর্থক বলবন্ত ও সাদাশিব। একপর্যায়ে বন্দোপন্তের মাথায় লাঠি ও কাঠের তক্তা দিয়ে সজোরে আঘাত করেন। এতে ঘটনাস্থলেই রক্তাক্ত অবস্থায় অজ্ঞান হয়ে পড়েন বলবন্ত। তাঁকে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হলেও বাঁচানো যায়নি।
এ ঘটনায় করবীর ইউনিট পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন নিহত বলপন্তের ভাই সঞ্জয় বাপসো তিলিবে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুলিশ বলবন্ত ও সাদাশিবকে গ্রেপ্তার করে।