অস্ট্রেলিয়ার টি–টোয়েন্টি দলে তাঁর নামই ছিল না। দক্ষিণ আফ্রিকায় পা রেখেছিলেন ওয়ানডে সিরিজের জন্য, যা শুরু হবে ৭ সেপ্টেম্বর। মঙ্গলবার রাতে ডারবানে পৌঁছে পরদিন সকালে গিয়েছিলেন জিমে। হঠাৎ খবর এল, ওয়ানডের আগে টি–টোয়েন্টি সিরিজেও তাঁকে খেলতে হবে এবং সেটা কয়েক ঘণ্টা পরই!
এভাবেই কাল আচমকা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয়েছে তানভির সাংহার। ২১ বছর বয়সী এই লেগ স্পিনার কিংসমিডে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টি–টোয়েন্টিতে খেলেছেন কয়েক ঘণ্টার নোটিশে। এই ম্যাচে অবশ্য অভিষেক হয়েছে অস্ট্রেলিয়ার আরও তিন ক্রিকেটারের—ম্যাট শর্ট, অ্যারন হার্ডি ও স্পেনসার জনসনের। তবে চারজনের মধ্যে অ্যাডাম জাম্পার অসুস্থতায় হুট করে একাদশে ঢুকে পড়া তানভিরই দিন শেষে সবচেয়ে উজ্জ্বল।
প্রথমে ব্যাট করে অধিনায়ক মিচেল মার্শের অপরাজিত ৯২ আর টিম ডেভিডের ৬৪ রানে ভর করে ৬ উইকেটে ২২৬ রান তোলে অস্ট্রেলিয়া। রানতাড়ায় দক্ষিণ আফ্রিকা ১৫.৩ ওভারে ১১৫ রানেই থমকে যায়। অস্ট্রেলিয়ার ১১১ রানের বড় জয়ে উইকেট–সাফল্যে বোলিংয়ে নেতা নবীনতম সদস্য তানভিরই। ভারতীয় বংশোদ্ভূত এই লেগ স্পিনার ৪ ওভার বল করে ৩১ রানে তুলে নেন ৪ উইকেট, যা অস্ট্রেলিয়ান বোলারদের মধ্যে অভিষেকে দ্বিতীয় সেরা।
২০০৫ সালে ইতিহাসের প্রথম টি–টোয়েন্টিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ২৯ রানে ৪ উইকেট নিয়েছিলেন মাইকেল ক্যাসপ্রোইচ। দেড় যুগ পর তাঁর কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিলেন তানভির। চোটের কারণে পুরো ২০২২–২৩ মৌসুমের খেলা মিস করা এই স্পিনারের এটি ছিল চলতি বছরে মাত্র চতুর্থ প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ।
প্রথম উইকেটটি তুলে নেন এইডেন মার্করামকে মার্কাস স্টয়নিসের ক্যাচ বানিয়ে। পরের ওভারে ফেরান ডিওয়াল্ড ব্রেভিসকে। প্রথম দুটি উইকেটেই অবশ্য তানভিরের বোলিং চাতুর্যের চেয়ে ব্যাটসম্যানের ভুলের ভূমিকা ছিল বেশি।
তবে তৃতীয় শিকার হিসেবে তুলে নেওয়া ত্রিস্তান স্টাবসের উইকেটে ছিল তানভিরের মুনশিয়ানা। তাঁর লেংথে পড়া ডেলিভারিতে প্রলুব্ধ হয়ে সামনে এগিয়ে খেলতে চেয়েছিলেন স্টাবস, বল লেগ স্পিন করে বেরিয়ে চলে যায় উইকেটকিপারের হাতে। গ্লাভস হাতে অপেক্ষায় থাকা জশ ইংলিস স্টাম্পিং করে দিতে ভুল করেননি। এরপর চতুর্থ শিকার হিসেবে মার্কো ইয়ানসেনকে ফেরান বোল্ড করে।
ম্যাচ শেষে অধিনায়ক মিচেল মার্শ প্রশংসায় ভাসিয়েছেন তানভিরকে, ‘ওকে যখন (ম্যাচের খেলার খবর) জানানো হয়, তখন সে জিমে। ও বেশ আনন্দেই ছিল। বলল, খেলার জন্য প্রস্তুত। এর মানে হচ্ছে, সে খুবই স্বাভাবিক থাকতে পারে, যেটা শীর্ষ পর্যায়ের ক্রিকেটে ওকে ভালো অবস্থায় রাখবে। ওর আচার–ব্যবহার দুর্দান্ত। যেভাবে এসেই এমন একটা অভিষেক হলো, দারুণ ব্যাপার। আশা করি, ওর বড় হাসি আগামী বছরগুলোতেও দেখতে পাব।’
অস্ট্রেলিয়া–দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজের দ্বিতীয় টি–টোয়েন্টি আগামীকাল।