ম্যাচটা আফগানিস্তানের জন্য ঐতিহাসিক। আজ ভারতের গ্রেটার নয়ডায় নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো টেস্ট খেলতে নামবে আফগানরা। এটি শুধু কিউইদের বিপক্ষেই নয়, ‘সেনা’ (দক্ষিণ আফ্রিকা, ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া) দেশগুলোর মধ্যেই আফগানিস্তানের প্রথম টেস্ট।
আর এই ম্যাচ দিয়েই নিজেদের ক্রিকেট ইতিহাসের বিরল একটি অধ্যায় শুরু করতে চলেছে নিউজিল্যান্ড। সূচি অনুসারে, ৯ সেপ্টেম্বর থেকে আগামী ৫ নভেম্বর সময়ের মধ্যে মোট ৬টি টেস্ট খেলবে কিউইরা। অন্যভাবে বললে, আগামী ৫৮ দিনের মধ্যে ৩০ দিনই টেস্ট খেলবে নিউজিল্যান্ড। বাকি দিনগুলোর উল্লেখযোগ্য অংশ যাবে ভ্রমণকেন্দ্রিক ব্যস্ততায়। কারণ, ম্যাচগুলোতে প্রতিপক্ষ তিনটি দেশ, ভেন্যু পাঁচটি।
নিউজিল্যান্ডকে দুই মাসের কম সময়ের মধ্যে ৬টি টেস্টই খেলতে হবে এশিয়ার মাটিতে। প্রথমটি ভারতের মাঠে আফগানিস্তানের বিপক্ষে। এরপর টিম সাউদিরা চলে যাবেন শ্রীলঙ্কায়, সেখানে দুই টেস্টের সিরিজ হবে গল ইন্টারন্যাশন স্টেডিয়ামে।
১৮ ও ২৬ সেপ্টেম্বরের ম্যাচ দুটি খেলে আবার ভারতে ফিরবে নিউজিল্যান্ড। ১৬ অক্টোবর বেঙ্গালুরু ম্যাচ দিয়ে শুরু হবে ভারত–নিউজিল্যান্ড তিন টেস্টের সিরিজ। এরপর পুনে হয়ে সিরিজের শেষ টেস্ট হবে মুম্বাইয়ে, যা ১ নভেম্বর শুরু হয়ে ৫ নভেম্বর শেষ হওয়ার কথা।
প্রতিটি ম্যাচই পঞ্চম দিনে গড়ালে সব মিলিয়ে ৬ টেস্টের জন্য ৩০ দিনই নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটারদের মাঠে থাকতে হবে। এর মাধ্যমে দুটি বিরল ঘটনার মুখোমুখি হবেন সাউদি–কেইন উইলিয়ামসনরা। প্রথমত, এবার মাত্র দুই মাসের মধ্যে যে পরিমাণ টেস্ট খেলতে হবে, সেটা অনেক ক্ষেত্রে কিউইদের পুরো এক বছরের ম্যাচের সমান।
২০২০ ও ২০২১ সালে সারা বছর মিলিয়েই মাত্র ৬টি করে টেস্ট খেলেছিল নিউজিল্যান্ড। গত পঞ্জিকাবর্ষেও দলটি টেস্ট খেলেছে মাত্র ৭টি। ২০১৭ আর ২০১৮–তেও সারা বছরে এমন টেস্টই খেলেছিল নিউজিল্যান্ড। সুতরাং ১২ মাসের সমপরিমাণ টেস্ট এবার মাত্র দুই মাসেই খেলতে চলেছে কিউইরা।
দ্বিতীয়ত, নিউজিল্যান্ড এশিয়ার মাটিতে টানা ৬ টেস্ট খেলতে চলেছে চার দশক পর। সর্বশেষ ১৯৮৪ সালে উপমহাদেশে টানা ৬ ম্যাচ খেলেছিল কিউইরা। কিন্তু শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানের মাটিতে খেলা সেই দুটি সফর ছিল আট মাস সময়ের মধ্যে। এবারের মতো একের পর এক ম্যাচ করে মাত্র দুই মাসের মধ্যে নয়। প্রকৃতপক্ষে, গত এক দশকেই নিউজিল্যান্ড এশিয়ার মাটিতে এক বছরের মধ্যে তিনটির বেশি টেস্ট খেলেনি। ২০২২ সালে তো মাত্র এক টেস্ট খেলেই ফিরে গিয়েছিল।
সব মিলিয়েই নিউজিল্যান্ড এবার তাদের প্রতিকূল কন্ডিশন হিসেবে বিবেচিত এশিয়াতে অন্য রকম অভিজ্ঞতার সম্মুখীন। অতীত রেকর্ড বিবেচনায় যা বেশ চ্যালেঞ্জিংই বলা যায়। এখন পর্যন্ত এশিয়ায় ৯০টি টেস্ট খেলে নিউজিল্যান্ড জিতেছে মাত্র ১৬টি। ভারতের মাটিতে তো ৩৬ টেস্টেই মাত্র ২টি। চ্যালেঞ্জটা নিশ্চয়ই টের পাচ্ছেন উইলিয়ামসন–সাউদিরা।